Physical Address
304 North Cardinal St.
Dorchester Center, MA 02124
Physical Address
304 North Cardinal St.
Dorchester Center, MA 02124
খাদ্যাভ্যাসের ইতিহাস : মানব সভ্যতার ইতিহাসচর্চায় খাদ্যাভ্যাস একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আদিম মানুষ পুরোনো পাথরের যুগ থেকে নতুন পাথরের যুগে পৌঁছোনোর পথে খাদ্যসংগ্রাহক থেকে খাদ্য উৎপাদকে পরিণত হয়। তাই আদিমকাল থেকেই খাদ্যাভ্যাসের বিবর্তনও চলতে থাকে। কোনো জনগোষ্ঠীর খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন থেকে তাদের ওপর অন্য কোনো সংস্কৃতির প্রভাবের বিষয়টি উপলব্ধি করা যায়। যেমন, পাল ও সেন যুগে বৌদ্ধ ও ব্রাহ্মণ্য ধর্মের প্রভাবে বাংলায় ভাত ও নিরামিষ খাবার খাওয়ার প্রচলন ছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে সুলতানি শাসনের যুগে ইসলামি সংস্কৃতি বাংলার খাদ্যাভ্যাসকে প্রভাবিত করে। ঢাকা যখন প্রাদেশিক রাজধানীর মর্যাদা লাভ করল তখন তার নিজস্ব রন্ধনপ্রণালীতে পারসিক খাদ্যরীতির মিশেল ঘটল। এর ফলে বিভিন্ন ‘ঢাকাই খাবার’-এর উদ্ভব ঘটে। পোর্তুগিজরা ভারতে এসে আলু চাষের প্রচলন করলে বা ভারতের গোলমরিচ ইউরোপে গেলে এসব স্থানের রন্ধন প্রণালীতে এগুলির ব্যবহার শুরু হয়।
Recommended:
আবার সেদেশে ওট্মিল থেকে প্রচুর কেক তৈরি হয় বলে স্কটল্যান্ড ‘কেকের দেশ‘ হিসেবে পরিচিত লাভ করে।
[su_note note_color=”#f0ef2b”]গবেষক হরিপদ ভৌমিক তাঁর ‘রসগোল্লা: বাংলার জগৎমাতানো আবিষ্কার’ গ্রন্থে প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন যে, রসগোল্লা উড়িষ্যার নয়, বাঙালিদেরই আবিষ্কার | নদিয়া জেলার ফুলিয়ায় হারাধন ময়রা আদি রসগোল্লার সৃষ্টিকর্তা। বাগবাজারের নবীনচন্দ্র দাস নামে জনৈক ময়রা স্পঞ্জ রসগোল্লা তৈরি করেন।[/su_note]
অনুরূপভাবে হুগলির বাঙালিরা পোর্তুগিজদের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে এসেছিল। ফলে অতীতে যেসব মিষ্টি তৈরি করতে বাঙালি খোয়া বা ক্ষীর ব্যবহার করত, সেইসব মিষ্টিই দুধ-কাটা ছানা ও চিনি মিশিয়ে তৈরি হতে লাগল। রসগোল্লা, সন্দেশ প্রভৃতি নামে নতুন নতুন মিষ্টি বঙ্গজীবন ও সংস্কৃতির অঙ্গ হয়ে উঠেছিল। লক্ষণীয়, বাংলা ছাড়া ভারতের অন্য কোনো জায়গায় হিন্দু দেবদেবীর পুজো-অর্চনায় ছানার তৈরি মিষ্টি ব্যবহৃত হয় না। নিঃসন্দেহে পোর্তুগিজ সংস্কৃতির দ্বারা যদি না বাংলার লোকজীবন প্রভাবিত হত, তাহলে ছানার তৈরি মিষ্টান্ন এখানেও দেবতার নৈবেদ্যে জায়গা করে Aগীত: নিতে পারত না। খাদ্যাভ্যাসের এরুপ নানা ইতিহাসের চর্চা এযুগে যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে।
খাদ্যাভ্যাসের ইতিহাসচর্চার ধারায় কে টি আচয়-এর লেখা ‘ইন্ডিয়ান ফুড: আ হিস্টোরিক্যাল কম্প্যানিয়ন’, ‘আ হিস্টোরিক্যাল ডিকশনারি অব থ্রি.) ‘কাজ ইন্ডিয়ান ফুড’, প্যাট চ্যাপম্যানের ‘ইন্ডিয়া ফুড অ্যান্ড কুকিং’, জে গ্রামিলিয়ন-এর ‘অ্যাপেটাইট্স : ফুডস ইন প্রি-হিস্ট্রি’, লেভেনস্টেইন-এর ‘আ’ সোশ্যাল হিস্ট্রি অব ইটিং ইন মডার্ন আমেরিকা) রিয়াই টান্নাহিল-এর ‘ফুড ইন হিস্ট্রি’, তপন রায়চৌধুরীর প্রবন্ধ ‘মোগল আমলের খানাপিনা’ প্রভৃতি গ্রন্থ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।