‘অশ্ব অক্ষাংশ’ বলতে কী বোঝ ? 



অশ্ব অক্ষাংশ কাকে বলে

অশ্ব অক্ষাংশ (Horse Latitude) হলো পৃথিবীর উভয় গোলার্ধে প্রায় ৩০° থেকে ৩৫° উত্তর এবং দক্ষিণ অক্ষাংশের মধ্যবর্তী অঞ্চল, যেখানে বায়ুমণ্ডলীয় চাপ সাধারণত উচ্চ থাকে এবং বাতাস প্রায় স্থির বা খুবই দুর্বল হয়। এই অঞ্চলগুলোকে সাবট্রপিকাল হাই প্রেসার জোন বা সাবট্রপিকাল রিজও বলা হয়।

নামের উৎপত্তি: এই অঞ্চলের নাম “অশ্ব অক্ষাংশ” পড়ার কারণ ঐতিহাসিক। পুরানো দিনে, যখন পালতোলা জাহাজগুলো এই অঞ্চলে পৌঁছতো, তখন বাতাসের অভাবে জাহাজগুলো প্রায় স্থির হয়ে যেত। ফলে, জাহাজে থাকা ঘোড়াগুলোর জন্য পানি ও খাবারের অভাব দেখা দিত, এবং অনেক সময় নাবিকরা ঘোড়াগুলোকে সমুদ্রে ফেলে দিত বা মেরে ফেলত। এই ঘটনা থেকেই এই অঞ্চলের নাম “অশ্ব অক্ষাংশ” হয়েছে।

বৈশিষ্ট্য:
– এই অঞ্চলে বায়ুর গতি কম থাকায় এটি “শান্ত অঞ্চল” (Doldrums) নামেও পরিচিত।
– এটি ট্রেড উইন্ড (বাণিজ্য বায়ু) এবং ওয়েস্টারলি বায়ুর মধ্যবর্তী সীমানায় অবস্থিত।
– এই অঞ্চলে প্রায়শই মরুভূমি গঠন হয়, যেমন সাহারা, কালাহারি, বা অস্ট্রেলিয়ার মরুভূমি, কারণ উচ্চচাপের কারণে বৃষ্টিপাত কম হয়।



সংক্ষেপে, অশ্ব অক্ষাংশ হলো পৃথিবীর এমন একটি অঞ্চল যেখানে বায়ু প্রবাহ কম এবং আবহাওয়া শুষ্ক থাকে।

‘অশ্ব অক্ষাংশ’ বলতে কী বোঝ ? বা অশ্ব অক্ষাংশ কী?

উভয় গোলার্ধে উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয়ে (30°-35° উ: ও দ:) শীতল ও ভারী বায়ু ওপর থেকে নীচে নেমে আসায় ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে বায়ু প্রবাহিত হয় না, ফলে এখানকার বায়ুমণ্ডলে শান্তভাব বিরাজ করে। একে বলা হয় উপক্রান্তীয় শান্তবলয়। প্রাচীনকালে অশ্ববোঝাই পালতোলা জাহাজসমূহ ইউরোপ থেকে উত্তর আমেরিকা বা পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জে যাওয়ার সময় উপক্রান্তীয় শান্তবলয়ে (উত্তর গোলার্ধের) এসে গতিহীন হয়ে পড়েছিল। তখন খাদ্য ও পানীয় জলের ব্যবহার কমাতে এবং জাহাজকে কিছুটা হালকা করার জন্য নাবিকেরা অনেক অশ্বকে জলে ফেলে দিয়েছিল। সেই ঘটনা থেকে 30° থেকে 35° উত্তর অক্ষাংশ অর্থাৎ উপক্রান্তীয় শান্তবলয়কে অশ্বঅক্ষাংশ বলা হয়।

আরও পড়ুন: ভারতে বন্যার কারণগুলি আলোচনা করো। অথবা, ভারতে বন্যা ও খরার নিয়ন্ত্রণ কিভাবে হতে পারে?

Salauddin Sekh
Salauddin Sekh
Articles: 161