ঐতিহাসিক যুগ (Historical Age) বলতে সেই সময়কে বোঝায় যার তথ্য ও ঘটনাবলি লিখিতভাবে নথিভুক্ত হয়েছে। এটি মানব সভ্যতার সেই সময়কাল যা প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে ভিন্ন, কারণ প্রাগৈতিহাসিক যুগের কোনো লিখিত দলিল পাওয়া যায় না। ঐতিহাসিক যুগের সূচনা সাধারণত কোনো অঞ্চলের প্রথম লিখিত নথির আবিষ্কারের সাথে সম্পর্কিত হয়, যা ঐ সময়ের সমাজ, সংস্কৃতি, রাজনীতি, অর্থনীতি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে আমাদের তথ্য প্রদান করে।
ঐতিহাসিক যুগ বলতে মানব সভ্যতার সেই সময়কালকে বোঝায় যখন থেকে লিখিত রেকর্ড বা নথি পাওয়া যায়। এই যুগের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল:
- লিখিত ভাষার উদ্ভব ও ব্যবহার
- লিখিত দলিল, অভিলেখ বা নথির অস্তিত্ব
- ঘটনাবলীর ক্রমানুসারে লিপিবদ্ধকরণ
ঐতিহাসিক যুগের শুরু বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন সময়ে হয়েছে। সাধারণত, প্রাচীন মিশর ও মেসোপটেমিয়ায় খ্রিস্টপূর্ব 3000-3500 সাল নাগাদ লেখার উদ্ভবের সাথে ঐতিহাসিক যুগের সূচনা হয়েছে বলে মনে করা হয়।
ঐতিহাসিক যুগের আগের সময়কালকে প্রাগৈতিহাসিক যুগ বলা হয়, যখন লিখিত রেকর্ড ছিল না এবং ইতিহাস সম্পর্কে জ্ঞান মূলত প্রত্নতাত্ত্বিক উৎখননের মাধ্যমে পাওয়া যায়।
আমি আপনাকে ঐতিহাসিক যুগ সম্পর্কে আরও কিছু তথ্য দিচ্ছি:
1.বিভিন্ন সভ্যতার ঐতিহাসিক যুগ:
- মেসোপটেমিয়া: খ্রিস্টপূর্ব 3100 সাল থেকে
- প্রাচীন মিশর: খ্রিস্টপূর্ব 3000 সাল থেকে
- চীন: খ্রিস্টপূর্ব 1600 সাল থেকে
- ভারতীয় উপমহাদেশ: খ্রিস্টপূর্ব 3300 সাল থেকে (সিন্ধু সভ্যতা)
2. ঐতিহাসিক যুগের গুরুত্ব:
- এটি মানব সভ্যতার অগ্রগতি ও বিকাশের প্রামাণ্য রেকর্ড প্রদান করে
- রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তনগুলি অধ্যয়ন করার সুযোগ দেয়
- বিভিন্ন সংস্কৃতি ও সভ্যতার মধ্যে আদানপ্রদানের ইতিহাস বোঝা যায়
3. ঐতিহাসিক যুগের বিভাজন:
- প্রাচীন যুগ
- মধ্যযুগ
- আধুনিক যুগ
- সমসাময়িক যুগ
4. ঐতিহাসিক উৎস:
- লিখিত দলিল (যেমন: শিলালিপি, পাপিরাস, পুঁথি)
- মুদ্রা
- স্থাপত্য ও শিল্পকর্ম
- প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন
5. ঐতিহাসিক যুগের চ্যালেঞ্জ:
- পুরনো লিপি পড়া ও ব্যাখ্যা করা
- বিভিন্ন উৎসের মধ্যে সামঞ্জস্য স্থাপন
- ঐতিহাসিক পক্ষপাত ও ব্যাখ্যার পার্থক্য মোকাবেলা