WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

খেলার ইতিহাস | খাদ্যাভ্যাসের ইতিহাস | খেলা ও খাদ্যাভ্যাসের ইতিহাস

 খেলার ইতিহাস

খেলার ইতিহাস বলতে কী বোঝো

খেলাধুলার ইতিহাসও সামাজিক ইতিহাসচর্চার একটি অঙ্গ। বিনোদ খেলার ইতিহাস নের পাশাপাশি শরীরচর্চা ও চরিত্রগঠনের ক্ষেত্রেও খেলাধুলার অবদান বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কোনো বিশেষ খেলাকে কেন্দ্র করে জাতীয়তাবোধের সঞ্চারের উদাহরণও পরাধীন ভারতে বহুবার দেখা গিয়েছিল। অতি সাম্প্রতিক কালে তরুণ ঐতিহাসিক কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় বা তারও আগে বোরিয়া মজুমদারের মতো ক্রিকেট ঐতিহাসিকরা আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চায় খেলাধূলার মধ্যে জাতীয়তাবাদের সূত্র খুঁজে পেয়েছেন।

উদাহরণ হিসেবে গুজরাটের অন্তর্গত দেশীয় রাজ্য নবনগর বা নওয়া নগরের জাম সাহেব বা রাজাসাহেবের কথা বলা যায়, যাঁর আসল নাম রণজিৎ সিংজি। যদিও ক্রিকেট ছিল মূলত ইংরেজদেরই রাজকীয় খেলা, তবুও উপনিবেশিকতার সূত্রে সে খেলা ভারতেও প্রবেশ করেছিল। রণজিৎ সিংজি তার সহজাত আগ্রহাতিশয্যে এই খেলায় ইংরেজদের সঙ্গে সমান দক্ষতায় কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন। টেস্ট ক্রিকেটে তিনি ইংল্যান্ড দলের হয়ে অংশ নেন। সেই পরাধীনতার যুগে এই ঘটনা নিঃসন্দেহে ভারতীয় জাতীয়তাবাদের অগ্রগতিতে সাহায্য করেছিল।

খেলার ইতিহাস 1911 খ্রিস্টাব্দে বিখ্যাত কেন

কলকাতার মাঠে এরকমই আর এক জাতীয়তা বর্ধক ঘটনা ঘটেছিল 1911 খ্রিস্টাব্দে, যখন বাংলার মোহনবাগান ক্লাব, ইংরেজদের ইস্ট ইয়র্ক ক্লাবকে 2–1 গোলে হারায়। সেবার খালি পায়ে ফুটবল খেলে ইংরেজদের কাছ থেকে আইএফএ শিল্ড ছিনিয়ে নিয়েছিল মোহনবাগান দল। সেই যুগের স্বাধীনতা যুদ্ধের পটভূমিকায় এ ঘটনা ছিল একরকম দেশবিজয়ের মতো।

খেলার ইতিহাস নিয়ে যেসব গবেষণা হয়েছে সেগুলির মধ্যে রিচার্ড হোল্টের ‘স্পোর্ট অ্যান্ড দ্য ব্রিটিশ এ মডার্ন হিস্ট্রি, রামচন্দ্র গুহের ‘এ করনার অফ এ ফরেন ফিল্ড: দ্য ইন্ডিয়ান হিস্ট্রি অফ এ ব্রিটিশ স্পোর্টস’, ‘দ্য পিকাডর বুক অফ ক্রিকেট’, বোরিয়া মজুমদারের ‘দ্য ইলাসট্রেটেড হিস্ট্রি অফ ইণ্ডিয়ান ক্রিকেট’, ‘স্পোর্ট ইন সাউথ এশিয়ান সোসাইটি’ (সম্পাদিত, 2005), কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘খেলা যখন ইতিহাস’

ইত্যাদি গ্রন্থের নাম করা যায়। এছাড়া এ ম্যাসন প্রমুখ আরও অনেকে এ বিষয়ে প্রাসলিাক কাজ করেছেন। খেলাধূলার ইতিহাসচর্চার ক্ষেত্রে ব্রিটিশ সোসাইটি অফ স্পোর্টস হিস্ট্রির মতো সংসারও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে।

JOIN NOW

বৈশিষ্ট্য ঃ খেলার ইতিহাসচর্চার মাধ্যমে জাতিগত লিঙ্গগত বৈষম্য দূর হয়। পাশাপাশি বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে খেলা দেশ ও জাতির নানা প্রয়োজনের উপযোগী হয়ে উঠতে পারে।


খাদ্যাভ্যাসের ইতিহাস

খাদ্যাভ্যাস কাকে বলে

কোনো একটি অঞ্চলের মানুষের খাদ্যাভ্যাস প্রাথমিকভাবে সেই অঞ্চলের প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং জীববৈচিত্রোর ওপর নির্ভরশীল। খাদ্যাভ্যাসের বিবর্তনকে আজকাল ইতিহাসচর্চায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়ে থাকে। কোনো দেশের মানুষের স্বভাববৈচিত্রা অনেক সময় তাদের খাদ্যাভ্যাসের ওপর নির্ভর করে। আবার সংশ্লিষ্ট দেশের ভূপ্রকৃতি, সেই দেশের মানুষের খাদ্যাভ্যাসকে নিয়ন্ত্রিত করে থাকে। খাদ্যাভ্যাসের বিবর্তন একজন ঐতিহাসিককে দেশের বাণিজ্য এবং অর্থনীতিকে চিনতেও সাহায্য করে। তাই আধুনিক ইতিহাসচর্চায় খাদ্যাভ্যাসের বিবর্তনকে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি।

খাদ্যাভ্যাসের ইতিহাসচর্চা ভৌগলিক অঞ্চল এবং কাল তথা সময়ের ওপর বিশেষভাবে নির্ভরশীল। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় কোনো একটি অঞ্চলের মানুষের খাদ্যাভ্যাস সেই অঞ্চলে উৎপন্ন শস্যের ওপর নির্ভর করবে। আবার সংস্কৃতিগত কারণেও কোনো কোনো খাদ্য একসময় প্রচলিত থাকলেও পরে অপ্রচলিত বা নিষিদ্ধ হয়ে উঠতে পারে। ভারতীয় ইতিহাসে দেখা যায় এনফিল্ড রাইফেল-এ গোবু ও শূকরের চর্বির গুজবে জাতিভ্রষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় আতঙ্ক্ষিত হিন্দু ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের সিপাহিদের ঐক্যবন্ধ করেছিল। অপরদিকে স্বদেশি যুগে কেবলমাত্র বিদেশি শিল্প, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বর্জন করা হয়েছিল তাই নয়, ব্রিটিশ কলে প্রস্তুত সাদা চিনির মতো কিছু বিশেষ খাদ্যদ্রব্যও বর্জন করা হয়। এ ছাড়া ইংরেজ সেনাবাহিনী গঠনের ক্ষেত্রেও দেখা যায় যে, ইংরেজরা সেইসব ভারতীয়কেই সেনাবাহিনীতে নিয়োগ করতে অধিকতর আগ্রহী ছিল যাদের প্রধান খাদ্য বুটি। খাদ্যাভ্যাসের ইতিহাস সম্পর্কে জানার জন্য জে. গ্র্যামিলিয়ন এর ‘অ্যাপেটাইটস : ফুডস ইন প্রি-হিস্ট্রি’, তপন রায়চৌধুরীর প্রবন্ধ ‘মোগল আমলের খানাপিনা’ বা অর্জুন আঞ্জাদুরাই রচিত ‘হাউ টু মেক এ. ন্যাশনাল কুইজিন’ প্রভৃতি রচনার উল্লেখ করা যেতে পারে।

বৈশিষ্ট্য : খাদ্যাভ্যাসের ইতিহাস আমাদের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মানুষের খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে সচেতন করে তোলে। এ ছাড়া খাদ্যের মাধ্যমে তাদের উছে ঘটে।

JOIN NOW

Leave a Comment