কারক কাকে বলে | বিভক্তি | শূন্য বিভক্তি কাকে বলে

কারক – বাংলায় কারকের সংখ্যা ছয়টি। সেগুলি হল কর্তৃকারক, কর্মকারক, করণকারক, নিমিত্তকারক, অপাদানকারক এবং অধিকরণকারক

এ ছাড়া রয়েছে একটি সম্বন্ধপদ | ক্রিয়াকে ধরে কোনো প্রশ্ন করে সম্বন্ধপদকে চিহ্নিত করা যায় না। কারণ, ক্রিয়াপদের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। সঙ্কধপদের সম্পর্ক থাকে বাক্যের কোনো একটি বিশেষ্য পদের সঙ্গে। তাই একে কারক বলা হয় না। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, একটি বাক্যে যে-কোনো কারক এবং সম্বদ্ধপদ একাধিকবার থাকতে পারে।

বিভক্তি

একটি বাক্যের মধ্যে থাকে এক বা একাধিক শব্দ | কিন্তু শব্দগুলি সরাসরি বাক্যে ব্যবহৃত হয় না, শব্দের সঙ্গে এমন কিছু অংশ যুক্ত হয়, যার ফলে সে বাক্যে স্থানলাভের যোগ্য হয়ে ওঠে।

যদি লিখি— [su_box title=”Note” style=”soft”]বসন্তকাল নানা ফুল ফোটে।[/su_box] তাহলে শব্দগুলো পাশাপাশি বসলেও একে বাক্য বলা যায় না। কারণ এই শব্দগুলি থেকে পরিষ্কার কোনো অর্থ পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু যদি লিখি বসন্তকালে নানা রঙের ফুল। ফোটে, তাহলে একে আমরা বাক্য বলতে পারি, কারণ এই বাক্যের মাধ্যমে বক্তার মনের ভাব পরিষ্কার করে ফুটে উঠেছে। এখন আমরা লক্ষ করি যে, কীভাবে শব্দগুলি বাক্যে ব্যবহৃত হওয়ার যোগ্য হল

[su_note]বসন্তকাল (+এ) নানা রং (+এর) ফুল ফোট্ (+এ)।[/su_note]

দেখা যাচ্ছে, ‘বসন্তকাল’-এর সঙ্গে ‘এ’, ‘রং’-এর সঙ্গে ‘এর’ এবং ‘ফোট’ এর সঙ্গে ‘এ’ যুক্ত হল। এই ‘এ’, ‘এর’ ইত্যাদিকে বলে বিভক্তি | শব্দের সঙ্গে বা ক্রিয়ার ক্ষেত্রে ধাতুর সঙ্গে বিভক্তি যুক্ত হলে তখন তা বাক্যে ব্যবহারের যোগ্য হয়ে ওঠে। বিভক্তিযুক্ত শব্দকে তখন বলা হয় “পদ”।

[su_note]শব্দ ক্রিয়া + বিভক্তি → পদ (ধাতু)[/su_note]

শব্দের সঙ্গে যে বিভক্তি যুক্ত হয় তাকে বলে শব্দবিভক্তি। শব্দবিভক্তি শব্দকে নামপদ-এ পরিণত করে। যেমন—

[su_note]ভূতের ভয়ে অন্ধকারে কেউ গেলাম না।


ভূত + এর ভয় + এ অন্ধকার + Q[/su_note]

এখানে ‘ভূত’, ‘ভয়’ এবং অন্ধকার’ শব্দের সঙ্গে যথাক্রমে ‘এর’, ‘এ’ ও ‘এ’

 

বিভক্তি যুক্ত হয়েছে | এই বিভক্তিগুলিকে বলা হয় শব্দবিভক্তি এবং ‘ভূতের’, ‘ভয়ে’, ‘অন্ধকারে’— এগুলি হল নামপদ। ক্রিয়ার ক্ষেত্রে ধাতুর সঙ্গে যে বিভক্তি যুক্ত হয় তাকে বলে ধাতুবিভক্তি।

যেমন—‘কর্’ একটি ধাতু। এই ক্রিয়ার রূপটি কাল ও পুরুষভেদে পালটে যায় | আমি করি, সে করে, তুমি করিবে ইত্যাদি। এক্ষেত্রে,

করি = কর্ + ই বিভক্তি


করে = কর্ + এ বিভক্তি


করিবে = কর্ + ইবে বিভক্তি


কর্ ধাতুর সঙ্গে যে যে বিভক্তি যুক্ত হল, তাদের বলে ধাতুবিভক্তি | ধাতুবিভক্তি ক্রিয়াপদ তৈরি করে। এই অধ্যায়ে বিভক্তি বলতে আমরা শব্দবিভক্তিকেই বুঝব

বাংলা ভাষায় বিভক্তিচিহ্নগুলি হল—এ, কে, য়, তে (বা এতে), র (বা এর), রে (কবিতায় ব্যবহৃত হয়) ইত্যাদি | এ ছাড়া আছে শূন্য বিভক্তি |

আকাশে আজ তারার মেলা।

আকাশে = আকাশ + এ বিভক্তি

তারার = তারা + র বিভক্তি

মাকে কলকাতায় যেতে হবে।

 মাকে = মা + কে বিভক্তি


কলকাতায় = কলকাতা + য় বিভক্তি


ওপরের উদাহরণে দেখা যাচ্ছে শব্দের সঙ্গে যুক্ত বিভক্তিচিহ্নটি স্পষ্ট। কিন্তু ‘বাবা অফিসে গেছেন’—এই বাক্যে ‘বাবা’ শব্দটির সঙ্গে স্পষ্টত কোনো বিভক্তি চিহ্ন না থাকলেও, এই শব্দটিকে বিভক্তিহীন বলা যাবে না । ‘বাবা’ শব্দটির সঙ্গে ‘অ’ বিভক্তি যুক্ত হয়ে শব্দটিকে পদে পরিণত করেছে। এই অপ্রকাশিত বিভক্তিটিকে বলা হয় শূন্য বিভক্তি

শূন্য বিভক্তি কাকে বলে

ব্যাকরণের ভাষায়, যে শব্দবিভক্তি শব্দের সঙ্গে যুক্ত হয়ে শব্দকে পদে পরিণত করে, কিন্তু নিজে অপ্রকাশিত অবস্থায় থাকে এবং মূল শব্দটির কোনো পরিবর্তন ঘটায় না, তাকে শূন্য বিভক্তি বলে । যেমন— এবার পুজোয় রাজস্থান যাব।

[su_note]রাজস্থান = রাজস্থান + অ (শূন্য বিভক্তি)[/su_note]


কারক চেনার সহজ উপায়


তির্যক বিভক্তি কাকে বলে?

Aftab Rahaman
Aftab Rahaman

I'm Aftab Rahaman, The Founder Of This Blog. My Goal is To Share Accurate and Valuable Information To Make Life Easier, With The Support of a Team Of Experts.

Articles: 1875