প্রতিবেদন কি | প্রতিবেদন সহজ ভাবে লেখার নিয়ম জানুন



 প্রতিবেদন কি

প্রতিবেদন কি

সাধারণত সংবাদপত্রে প্রকাশের উদ্দেশ্যে বা কোনো প্রতিষ্ঠান কিংবা কোনো সংগঠনের বিবিধ কাজের বিবরণ দিয়ে একটি বিষয়কে যেভাবে তুলে ধরা হয়, তাকেই বলা হয় প্রতিবেদন। কথাটির সাধারণ অর্থ বিবরণী বা রিপোর্ট এবং এই প্রতিবেদন রচয়িতাকে আমরা বলে থাকি প্রতিবেদক বা রিপোর্টার। রাজনীতি, খেলাধুলো, পরিবেশ, বিনোদন, বাণিজ্য ইত্যাদি নানান বিষয়ের উপর প্রতিবেদন রচিত হতে পারে।


প্রতিবেদন লেখার নিয়ম

প্রতিবেদন সবসময় সহজসরল ভাষায় লেখা উচিত। জটিল বা অপ্রচলিত শব্দ ও শব্দবধ যতটা সম্ভব না লেখাই ভালো।

প্রতিবেদন সবসময়েই তথ্যমূলক রচনা, এখানে কল্পনার স্থান নেই। তথ্যের পরিবর্তন না ঘটিয়ে রচনাকে আকর্ষণীয় করে তোলাই প্রতিবেদকের কাজ।

প্রতিবেদনে কোনো একটি বিশেষ দল বা সংগঠনের প্রতি পক্ষপাত করা। অনুচিত। প্রতিবেদকের দায়িত্বই হচ্ছে নিজে নিরপেক্ষ থেকে সংবাদ পরিবেশন করা।

প্রতিবেদনের শিরোনাম একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। শিরোনাম এমন হওয়া উচিত, যা প্রথমেই পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

একই বিষয় বা প্রসঙ্গের পুনরুক্তি প্রতিবেদন রচনার ক্ষেত্রে একটি দোষ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। পুনরুক্তি এক্ষেত্রে সবসময় বর্জন করা উচিত।


প্রতিবেদন লেখার দুটি উদাহরণ

(1) প্রতিবেদন

রাজ্যে চিকিৎসক বিরল

প্রতি দশ হাজার মানুষপিছু এ-রাজ্যে ডাক্তার মাত্র সাত জন

বিশেষ সংবাদদাতা, কলকাতা, ৩ মে: পশ্চিমবঙ্গে প্রতি ১০ হাজার মানুষের জন্য ৭ জন মাত্র ডাক্তার রয়েছেন। অথচ, পাঞ্জাবে প্রতি ১০ হাজার মানুষের জন্য আছেন ১৫.৩ জন ডাক্তার, হরিয়ানায় ১৬ জন ডাক্তার, হিমাচলপ্রদেশে ১৪.৫ জন। এমনকি এ ব্যাপারে মহারাষ্ট্র, মণিপুর, কেরল প্রভৃতি রাজ্যের অবস্থাও পশ্চিমবঙ্গের চেয়ে অনেক ভালো। বিহার, উত্তরপ্রদেশের মতো গুটিকয়েক রাজ্য আছে পশ্চিমবঙ্গের দলে | কেন্দ্রীয় সরকারের এক সাম্প্রতিক সমীক্ষায় এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।



কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের বার্ষিক রিপোর্টে প্রতি ১০ হাজার নাগরিকপিছু রেজিস্টার্ড ডাক্তারদের সংখ্যা সংক্রান্ত রাজ্যওয়াড়ি পরিসংখ্যান দেওয়া হয়েছে। ওই পরিসংখ্যান অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গের ৬ কোটি ৮০ লক্ষ (১৯৯১ সালের জনগণনা অনুযায়ী) মানুষের জন্য মোট ৪৫ হাজার ১০৫ জন নথিভুক্ত চিকিৎসক রয়েছেন। অর্থাৎ প্রতি ১০ হাজারে ৬.৬ জন। তবে এ ব্যাপারে সবচেয়ে করুণ পরিস্থিতিতে রয়েছে অসম ও জম্মু-কাশ্মীর। চিকিৎসায় সরকারিক্ষেত্রে গাফিলতির অভিযোগ বাড়ছে দিনে দিনে | হাসপাতালে বেড না পাওয়া, পর্যাপ্ত ওষুধের অভাবে রোগীমৃত্যুর ঘটনা ইদানীং সময়ে ক্রমশ বাড়ছে। এর মধ্যে ডাক্তারের ঘাটতির তথ্য সমস্যাকে আরও জটিল করবে বলেই সকলের ধারণা।


(2) প্রতিবেদন

দূষণ প্রতিরোধে সেমিনারের আয়োজন

‘প্লাস্টিক দূষণ’ প্রতিরোধে বিদ্যালয়ে আয়োজিত সেমিনার

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা, ১০ মে: গত ৫ মে ‘শিক্ষামন্দির |


উচ্চবিদ্যালয়’-এ অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ‘প্লাস্টিক দূষণ’ প্রতিরোধের ওপর একটি সেমিনার | স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। তিন দিন ধরে এই সেমিনার চলে। এই তিন দিনে বক্তৃতা, আলোচনা এবং দূষণের প্রতিকার সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। এই সেমিনারে প্রতিদিনই বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক ছাড়াও সহ-শিক্ষক/শিক্ষিকারাও উপস্থিত ছিলেন। বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরাও প্রায় প্রত্যেকেই উপস্থিত ছিল। বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের তৈরি নানারকম মডেল প্রদর্শনীর ব্যবস্থা ছিল। শক্ষক/শিক্ষিকা এবং কিছু ছাত্রছাত্রীও এ-বিষয়ে তাদের বক্তব্য পেশ করেন।

কীভাবে প্লাস্টিক পরিবেশকে দূষিত করে এবং এই প্লাস্টিক দূষণ রুখতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। শিক্ষক/শিক্ষিকা, ছাত্রছাত্রীরা ছাড়াও এই সেমিনারে স্থানীয় অধিবাসীরাও যোগ দিয়েছিলেন। এ ছাড়া স্থানীয় স্বাস্থ্য আধিকারিকও উপস্থিত ছিলেন এই সেমিনারে | তৃতীয় দিনে অর্থাৎ সেমিনারের শেষ দিনে একটি শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। সেখানে প্রায় প্রত্যেকেই উপস্থিত ছিলেন। প্লাস্টিক দূষণের প্রতিরোধ সম্পর্কে সচেতন করার জন্যই মূলত এই শোভাযাত্রার ব্যবস্থা করা হয়েছিল।

Aftab Rahaman
Aftab Rahaman

I'm Aftab Rahaman, The Founder Of This Blog. My Goal is To Share Accurate and Valuable Information To Make Life Easier, With The Support of a Team Of Experts.

Articles: 1903