খেলার ইতিহাস চর্চা গুরুত্বপূর্ণ কেন
খেলার ইতিহাস: জাতির আত্মপরিচয়ে খেলাধুলোর যোগ অনস্বীকার্য। একইভাবে খেলাধুলোকে কেন্দ্র করে গণ-আবেগ কখনও জাতীয়তাবাদকে উদ্বুদ্ধ করেছে, কখনও সাম্প্রদায়িকতাকে উসকানি দিয়েছে, কখনও আবার সমাজবিবর্তনের হাতিয়ার হিসেবে কাজ করেছে। এমনকি, কোনো কোনো পর্বে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কও খেলাধুলোর ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়েছে। তাই ইতিহাসের চর্চায় খেলার ইতিহাস আর উপেক্ষণীয় আংশিক বিষয় নয়, বরং তা এখন সমাজ সংস্কৃতির ইতিহাস আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হিসেবে বিবেচিত হয়। হবস্বম উল্লেখ করেছেন যে, বিংশ শতাব্দীর ইউরোপীয় জীবনধারার এক অন্যতম প্রধান সামাজিক অভ্যাস হল খেলাধুলা।
Read More –
জাতীয়তাবাদ বিস্তারে খেলা কিভাবে সাহায্য করে
জাতীয়তাবাদের বিকাশে খেলাধুলোর বিশেষ ভূমিকা লক্ষিত হয় (১৯০৫-এ ব্রিটিশ শাসকের বাংলাভাগ ভারতীয় বিশেষ করে সাধারণ বাঙালি সমাজে যে ক্ষোভের সঞ্চার করেছিল তারই প্রকাশ দেখা গিয়েছিল আইএফএ শিল্ডে দেশীয়দের ফুটবল দল মোহনবাগানের জয়ে আনন্দ-উচ্ছ্বাসের মধ্য দিয়ে। জাতীয়তাবাদের এরকম স্পর্ধিত প্রকাশ দেখেই ব্রিটিশরা ১৯১১-তে ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী কলকাতা থেকে দিল্লিতে স্থানান্তরিত করেছিল বলে ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহ মনে করেন।
প্রাচীন গ্রিসের অলিম্পিয়া নগরীতে প্রথম অলিম্পিক গেম্স (৭৭৬ খ্রি. পূ.) অনুষ্ঠিত হওয়া থেকে শুরু করে আধুনিককালে ইংল্যান্ডে প্রথম ক্রিকেট খেলার সূচনা (১৭০৯ খ্রি.) ইংল্যান্ডে প্রথম মহিলা ক্রিকেট ক্লাব (১৮৮৭ খ্রি.) প্রতিষ্ঠা, উইমেন ক্রিকেট কাউন্সিল’ বা WCC (১৯২৬ খ্রি.) প্রতিষ্ঠা, ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কনফারেন্স’ বা ICC প্রতিষ্ঠা (১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে নাম হয় ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল’), লন্ডনে ‘ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন’ বা FA (১৮৬৩ খ্রি.) প্রতিষ্ঠা, আধুনিক অলিম্পিকের সূচনা (১৮৯৬ খ্রি.)-সহ খেলার দীর্ঘ ইতিহাস নিয়ে বর্তমানে চর্চা চলছে। খেলার ইতিহাসচর্চায় জে এ ম্যাসান, রিচার্ড হোল্ট প্রমুখ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন। ১৯৮২-তে গড়ে উঠেছে ‘ব্রিটিশ সোসাইটি অব স্পোর্টস হিস্ট্রি’) খেলাধুলার ইতিহাসচর্চার রিচার্ড হোল্ট-এর ‘স্পোর্টস অ্যান্ড দ্য ব্রিটিশ: আ মডার্ন হিস্ট্রি’, রামচন্দ্র গুহ-র ‘আ করনার অব আ ফরেন ফিল্ড : দ্য ইন্ডিয়ান হিস্ট্রি অব আ ব্রিটিশ স্পোর্টস’, ‘দ্য পিকাডর বুক অব ক্রিকেট, কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের খেলা যখন ইতিহাস’, বোরিয়া মজুমদারের ‘ক্রিকেট ইন কলোনিয়াল ইন্ডিয়া’, গৌতম ভট্টাচার্য-র ‘বাপি বাড়ি যা’, রূপক সাহার ‘একাদশে সূর্যোদয়’ ও ‘বিদ্রোহী মারাদোনা’ প্রভৃতি গ্রন্থ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
1. জে এ ম্যাসান,
2. রিচার্ড হোল্ট