ভূমিকা ও সারসংক্ষেপ: ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ এবং অন্যতম সাহসী বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর জীবনী এবং আত্মত্যাগ আজও আমাদের শিহরিত করে। এই আর্টিকেলে আমরা ক্ষুদিরাম বসুর জীবন, মুজাফফরপুর বোমা মামলা এবং তাঁর ফাঁসির ইতিহাস বিস্তারিত আলোচনার পাশাপাশি ৩০টি গুরুত্বপূর্ণ জিকে প্রশ্ন ও উত্তর (GK Quiz) নিয়ে এসেছি। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ, রেল, ব্যাঙ্ক, বা পিএসসি (PSC)-র মতো যেকোনো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য এই তথ্যগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ইন্ট্রোডাকশন (Introduction)
ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের রক্তঝরা ইতিহাসে ক্ষুদিরাম বসু (Khudiram Bose) এক অবিস্মরণীয় নাম। পরাধীন ভারতের শৃঙ্খল মোচনের জন্য যে অগ্নিযুগের সূচনা হয়েছিল, ক্ষুদিরাম ছিলেন সেই অগ্নিকুণ্ডের প্রথম স্ফুলিঙ্গ। মাত্র ১৮ বছর ৮ মাস বয়সে দেশের জন্য হাসিমুখে ফাঁসির দড়ি গলায় পরে তিনি প্রমাণ করেছিলেন, দেশমাতৃকার মুক্তির চেয়ে বড় কোনো ধর্ম নেই।
তাঁর বীরত্ব, আত্মত্যাগ ও দেশপ্রেম আজও লক্ষ লক্ষ তরুণের অনুপ্রেরণা। “একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি”—এই গানটি আজও বাঙালির চোখে জল আনে। আজকের এই বিশেষ আর্টিকেলে আমরা ক্ষুদিরাম বসুর জীবনী, তাঁর বিপ্লবী জীবনের সূচনা, ঐতিহাসিক মুজাফফরপুর ষড়যন্ত মামলা এবং তাঁর বিচার প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানব। সেই সঙ্গে থাকবে ৩০টি গুরুত্বপূর্ণ কুইজ (Quiz Questions and Answers), যা ছাত্রছাত্রী এবং চাকরিপ্রার্থীদের প্রস্তুতির জন্য অত্যন্ত সহায়ক হবে।
ক্ষুদিরাম বসু কুইজ (৩০টি প্রশ্ন-উত্তর)
নিচে ক্ষুদিরাম বসু সম্পর্কিত ৩০টি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর দেওয়া হলো। নিজেকে যাচাই করুন:
বিভাগ ১: প্রাথমিক জীবন (Basic Details)
১. ক্ষুদিরাম বসু কবে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: ৩রা ডিসেম্বর, ১৮৮৯ সালে।
২. ক্ষুদিরাম বসুর জন্মস্থান কোথায়?
উত্তর: মেদিনীপুর জেলার মোহবনী গ্রামে।
৩. ক্ষুদিরাম বসুর পিতার নাম কী ছিল?
উত্তর: ত্রৈলোক্যনাথ বসু।
৪. ক্ষুদিরাম বসুর মাতার নাম কী ছিল?
উত্তর: লক্ষ্মীপ্রিয়া দেবী।
৫. তাঁর নাম ‘ক্ষুদিরাম’ রাখা হয়েছিল কেন?
উত্তর: তিন মুঠো ‘ক্ষুদ’-এর বিনিময়ে দিদির কাছে বিক্রি করা হয়েছিল বলে।
৬. ক্ষুদিরাম বসুর দিদির নাম কী ছিল?
উত্তর: অপরূপা দেবী।
৭. কোন স্কুলে পড়ার সময় তিনি বিপ্লবী আন্দোলনে যুক্ত হন?
উত্তর: মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুল।
৮. ক্ষুদিরাম বসুর রাজনৈতিক গুরু কে ছিলেন?
উত্তর: সত্যেন্দ্রনাথ বসু।
বিভাগ ২: বিপ্লবী কর্মকাণ্ড ও মুজাফফরপুর মামলা
৯. ক্ষুদিরাম বসু কোন বিপ্লবী সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলেন?
উত্তর: যুগান্তর দল এবং অনুশীলন সমিতি।
১০. ১৯০৬ সালে কোন ব্রিটিশ বিরোধী পত্রিকা বিলি করতে গিয়ে তিনি প্রথম পুলিশের নজরে আসেন?
উত্তর: সোনার বাংলা।
১১. মুজাফফরপুর বোমা হামলার তারিখ কোনটি?
উত্তর: ৩০শে এপ্রিল, ১৯০৮।
১২. ক্ষুদিরাম বসুর সাথে আর কোন বিপ্লবী মুজাফফরপুর অভিযানে গিয়েছিলেন?
উত্তর: প্রফুল্ল চাকি।
১৩. বিপ্লবীদের মূল টার্গেট কে ছিলেন?
উত্তর: ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ড।
১৪. বোমা হামলায় কারা মারা গিয়েছিলেন?
উত্তর: মিসেস কেনেডি এবং মিস কেনেডি (ব্যারিস্টার কেনেডির স্ত্রী ও কন্যা)।
১৫. কিংসফোর্ড আগে কোথাকার চিফ প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন?
উত্তর: কলকাতা (Calcutta)।
১৬. বোমা হামলার পর ক্ষুদিরাম কোন স্টেশন থেকে গ্রেফতার হন?
উত্তর: ওয়াইনি স্টেশন (বর্তমান নাম ক্ষুদিরাম বোস পুসা স্টেশন)।
১৭. প্রফুল্ল চাকি কোথায় আত্মহত্যা করেছিলেন?
উত্তর: মোকামা স্টেশনে।
বিভাগ ৩: বিচার, ফাঁসি ও অন্যান্য (Trial & Execution)
১৮. ক্ষুদিরাম বসুর ফাঁসি কবে হয়?
উত্তর: ১১ই আগস্ট, ১৯০৮।
১৯. ফাঁসির সময় ক্ষুদিরাম বসুর বয়স কত ছিল?
উত্তর: ১৮ বছর ৮ মাস ৮ দিন (প্রায়)।
২০. কোন জেলে ক্ষুদিরাম বসুর ফাঁসি হয়েছিল?
উত্তর: মুজাফফরপুর সেন্ট্রাল জেল।
২১. ক্ষুদিরাম বসুর বিচারক কে ছিলেন?
উত্তর: মিস্টার কর্নডফ (Mr. Corndoff)।
২২. ক্ষুদিরামের পক্ষে আদালতে কোন বিখ্যাত আইনজীবী সওয়াল করেছিলেন (প্রথমে)?
উত্তর: কালিদাস বসু।
২৩. ক্ষুদিরাম বসুকে নিয়ে রচিত বিখ্যাত গানটির নাম কী?
উত্তর: “একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি”।
২৪. গানটির রচয়িতা কে ছিলেন বলে মনে করা হয়?
উত্তর: পীতাম্বর দাস।
২৫. ক্ষুদিরাম বসুকে ‘অগ্নিশিশু’ বলা হয় কেন?
উত্তর: খুব অল্প বয়সে অসীম সাহসিকতা এবং আত্মত্যাগের জন্য।
২৬. ১৯০৫ সালের কোন ঘটনা ক্ষুদিরামকে বিপ্লবের পথে নিয়ে আসে?
উত্তর: বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন।
২৭. গ্রেফতারের সময় ক্ষুদিরামের কাছে কী পাওয়া গিয়েছিল?
উত্তর: দুটি রিভলভার এবং ৩৭ রাউন্ড গুলি।
২৮. ক্ষুদিরাম বসুর স্মরণে কোন মেট্রো স্টেশনের নামকরণ করা হয়েছে?
উত্তর: কলকাতা মেট্রোর ‘ক্ষুদিরাম’ স্টেশন (গড়িয়া)।
২৯. ফাঁসির মঞ্চে ওঠার সময় ক্ষুদিরামের মানসিক অবস্থা কেমন ছিল?
উত্তর: তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ শান্ত এবং হাসিখুশি।
৩০. ক্ষুদিরাম বসুর ফাঁসির খবর কোন পত্রিকায় প্রথম গুরুত্ব দিয়ে ছাপা হয়েছিল?
উত্তর: অমৃতবাজার পত্রিকা এবং যুগান্তর।
ক্ষুদিরাম বসুর শৈশব ও জন্মসংক্রান্ত তথ্য
জন্ম ও পরিবার:
মেদিনীপুর জেলার কেশপুর থানার অন্তর্গত মোহবনী গ্রামে ১৮৮৯ সালের ৩রা ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন ক্ষুদিরাম বসু। তাঁর পিতার নাম ছিল ত্রৈলোক্যনাথ বসু এবং মাতার নাম লক্ষ্মীপ্রিয়া দেবী। তিনি ছিলেন বাবা-মায়ের চতুর্থ সন্তান।
নামকরণের ইতিহাস:
ক্ষুদিরামের জন্মের আগেই তাঁর দুই দাদা অকালে মারা যান। তাই অন্ধবিশ্বাসের বশবর্তী হয়ে এবং মৃত্যুর হাত থেকে নবজাতককে বাঁচাতে মা লক্ষ্মীপ্রিয়া দেবী শিশুটিকে তাঁর বড় দিদি অপরূপার কাছে মাত্র তিন মুঠো ক্ষুদ বা চালের বিনিময়ে বিক্রি করে দেন। ক্ষুদ দিয়ে কেনা হয়েছিল বলেই শিশুটির নাম রাখা হয় ‘ক্ষুদিরাম’।
শৈশবেই তিনি পিতামাতাকে হারান এবং বড় দিদি অপরূপা দেবীর কাছেই তমলুকে লালিত-পালিত হন। ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন অত্যন্ত সাহসী এবং ডানপিটে স্বভাবের।
বিপ্লবী জীবনের সূচনা
সংগঠনে যোগদান:
১৯০৫ সালে লর্ড কার্জন যখন বঙ্গভঙ্গ ঘোষণা করেন, তখন সারা বাংলা জুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। কিশোর ক্ষুদিরাম সেই স্বদেশী আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তিনি তমলুকের হ্যামিল্টন স্কুল এবং পরে মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলে পড়াশোনা করেন। সেখানেই তিনি সত্যেন বসুর সংস্পর্শে আসেন এবং ‘অনুশীলন সমিতি’-তে যোগদান করেন।
প্রথম বিপ্লবী পদক্ষেপ:
মাত্র ১৫ বছর বয়সে তিনি বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। ১৯০৬ সালে মেদিনীপুরে এক কৃষি ও শিল্প মেলায় ব্রিটিশ বিরোধী পত্রিকা ‘সোনার বাংলা’ বিলি করার সময় পুলিশ তাঁকে ধরতে গেলে তিনি পুলিশের নাকে ঘুষি মেরে পালিয়ে যান। এটি ছিল তাঁর সাহসিকতার প্রথম প্রকাশ। তিনি ভগিনী নিবেদিতার দ্বারাও গভীরভাবে প্রভাবিত ছিলেন।
মুজাফফরপুর বোমা হামলা (Muzaffarpur Bomb Case)

ইতিহাসে ক্ষুদিরাম বসু অমর হয়ে আছেন মূলত মুজাফফরপুর ষড়যন্ত্র মামলা বা কিংসফোর্ড হত্যা প্রচেষ্টার জন্য।
- লক্ষ্য (Target): এই অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিলেন অত্যাচারী ব্রিটিশ ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ড। কিংসফোর্ড আলিপুর প্রেসিডেন্সি কোর্টে থাকাকালীন বিপ্লবীদের প্রতি অমানবিক শারীরিক শাস্তির বিধান দিতেন, বিশেষ করে বেত মারা ছিল তাঁর প্রিয় শাস্তি। তাই বিপ্লবীরা তাঁকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন।
- পরিকল্পনা ও সঙ্গী: এই কঠিন কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয় তরুণ ক্ষুদিরাম বসু এবং প্রফুল্ল চাকীকে। তাঁরা দুজনে বিহারের মুজাফফরপুরে গিয়ে কিংসফোর্ডের গতিবিধির ওপর নজর রাখতে শুরু করেন।
- বোমা হামলা: ১৯০৮ সালের ৩০শে এপ্রিল রাতে ইউরোপিয়ান ক্লাবের সামনে তাঁরা কিংসফোর্ডের গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। একটি ফিটন গাড়ি গেট দিয়ে বেরোলে তাঁরা সেটিকে কিংসফোর্ডের গাড়ি ভেবে বোমা নিক্ষেপ করেন।
- ভুল টার্গেট: দুর্ভাগ্যবশত, ওই গাড়িতে কিংসফোর্ড ছিলেন না। তার বদলে ছিলেন ব্যারিস্টার প্রিঙ্গল কেনেডির স্ত্রী এবং কন্যা। বোমা হামলায় তাঁরা দুজনেই মারা যান।
বিচার ও মৃত্যুদণ্ড
বোমা নিক্ষেপের পর ক্ষুদিরাম ও প্রফুল্ল চাকি দুজনেই পালিয়ে যান। কিন্তু তাঁদের ভাগ্য ছিল ভিন্ন।
- গ্রেফতার: প্রায় ২৫ মাইল পথ হেঁটে ক্ষুদিরাম ওয়াইনি (Waini) স্টেশনে (বর্তমান নাম ক্ষুদিরাম বোস পুসা স্টেশন) পৌঁছান। সেখানে এক কাপ জল খাওয়ার সময় পুলিশের সন্দেহের ভাজনে পড়েন এবং ধরা পড়েন। অন্যদিকে, প্রফুল্ল চাকি মোকামা স্টেশনে পুলিশের হাতে ধরা পড়ার আগেই নিজের রিভলভার দিয়ে গুলি করে আত্মহত্যা করেন।
- বিচার প্রক্রিয়া: মুজাফফরপুর আদালতে শুরু হয় ঐতিহাসিক বিচার। ক্ষুদিরাম বোমা হামলার সমস্ত দায় নিজের কাঁধে তুলে নেন। তিনি আদালতে নির্ভীক চিত্তে দাঁড়িয়ে বলেন, তিনি কিংসফোর্ডকে মারতে চেয়েছিলেন।
- রায় ও ফাঁসি: বিচারক কর্নডফ (Corndoff) তাঁকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। ১৯০৮ সালের ১১ই আগস্ট ভোর ৬টায় মুজাফফরপুর জেলে ক্ষুদিরাম বসুর ফাঁসি কার্যকর করা হয়। ফাঁসির মঞ্চে ওঠার সময় তাঁর মুখে ছিল অমলিন হাসি, যা দেখে জেলর থেকে শুরু করে উপস্থিত সবাই স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন।
ক্ষুদিরাম বসুর অবদান ও প্রভাব
ক্ষুদিরাম বসুর আত্মত্যাগ ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে।
- তরুণ প্রজন্মের জাগরণ: তাঁর মৃত্যু বাংলার যুবসমাজকে সশস্ত্র বিপ্লবের পথে উদ্বুদ্ধ করে। তিনি হয়ে ওঠেন সাহসের প্রতীক।
- জাতীয়তাবাদ: তাঁর ফাঁসির পর বাংলা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। তাঁতীরা ‘ক্ষুদিরাম’ লেখা পাড় দেওয়া ধুতি বুনতে শুরু করেন, যা পরে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের পোশাকে পরিণত হয়।
- ইতিহাসে স্থান: ভারতের সর্বকনিষ্ঠ বিপ্লবীদের মধ্যে তিনি অন্যতম, যিনি দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন। তিনি প্রমাণ করেছিলেন, বয়স দেশপ্রেমের পথে কোনো বাধা নয়।
উপসংহার (Conclusion)
ক্ষুদিরাম বসু কেবল একটি নাম নয়, তিনি একটি ইতিহাস এবং আবেগের নাম। পরাধীনতার অন্ধকার দূর করতে তিনি নিজের জীবন প্রদীপ জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁর আত্মত্যাগ আমাদের শেখায় যে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে বয়সের প্রয়োজন হয় না, প্রয়োজন হয় অদম্য ইচ্ছাশক্তির।
আশা করি, ক্ষুদিরাম বসু কুইজ (Khudiram Bose Quiz in Bengali) এবং এই তথ্যবহুল আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে। এই তথ্যগুলি বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার (Competitive Exams) জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আপনার মতামত জানান:
এই কুইজে আপনি কত পেলেন? কমেন্ট করে আমাদের জানান। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন এবং তাঁদেরও জানার সুযোগ করে দিন মহান বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর অজানা ইতিহাস।











