5,327 Members Now! 🎉
🔥 Live Job Alerts!
Join Instant Updates →
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

অটোমান সাম্রাজ্য রাজনৈতিক অগ্রগতি ও ইতিহাস

Team KaliKolom
Published: Jul 9, 2021

অ্যাড্রিয়ানোপল অধিকার :

অটোমান শাসকরা ১৩২৫ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে বুরসা দখল করেন। ক্রমে দক্ষিণ ও পূর্বে অটোমান সাম্রাজ্যের বিস্তার শুরু হয়। ১৩৫৪ খ্রিস্টাব্দে মধ্য আনাতোলিয়ার আঙ্কারা এবং রোমান সাম্রাজ্যের গ্যালিপোলি অটোমানদের দখলে আসে। তারা ১৩৬১ খ্রিস্টাব্দে অ্যাড্রিয়ানোপল অধিকার করে।

কনস্ট্যান্টিনোপল অধিকার :

অটোমান সাম্রাজ্যবাদী নীতিতে সর্বপ্রথম গতি আনেন সুলতান দ্বিতীয় মহম্মদ (১৪৫১-১৪৮১ খ্রি.)। তিনি অন্য তুর্কি জাতিগোষ্ঠীগুলিকে ওসমানীয় অর্থাৎ অটোমান তুর্কিদের বশ্যতা স্বীকারে বাধ্য করান। তিনি ১৪৫৩ খ্রিস্টাব্দে পূর্ব রোমান সাম্রাজ্যের রাজধানী কনস্ট্যান্টিনোপল (বর্তমান নাম ইস্তানবুল) দখল করে নিলে প্রাচীন পূর্ব রোমান সাম্রাজ্যের পতন ঘটে। এরপর থেকে কনস্ট্যান্টিনোপলই হয়ে ওঠে অটোমান সাম্রাজ্যের রাজধানী। কনস্ট্যান্টিনোপল দখলের পর থেকে অটোমান তুর্কি শক্তি ক্রমে দুরন্ত হতে থাকে।

কনস্ট্যান্টিনোপলে অটোমান সুলতানদের প্রাসাদ
কনস্ট্যান্টিনোপলে অটোমান সুলতানদের প্রাসাদ

প্রথম সেলিম ও সুলেমানের ভূমিকা 

সুলতান প্রথম সেলিমের (১৫১২-১৫২০ খ্রি.) আমলে আনাতোলিয়ার পূর্ব অংশ, সিরিয়া ও মিশরে অটোমানদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। অটোমান সাম্রাজ্যের প্রসারে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন এই সাম্রাজ্যের শ্রেষ্ঠ সুলতান সুলেমান দ্য ম্যাগনিফিসেন্ট (১৫২০-১৫৬৬ খ্রি.)। তিনি প্রথমেই রোডস ও বেলগ্রেড দখল করেন। তিনি হাঙ্গেরির অর্ধাংশ অটোমান তুর্কি সাম্রাজ্যভুক্ত করেন এবং মোলদাভিয়া ও ট্রানসিলভেনিয়ার শাসকদের বশ্যতা স্বীকারে বাধ্য করান। ইরাক এবং পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলও তাঁর দখলে আসে।

চতুর্থ মুরাদের ভূমিকা :

সুলেমানের পরবর্তী শাসকগণ সাম্রাজ্যের অগ্রগতিতে বিশেষ যোগ্যতার পরিচয় দিতে পারেননি। পরবর্তীকালের উল্লেখযোগ্য সুলতান চতুর্থ মুরাদ (১৬২৩-১৬৪০ খ্রি.) সাম্রাজ্যের বিভিন্ন স্থানের বিদ্রোহ কঠোর হাতে দমন করেন। তিনি জানিসারি নামে তুর্কি সেনাবাহিনীকে নিজ নিয়ন্ত্রণে আনেন, সামন্তপ্রভুদের দমন করতে আইন প্রণয়ণ করেন এবং রাজস্বব্যবস্থার সংস্কার করেন। তিনি পারস্যের বাগদাদ পুনরুদ্ধার (১৬৩৮ খ্রি.) করেন।

অটোমান সাম্রাজ্যের মানচিত্র
অটোম্যান এম্পায়ার সাম্রাজ্যের ম্যাপ

উজিরদের ভূমিকা :

চতুর্থ মুরাদের পরবর্তীকালে অটোমান সাম্রাজ্যে উজিরদের ক্ষমতা যথেষ্ট বৃদ্ধি পায়। মহম্মদ কিউপ্রিলি : মহম্মদ কিউপ্রিলি (১৬৫৬ ১৬৬১ খ্রি.) নামে সুলতান চতুর্থ মেহেমেদের (১৬৪৮ ১৬৮৭ খ্রি.) জনৈক সুদক্ষ উজির দেশের বিভিন্ন স্থানের বিদ্রোহ দমন করেন এবং ভেনিসের নিকটবর্তী লেমেনস ও টেনেডস নামে দুটি স্থান পুনরুদ্ধার করেন।

আস্‌মে কিউপ্রিলি : এরপর তাঁর পুত্র আস্‌মে (বা আমেদ) কিউপ্রিলি (১৬৬১-১৬৬৭ খ্রি.) উজির পদে বসে হাঙ্গেরি আক্রমণ করেন এবং নিউহ্যাসেল দখল করেন। তাঁর বিশাল বাহিনী মোরাভিয়া নামে স্থানটি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত করে অস্ট্রিয়ার সাইলেশিয়ায় প্রবেশ করলে ইউরোপের শক্তিবর্গ তুর্কি মুসলিমদের হাত থেকে খ্রিস্টান ধর্ম ও সভ্যতাকে রক্ষার উদ্দেশ্যে সম্মিলিতভাবে তুর্কি বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। শেষপর্যন্ত তুর্কি বাহিনী খ্রিস্টান মিত্রশক্তির কাছে সেন্ট গোথার্ড-এর যুদ্ধে (১৬৬৪ খ্রি.) চূড়ান্তভাবে পরাজিত হয়। অবশ্য ভ্যাসভার এর সন্ধির দ্বারা তুরস্ক তার দখল করা কিছু স্থানের

আধিপত্য ফিরে পায়। আমে কিউপ্রিলি এরপর ভেনিসকে পরাজিত করে সমগ্র ক্রাঁট দ্বীপটি দখল করেন এবং পোল্যান্ড আক্রমণ করে ইউক্রেন ও পোডোলিয়া নামে দুটি স্থান সাময়িকভাবে লাভ করেন। আদমে কিউপ্রিলির মৃত্যুর পর থেকে অটোমান তুর্কি সাম্রাজ্য ক্রমে অবক্ষয়ের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে।

অটোম্যান এম্পায়ার এর শাসনব্যবস্থা

অটোমান সাম্রাজ্য : অটোমান সম্রাটদের শাসনব্যবস্থায় তুর্কি, পারসি, মোঙ্গল ও ইসলামীয় ঐতিহ্যের সংমিশ্রণ লক্ষ করা যায়। এই সময় শাসনব্যবস্থায় নিরঙ্কুশ রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য শাসকদের হাতে চূড়ান্ত ক্ষমতা প্রদানকে অটোমানরা অপরিহার্য বলে মনে করত। শাসককে বলা হত ‘সুলতান’। তিনি ছিলেন সাম্রাজ্যের সর্বময় কর্তা। অটোমান সুলতানগণ চরম স্বৈরতন্ত্রে বিশ্বাসী ছিলেন। এই সাম্রাজ্যের শ্রেষ্ঠ সুলতান সুলেমান দ্য

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, প্রথমদিকে অটোমান সাম্রাজ্যের সর্বত্রই ‘ভিজিয়ার’ নামে পদস্থ কর্মচারীদের অস্তিত্ব ছিল। পরবর্তীকালে সুলতানের প্রত্যক্ষ কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত ভিজিয়াররা সারা দেশের অন্যান্য ভিজিয়ারদের থেকে পৃথক হিসেবে ‘গ্র্যান্ড ভিজিয়ার’ নামে চিহ্নিত হন।

ম্যাগনিফিসেন্ট (১৫২০-১৫৬৬ খ্রি.) তাঁর সাম্রাজ্যের জন্য বিভিন্ন প্রশাসনিক ও আইন বিষয়ক সংস্কার করেন। এজন্য তিনি পাশ্চাত্য জগতে আইনপ্রণেতা (Law Giver) হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। তাঁর সংস্কারের ফলে তাঁর মৃত্যুর পরও অটোমান সাম্রাজ্য দীর্ঘকাল অস্তিত্বশীল ছিল।

অটোমান সামরিক বাহিনী :

  1. অটোমান সম্রাটদের নিরঙ্কুশ স্বৈরতন্ত্রের ভিত্তি ছিল তাদের শক্তিশালী ও সুবিশাল সেনাবাহিনী। প্রথমদিকে তুর্কি অশ্বারোহী বাহিনীই ছিল সামরিক শক্তির মূল ভিত্তি। ‘গাজী’ নামে পরিচিত এই সৈন্যদের নগদ বেতনের পরিবর্তে ভূমিরাজস্বের অংশ দেওয়া হত। অর্থাৎ তুর্কি সাম্রাজ্যের যত প্রসার ঘটত সেনারা তত বেশি অর্থ-সম্পদ লাভ করত। কিন্তু পরবর্তীকালে নিয়মিত যুদ্ধের প্রয়োজন দেখা দিলে চতুর্দশ শতকে নতুন সেনা নিয়োগ করে তাদের নগদ বেতন প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়। এই নতুন সেনাবাহিনী জানিসারি বাহিনী নামে পরিচিত হয়। পঞ্চদশ শতকের পরবর্তীকালে এই জানিসারি বাহিনীর সহায়তায় অটোমান সাম্রাজ্যের সীমা বহুদূর প্রসারিত হয়।
  2. কেন্দ্রীয় প্রশাসন সুলতানের প্রতি আনুগত্য এবং যোগ্যতা বিচার করে অটোমান প্রশাসনে কর্মচারী নিয়োগ করা হত। অটোমান সাম্রাজ্যের কেন্দ্রীয় প্রশাসনের তিনটি অংশ ছিল— বাসগৃহ পরিচালনার কর্মচারী : সুলতানের বাসগৃহ পরিচালনার জন্য বিভিন্ন কর্মচারী নিয়োজিত ছিল, @ গ্র্যান্ড ভিজিয়ার : সুলতানের অধীনস্থ সর্বোচ্চ মন্ত্রীমণ্ডলী ‘গ্র্যান্ড ভিজিয়ার’ নামে পরিচিত ছিল। গ্রান্ড ভিজিয়ারদের নিয়ন্ত্রণাধীনে কেন্দ্রের বিভিন্ন সরকারি দপ্তর কাজ করত।
  3. ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান : বিভিন্ন মুসলিম ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান দেশের শিক্ষা ও আইন বিষয়ক কাজকর্ম করত। কাদিস: ‘কাদিস’ নামে কর্মচারীরা স্থানীয় প্রশাসন ও ফৌজদারি বিষয়সমূহের দেখাশোনা করত। সুলতান সুলেমানের আমল থেকে অটোমান সাম্রাজ্যে সামন্তব্যবস্থা গড়ে ওঠে। ফলে কেন্দ্রীয় প্রশাসনের অধীনে দেশের সর্বত্র সামন্তপ্রভুদের উত্থান ঘটে।

অটোমান ন্যায়বিচার :

অটোমান সাম্রাজ্যের সুলতানি প্রশাসনে উলেমারা বিচারকার্য পরিচালনা করতেন। সুলতানদের অন্যতম লক্ষ্য ছিল দেশে আদালেত বা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে শাসকের হাতে দেশের চূড়ান্ত ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ। অটোমান প্রশাসনে ন্যায়বিচারের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত আদালেত-এর সূত্রে আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। এর মধ্যে অন্যতম ছিল সুলতানের উপদেষ্টা পরিষদ। এই পরিষদের নাম ছিল দেওয়ান। দেওয়ান আমলাদের নিয়ন্ত্রণ করত এবং আমলারা স্থানীয় সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করত।

জনকল্যাণ : নজরদারি : দেশের সার্বিক অগ্রগতি তদারকির উদ্দেশ্যে অটোমান সুলতানগণ রাজকর্মচারীদের ওপর নজরদারি চালাতেন। জনগণের সামগ্রিক কল্যাণ করাই ছিল এরূপ নজরদারির উদ্দেশ্য। বিচারব্যবস্থা, স্থানীয় প্রশাসন প্রভৃতির কাজকর্ম দেখাশোনা করতে সুলতানগণ ছদ্মবেশে রাষ্ট্র সফরে বেরোতেন।

অন্যায়ের বিরুদ্ধে উদ্যোগ : অন্যায়-অবিচারের ক্ষেত্রে তাঁরা প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপ করতেন। দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তিদের ‘সিয়াসেত’ নামে কঠোর শাস্তিদানের ব্যবস্থা ছিল। এ ছাড়া সারা দেশে অসংখ্য গুপ্তচর নিয়োগ করে তাঁরা অন্যায় ও দুর্নীতিমূলক কাজের খোঁজখবর নিতেন। মধ্যযুগে অটোমান সাম্রাজ্যের গুপ্তচরব্যবস্থা ছিল পৃথিবীর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ।

যোগাযোগ ব্যবস্থায় অগ্রগতি : এ ছাড়া সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের কর্তাদের যাতায়াতের সুবিধার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন রাস্তাঘাট, সেতু প্রভৃতি এসময় নির্মিত হয়। এর ফলে দেশে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হয়।

About the Author

   Aftab Rahaman

AFTAB RAHAMAN

Aftab Rahaman is a seasoned education blogger and the founder of KaliKolom.com, India’s premier Bengali general knowledge blog. With over 10 years researching current affairs, history, and competitive exam prep, he delivers in‑depth, up‑to‑date articles that help students and lifelong learners succeed. His expert insights and data‑driven guides make KaliKolom.com an authoritative resource in Bengali education.

Unlock FREE Subject-Wise PDFs Instantly

Join Our Telegram Channel for Daily Updates!

      JOIN NOW ➔

Recent Posts

See All →