মেহেরগড় সভ্যতা: নব্য প্রস্তর যুগের শেষদিকে পাথরের উপকরণ ব্যবহারের পাশাপাশি মানুষ তামার ব্যবহার শুরু করেছিল। তাই এই সময়কালকে অনেকে তাম্র-প্রস্তর যুগ হিসেবে চিহ্নিত করে থাকেন। যাই হোক, নব্য প্রস্তর বা তাম্র-প্রস্তর যুগে ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তর-পশ্চিম অংশে বোলান গিরিপথের নিকটবর্তী অঞ্চলে এক সুপ্রাচীন গ্রামীণ সংস্কৃতির উন্মেষ ঘটেছিল। এই সভ্যতা মেহেরগড় সভ্যতা নামে পরিচিত। এটি হল ভারতের প্রাচীনতম সভ্যতা।
মেহেরগড় সভ্যতা কবে আবিষ্কার করেন
আবিষ্কার: ফরাসি প্রত্নতত্ত্ববিদ জা ফ্রাঁসোয়া জারিজ পাকিস্তানের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রধান রিচার্ড মিডো-এর সঙ্গে বালুচিস্তান ও তার নিকটবর্তী অঞ্চলে খননকার্য চালান। এর ফলে ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে বালুচিস্তানের পশ্চিমে সিন্ধু উপত্যকার কাচ্চি সমভূমিতে মেহেরগড় সভ্যতার প্রাচীন নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়। বালুচিস্তানের ঝোব নদীর দক্ষিণ উপত্যকা থেকে সিন্ধুনদের সমগ্র পশ্চিম অংশ পর্যন্ত এই সভ্যতা বিস্তৃত ছিল।
মেহেরগড় সভ্যতার প্রাচীনত্ব – মেহেরগড় সভ্যতা সময় কাল
প্রাচীনত্ব: (1) বিকাশ ও বিলুপ্তির কাল: আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৭০০০ অব্দে বর্তমান পাকিস্তানের বালুচিস্তানের মেহেরগড় এলাকায় এই গ্রাম্য সংস্কৃতি গড়ে উঠেছিল বলে প্রমাণ মিলেছে। কার্বন-১৪ (C-14) পরীক্ষার দ্বারা জানা গেছে যে, মেহেরগড় সভ্যতা আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৭০০০ অব্দ থেকে খ্রিস্টপূর্ব ২৫০০ অব্দ পর্যন্ত টিকেছিল। এই সভ্যতা ৭টি পর্বে বিকশিত হয়েছিল।
(2). বিভিন্ন পর্যায়: মোটামুটিভাবে মেহেরগড় সভ্যতার প্রথম পর্যায়ের সময়কাল খ্রিস্টপূর্ব ৭০০০ অব্দ থেকে খ্রিস্টপূর্ব ৫০০০ অব্দ, দ্বিতীয় পর্যায়ের সময়কাল খ্রিস্টপূর্ব ৫০০০ অব্দ থেকে খ্রিস্টপূর্ব ৪০০০ অব্দ এবং তৃতীয় পর্যায়ের সময়কাল খ্রিস্টপূর্ব ৪০০০ অব্দ থেকে খ্রিস্টপূর্ব ৩৫০০ অব্দ। এই সভ্যতার চতুর্থ পর্যায় থেকে সপ্তম পর্যায় পর্যন্ত সময়কাল ছিল খ্রিস্টপূর্ব ৩৫০০ অব্দ থেকে খ্রিস্টপূর্ব ২৫০০ অব্দ পর্যন্ত।
মেহেরগড় সভ্যতার বিভিন্ন কেন্দ্র
বিভিন্ন কেন্দ্র: মেহেরগড় সভ্যতার প্রধান কেন্দ্র ছিল মেহেরগড়। এখানেই এই সভ্যতার প্রথম নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়েছে বলে এর নামকরণ হয়েছে মেহেরগড় সভ্যতা। মেহেরগড় ছাড়া এই সভ্যতার আরও বিভিন্ন কেন্দ্র ছিল। এই কেন্দ্রগুলির অধিকাংশই সিন্ধু উপত্যকার কাচ্চি সমভূমিতে অবস্থিত। এই সভ্যতার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য কেন্দ্রগুলি হল তরকাইকেল্লা, শেরিখান তরকাই, কাচ্চিবেগ, মুন্ডিগাক, পেরিয়ানো ঘুনডাই, রানা ঘুনডাই, কিলেগুল মহম্মদ, নৌসেরা, আমরিনাল, নুন্দরা, কুল্লি, কোটদিজি, গাজিশাহ, থারো প্রভৃতি।
আরো দেখুন—
মেহেরগড় সভ্যতার অগ্রগতি
মেহেরগড় সভ্যতায় মোট ৭টি পর্যায় লক্ষ করা গিয়েছে। এগুলির মধ্যে প্রথম ৩টি পর্যায়ে নব্য প্রস্তর যুগের প্রতিটি বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। এ যুগের বৈপ্লবিক অগ্রগতির বিষয়টিও এই সভ্যতায় সুস্পষ্ট।
- হাতিয়ার ও অন্যান্য সামগ্রী: মেহেরগড় সভ্যতায় নব্য প্রস্তর যুগের বিভিন্ন হাতিয়ার আবিষ্কৃত হয়েছে। হাতিয়ারগুলি মূলত পাথর দিয়ে তৈরি হত। কৃষি যন্ত্রপাতির মধ্যে প্রাচীনতম হাতিয়ারটি হল বিটুমেন জাতীয় পাথর খণ্ডে নির্মিত কাস্তে পাথর। হাতিয়ার সহ অন্যান্য সামগ্রীর মধ্যে অন্যতম ছিল কাস্তে, মৃৎপাত্র, শিলনোড়া, যাঁতা, হামানদিস্তা, নিড়ানি, বিভিন্ন ধরনের পাথরের ক্ষুদ্র যন্ত্রপাতি প্রভৃতি। তবে পাথর ছাড়াও এই সময়ের হাড়ের হাতিয়ারও এখানে আবিষ্কৃত হয়েছে।
- বসতি স্থাপন: প্রথমদিকে শিকার ও পরে পশুপালন ছিল এখানকার মানুষের প্রধান জীবিকা। তখন মানুষ ছিল যাযাবর। পরে মানুষ যাযাবর জীবন ছেড়ে নির্দিষ্ট স্থানে স্থায়ীভাবে বসতি গড়ে তোলে এবং কৃষিকাজ শুরু করে। মেহেরগড় সভ্যতায় মানুষ রোদে পোড়ানো সমান মাপের ইট দিয়ে অথবা মাটি দিয়ে গৃহ তৈরি করত। পরের দিকে বিভিন্ন আকারের ইটের ব্যবহার আরও বৃদ্ধি পায়। কোথাও কোথাও পাথরের ভিতের ওপর বাড়ি তৈরি হত। আগুন জ্বালিয়ে ঘর গরম রাখার ব্যবস্থাও ছিল।
- তামার ব্যবহার: পাথরের ব্যবহারের ভিত্তিতে মেহেরগড় সভ্যতার বিকাশ ঘটলেও এই সভ্যতার প্রথম পর্যায় থেকে প্রাপ্ত একটি তামার পুঁতি থেকে অনুমান করা হয় যে, এই সভ্যতার মানুষ তামা গলানোর প্রক্রিয়া আয়ত্ত করেছিল। এখানকার তৃতীয় পর্যায়ে তামার সিলমোহর আবিষ্কৃত হয়েছে। এ ছাড়া এই পর্যায়ে তামা গলানোর অন্তত ১৪টি পোড়ামাটির পাত্র পাওয়া গেছে যেগুলিতে তামার অবশিষ্টাংশ লেগে ছিল। মূলত এই সভ্যতার তৃতীয় পর্যায়কে তাম্র-প্রস্তর যুগ হিসেবে চিহ্নিত করা যায়।
- মৃতদেহের সমাধি: মেহেরগড় সভ্যতায় মৃতদেহ সমাধি দেওয়ার বিষয়ে বিশিষ্টতা লক্ষ করা যায়। (1) গেরুয়া মাটির ব্যবহার: মৃতদেহ সমাহিত করার আগে দেহটিতে গেরুয়া মাটি মাখানো হত। (2) পরলোকে বিশ্বাস : সমাধি দেওয়ার সময় মৃতদেহের সঙ্গে শিকার করা পশু, বিভিন্ন হাতিয়ার, অলংকার, নীলকান্ত মণি, নীলা প্রভৃতি দামি পাথর প্রভৃতি দেওয়া হত। এসব বিষয় থেকে অনুমান করা যায় যে, এই সভ্যতার মানুষ পরলোকে বিশ্বাস করত। মৃতদেহটির আত্মা পরলোকে এসব সামগ্রী ব্যবহার করবে এমন বিশ্বাস থেকেই এসব সামগ্রী সমাধিতে রাখা হত।
- সামাজিক বৈষম্য: মেহেরগড় সভ্যতায় যথেষ্ট সামাজিক বৈষম্য ছিল বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। (1) সমাধিতে পার্থক্য: এখানকার কোনো কোনো সমাধিতে মৃতদেহের সঙ্গে প্রচুর মূল্যবান সামগ্রীর উপস্থিতি এবং কোনো কোনো সমাধিতে সেগুলির অনুপস্থিতি এই সামজিক বৈষম্যের প্রমাণ দেয়। (2) অন্যান্য পার্থক্য: শস্য মজুত রাখার পদ্ধতি, ব্যবহৃত হস্তশিল্পের সামগ্রী প্রভৃতির পার্থক্য থেকেও সমাজে শ্রেণিবিভাজন ও বৈষম্যের ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
6. বৈদেশিক সম্পর্ক: সুদূর অতীত কালেই বিভিন্ন বৈদেশিক সভ্যতার সঙ্গে মেহেরগড় সভ্যতার যোগ ছিল বলে জানা যায়। এখানকার মৃৎপাত্রের ধরন, নির্মাণ প্রণালী, নীলকান্তমণির ব্যবহার প্রভৃতি দেখে পণ্ডিতরা অনুমান করেন যে, মধ্য এশিয়া, আফগানিস্তান, পারস্য প্রভৃতির সঙ্গে এই সভ্যতার যোগাযোগ ছিল। অধ্যাপক ড. রণবীর চক্রবর্তী মনে করেন যে, শঙ্খ ও লাপিস লাজুলি বাইরে থেকে এখানে এসেছে।
মেহেরগড় সভ্যতা তিনটি বৈশিষ্ট্য
- পরীক্ষার দ্বারা জানা গেছে যে, মেহেরগড় সভ্যতা আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৭০০০ অব্দ থেকে খ্রিস্টপূর্ব ২৫০০ অব্দ পর্যন্ত টিকেছিল।
- ফরাসি প্রত্নতত্ত্ববিদ জা ফ্রাঁসোয়া জারিজ পাকিস্তানের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রধান রিচার্ড মিডো-এর সঙ্গে বালুচিস্তান ও তার নিকটবর্তী অঞ্চলে খননকার্য চালান। এর ফলে ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে বালুচিস্তানের পশ্চিমে সিন্ধু উপত্যকার কাচ্চি সমভূমিতে মেহেরগড় সভ্যতার প্রাচীন নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়।
- মেহেরগড় সভ্যতায় নব্য প্রস্তর যুগের বিভিন্ন হাতিয়ার আবিষ্কৃত হয়। কৃষি যন্ত্রপাতির মধ্যে প্রাচীনতম হাতিয়ারটি হল বিটুমেন জাতীয় পাথর খণ্ডে নির্মিত কাস্তে পাথর। হাতিয়ার সহ অন্যান্য সামগ্রীর মধ্যে অন্যতম ছিল কাস্তে, মৃৎপাত্র, শিলনোড়া, যাঁতা, হামানদিস্তা, নিড়ানি, বিভিন্ন ধরনের পাথরের ক্ষুদ্র যন্ত্রপাতি প্রভৃতি। তবে পাথর ছাড়াও এই সময়ের হাড়ের হাতিয়ারও এখানে আবিষ্কৃত হয়।
মেহেরগড় সভ্যতার বৈশিষ্ট্য গুলি কি ছিল
মেহেরগড় সভ্যতার অর্থনৈতিক জীবন
মেহেরগড় সভ্যতায় প্রথমদিকে শিকার ও পশুপালন মানুষের প্রধান জীবিকা ছিল। পরবর্তীকালে এখানে কৃষিকাজের বিকাশ ঘটে। এ ছাড়া এখানে বিভিন্ন শিল্প এবং বাণিজ্যেরও বিকাশ ঘটেছিল বলে জানা যায়।
মেহেরগড় সভ্যতা কোন কোন কৃষি পণ্য উৎপাদিত হত
1. কৃষি: ভারতে প্রথম কৃষি ও পশুপালন অর্থনীতির বিকাশ ঘটেছিল মেহেরগড় সভ্যতাতেই। এখানে গম ও ঘব চাষের প্রমাণ মিলেছে। জলধারার বিভিন্ন স্থানে ছোটো ছোটো বাঁধ নির্মাণ করে এখানকার মানুষ কৃষিজমিতে জলসেচের ব্যবস্থা করত। এর ফলে কৃষি উৎপাদন যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছিল। উদ্বৃত্ত শস্য সংরক্ষণ করার জন্য এখানে শস্যাগারও তৈরি করা হত। প্রধানত অধিবাসীদের নিজেদের ভোগের উদ্দেশ্যেই কৃষি-উৎপাদন করা হত। এই সভ্যতার তৃতীয় পর্যায়ে কৃষির ব্যাপক অগ্রগতি ঘটে। নব্য প্রস্তর যুগে কৃষি পদ্ধতির আবিষ্কার ও অগ্রগতির বিষয়টিকে পুরাতত্ত্ববিদ গর্ডন চাইল্ড ‘নব্য প্রস্তর যুগের বিপ্লব‘ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
2. পশুপালন: মেহেরগড় সভ্যতায় কৃষির প্রয়োজনে পশুপালনের গুরুত্ব বেড়েছিল। তা ছাড়া খাদ্য হিসেবে মাংসের প্রয়োজনেও পশুপালন করা হত। অবশ্য কৃষি ও পশুপালনের পাশাপাশি খাদ্যের প্রয়োজনে শিকার করার পেশা তখনও প্রচলিত ছিল। তবে শিকার করা বন্যপশুর তুলনায় গৃহপালিত পশুর মাংস পরবর্তীকালের মানুষ বেশি খেত বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। প্রথমদিকে ছাগল, কুঁজওয়ালা ষাঁড়, ভেড়া প্রভৃতি পশুকে তারা পোষ মানিয়েছিল। পরে মোষ ও অন্যান্য পশুকে পোষ মানিয়ে পালন করা শুরু হয়।
3. মৃৎশিল্প: মেহেরগড় সভ্যতায় মৃৎশিল্পেরও যথেষ্ট অগ্রগতি ঘটেছিল। (1) প্রথমদিকে মৃৎপাত্রগুলি হাতে
করা হত। (2) পরবর্তীকালে পশ্চিম এশিয়া থেকে ঘুরন্ত চাকার সাহায্যে মৃৎপাত্র তৈরির কৌশলটি মেহেরগড় সভ্যতায় আমদানি করা হয়। ফলে খ্রিস্টপূর্ব ৪০০০ অব্দ নাগাদ মেহেরগড় সভ্যতায় মৃৎপাত্র তৈরিতে ঘুরন্ত চাকার ব্যবহার শুরু হয়। (3) পরবর্তীকালে মৃৎপাত্রগুলি চুল্লির আগুনে পোড়ানো এবং তাতে বিভিন্ন রঙের প্রলেপ দেওয়া শুরু হলে মৃৎশিল্পে অভাবনীয় অগ্রগতি ঘটে। দৈনন্দিন ব্যবহার্য পাত্র ছাড়াও এই সভ্যতায় পোড়া মাটির নারীমূর্তি, গবাদিপশুর মূর্তি প্রভৃতি তৈরি হত বলে নিদর্শনগুলি থেকে অনুমান করা যায়।
4. বয়নশিল্প: মেহেরগড় সভ্যতায় বয়নশিল্পের বিকাশ ঘটেছিল বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। এখানে কার্পাস তুলোর প্রচুর পোড়া বীজ পাওয়া গেছে। এটি ভারতে কার্পাস তুলো চাষের প্রাচীনতম নিদর্শন বলে মনে করা হয়। অনুমান করা যেতে পারে যে, কার্পাসের তুলো দিয়ে সুতো তৈরি করে তা কাপড় বোনার কাজে ব্যবহার করা হত। এখানে হাতে সেলাই করা বিভিন্ন বস্ত্রাদি ব্যবহারের নিদর্শনও আবিষ্কৃত হয়েছে।
5. অন্যান্য শিল্প: মেহেরগড় সভ্যতায় অন্যান্য বিভিন্ন শিল্প ও প্রযুক্তির বিকাশ ঘটেছিল। এর মধ্যে অন্যতম ছিল অলংকার শিল্প। অলংকারগুলি তৈরি হত পাথর দিয়ে। এখানে ছোটো শঙ্খ, নীলকান্তমণি, চুনি, লাপিস লাজুলি প্রভৃতির যথেষ্ট ব্যবহার ছিল। মেহেরগড় সভ্যতায় নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সামগ্রী ও গৃহস্থালির টুকিটাকি আবিষ্কৃত হয়েছে। প্রাত্যহিক জীবনে বাসিন্দারা এগুলি ব্যবহার করত। এখানে নলখাগড়ার তৈরি ঝুড়ি, পশুর লোমের বস্ত্র প্রভৃতিরও নিদর্শন মিলেছে। এ ছাড়া ঘর গরম রাখার চুল্লি, গোলাঘর, সিল, স্বস্তিকা চিহ্ন প্রভৃতি আবিষ্কৃত হয়েছে।
6. বাণিজ্য: মেহেরগড় সভ্যতার তৃতীয় পর্যায়ে প্রাপ্ত তামার সিলমোহর থেকে অনুমান করা হয় যে, এই সভ্যতার মানুষ ব্যাবসাবাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত ছিল। ড. রণবীর চক্রবর্তী এই অভিমত সমর্থন করেন। তামার সিলমোহরের দ্বারা বণিকরা নিজেদের পণ্য চিহ্নিতকরণের কাজ করত। বণিকরা অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক উভয় ধরনের বাণিজ্যের সঙ্গেই যুক্ত ছিল বলে পণ্ডিতরা মনে করেন। বাণিজ্য পণ্যের অন্যতম ছিল উদ্বৃত্ত কৃষিপণ্য।
মেহেরগড় সভ্যতার চূড়ান্ত পরিণতি ও অবসান – মেহেরগড় সভ্যতার ধ্বংসের কারণ
মেহেরগড় সভ্যতার চূড়ান্ত বিকাশ লক্ষ করা যায় এখানকার চতুর্থ থেকে সপ্তম পর্যায়ে। গ্রামীণ মেহেরগড় সভ্যতা এই সময় ক্রমে নগরজীবনের দিকে যেতে থাকে যা পরবর্তীকালে বালুচিস্তানের সিন্ধু বা হরপ্পা সভ্যতায় চূড়ান্তভাবে বিকশিত হয়। অধ্যাপক ড. ব্রতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়, ড. দিলীপ চক্রবর্তী, ড. শিরিন রত্নাগর প্রমুখ ঐতিহাসিক পরবর্তীকালের সিন্ধু সভ্যতাকে পূর্ববর্তী মেহেরগড় সভ্যতার উত্তরসূরি বলে মনে করেন। ব্রতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় মনে করেন যে, মেহেরগড়ের নগরায়ণ পরবর্তী সিন্ধু সভ্যতায় পরিণত রূপ লাভ করেছিল। যাই হোক, দীর্ঘ অস্তিত্বের পর আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ২৫০০ অব্দের কাছাকাছি সময়ে ভারতের প্রাচীনতম এই মেহেরগড় সভ্যতার অবসান ঘটে।
মেহেরগড় সভ্যতার সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর
মেহেরগড় সভ্যতা mcq
ফরাসি প্রত্নতত্ত্ববিদ জা ফ্রাঁসোয়া জারিজ পাকিস্তানের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রধান মেহেরগড় সভ্যতা কে আবিষ্কার করেন ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে বালুচিস্তানের পশ্চিমে সিন্ধু উপত্যকার কাচ্চি সমভূমিতে।
মেহেরগড় সভ্যতা পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের কাচ্চি সমভূমিতে অবস্থিত
গম, জব, কার্পাস প্রভূতি ফসল উৎপাদিত হতো।
বোলান নদীর তীরে কোয়েটা শহর থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে মেহেরগড়ের সভ্যতা অবস্থিত।
ভারতের প্রাচীনতম সভ্যতার নাম হল মেহেরগড় সভ্যতা
মেহেরগড় সভ্যতা
This video is the full credit of the owner