পশ্চিমবঙ্গের জিআই ট্যাগ প্রাপ্ত পণ্য তালিকা 2025 PDF | West Bengal GI Tag List 2025 PDF ডাউনলোড



সুপ্রিয় বন্ধুরা,

আজকের এই পোস্টে আমি তোমাদের সাথে শেয়ার করছি পশ্চিমবঙ্গের জিআই ট্যাগ প্রাপ্ত পণ্যের একটি সম্পূর্ণ এবং আপডেটেড তালিকা। যদি তুমি সরকারি চাকরির পরীক্ষা প্রস্তুতি নিচ্ছো, অথবা শুধুমাত্র বাংলার সমৃদ্ধ সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে চাও, তাহলে এই তালিকা তোমার জন্য খুবই কাজের। আমি নিজে অনেক রিসার্চ করে এই তালিকা তৈরি করেছি, যাতে ২০২৫ সাল পর্যন্ত সব নতুন GI ট্যাগগুলো অন্তর্ভুক্ত আছে। বিভিন্ন পরীক্ষায় প্রশ্ন আসে যেমন – পশ্চিমবঙ্গে কতগুলো GI ট্যাগ আছে? দার্জিলিং চা কোন সালে GI পেয়েছে? অথবা ভারতের প্রথম GI ট্যাগ কোন পণ্যের? এই পোস্টে সবকিছু পাবে।

প্রথমে একটু GI ট্যাগ সম্পর্কে বলি। GI বা Geographical Indication ট্যাগ হলো একটি সার্টিফিকেশন যা কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলের অনন্য পণ্যকে সুরক্ষা দেয়। এটি নিশ্চিত করে যে পণ্যটির গুণমান, ঐতিহ্য এবং উৎপত্তি স্থানের সাথে যুক্ত। পশ্চিমবঙ্গে এখন মোট ৩৯টি GI ট্যাগ প্রাপ্ত পণ্য আছে, যা রাজ্যের সমৃদ্ধ কৃষি, হস্তশিল্প এবং খাদ্য ঐতিহ্যকে প্রতিফলিত করে। ২০২৫ সালে নতুন করে ৭টি পণ্য GI ট্যাগ পেয়েছে, যেমন নলেন গুড়ের সন্দেশ, বারুইপুরের পেয়ারা ইত্যাদি।

এই তালিকা PDF ফরম্যাটে ডাউনলোড করতে নীচের লিঙ্কে ক্লিক করো। এটি বাংলা ভাষায় আছে, সাইজ ১ এমবি, এবং ২ পেজের।

ফাইল ডিটেলস:

  • PDF নাম: West Bengal GI Tag List 2025
  • ভাষা: বাংলা
  • সাইজ: ০১ এমবি
  • পেজ সংখ্যা: ০২

[Download Link: Click here]

পশ্চিমবঙ্গের GI ট্যাগের গুরুত্ব

পশ্চিমবঙ্গের GI ট্যাগগুলো শুধুমাত্র পণ্যের সুরক্ষা নয়, বরং রাজ্যের অর্থনীতি এবং সংস্কৃতিকে উন্নত করে। উদাহরণস্বরূপ, দার্জিলিং চা ভারতের প্রথম GI ট্যাগ প্রাপ্ত পণ্য (২০০৪ সালে), যা বিশ্ববাজারে বাংলার নাম উজ্জ্বল করে। এই ট্যাগগুলো স্থানীয় কারিগর, কৃষক এবং ব্যবসায়ীদের সাহায্য করে, এবং নকল পণ্য থেকে রক্ষা করে। ২০২৫ সালে নতুন যোগ হওয়া পণ্যগুলো বাংলার মিষ্টি এবং কৃষি ঐতিহ্যকে আরও সমৃদ্ধ করেছে।

পশ্চিমবঙ্গের জিআই ট্যাগ প্রাপ্ত পণ্যের সম্পূর্ণ তালিকা ২০২৫

নীচে তালিকাটি টেবিল আকারে দেওয়া হলো। আমি ক্যাটাগরি (যেমন কৃষি, হস্তশিল্প, খাদ্য) এবং সংক্ষিপ্ত বর্ণনা যোগ করেছি যাতে সহজে বোঝা যায়। এটি ২০২৫ পর্যন্ত আপডেটেড।



GI ট্যাগ প্রাপ্ত পণ্যসালক্যাটাগরিসংক্ষিপ্ত বর্ণনা
দার্জিলিং চা২০০৪কৃষিদার্জিলিংয়ের পাহাড়ি অঞ্চলে উৎপাদিত সুগন্ধী চা, “চায়ের শ্যাম্পেন” নামে পরিচিত।
শান্তিনিকেতনের চামড়ার বস্তু২০০৭হস্তশিল্পরবীন্দ্রনাথ টেগোরের সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে তৈরি অনন্য ডিজাইনের চামড়ার পণ্য।
নকশি কাঁথা২০০৮হস্তশিল্পগ্রামীণ বাংলার মহিলাদের দ্বারা তৈরি সূচিকর্মের কুইল্ট, গল্প বলার শিল্প।
মালদার ফজলি আম২০০৮কৃষিবড় আকারের মিষ্টি-টক স্বাদের শেষ মৌসুমের আম, তাজা খাওয়া বা আচারে ব্যবহার।
লক্ষণভোগ আম২০০৮কৃষিমালদার মিষ্টি এবং সুগন্ধী আম, মসৃণ টেক্সচার সহ।
খিরসাপাতি বা হিমসাগর আম২০০৮কৃষিরসালো এবং সমৃদ্ধ স্বাদের টেবিল আম, মালদার সেরা ফলগুলির একটি।
শান্তিপুরী শাড়ি২০০৯হস্তশিল্পসূক্ষ্ম টেক্সচার এবং জটিল বুননের হাতে তৈরি শাড়ি।
ধনিয়াখালি শাড়ি২০১১হস্তশিল্পস্ট্রাইপ বা চেক প্যাটার্নের সুতির শাড়ি, সাশ্রয়ী এবং পরিধানযোগ্য।
বালুচরি শাড়ি২০১২হস্তশিল্পপৌরাণিক মোটিফ সহ সিল্কের শাড়ি, বাংলার বুননের সেরা উদাহরণ।
জয়নগরের মোয়া২০১৫খাদ্যখেজুর গুড় এবং ফুটানো চালের শীতকালীন মিষ্টি, তাজা স্বাদের জন্য বিখ্যাত।
বাংলার রসগোল্লা২০১৭খাদ্যছানা এবং চিনির সিরাপের স্পঞ্জি মিষ্টি, বাঙালি উৎসবের অংশ।
বর্ধমানের সীতাভোগ২০১৭খাদ্যসাদা নুডলের মতো চালের আটা এবং চিনির মিষ্টি, রাজকীয় স্বাদ।
বর্ধমানের মিহিদানা২০১৭খাদ্যচালের আটা এবং কেশরের পাউডার মিষ্টি, মসৃণ টেক্সচার সহ।
গোবিন্দভোগ চাল২০১৭কৃষিসুগন্ধী ছোট দানার চাল, উৎসব এবং ধর্মীয় খাবারে ব্যবহার।
তুলাইপঞ্জি চাল২০১৭কৃষিসূক্ষ্ম দানার সুগন্ধী চাল, মালদা এবং দিনাজপুরে চাষ।
বাংলার পটচিত্র২০১৮হস্তশিল্পঐতিহ্যবাহী চিত্রকলা, গ্রামীণ বাংলার জীবন প্রতিফলিত।
মাদুর কাঠি২০১৮হস্তশিল্পমাদুর তৈরির ঘাস, গ্রামীণ হস্তশিল্পের অংশ।
ডোকরা শিল্প২০১৮হস্তশিল্পলস্ট-ওয়াক্স ধাতু কাস্টিং, আদিবাসী ডিজাইনের মূর্তি।
পুরুলিয়ার ছৌ মুখোশ২০১৮হস্তশিল্পনাচের মুখোশ, পুরুলিয়ার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য।
বাঁকুড়ার পাঁচমুরার টেরাকোটা ঘোড়া২০১৮হস্তশিল্পটেরাকোটা ঘোড়া, গ্রামীণ সাজসজ্জা এবং আচারে ব্যবহার।
কুশমান্ডীর কাঠের মুখোশ২০১৮হস্তশিল্পকাঠের মুখোশ, ঐতিহ্যবাহী নকশা সহ।
সুন্দরবনের মৌবান মধু২০২৪কৃষিসুন্দরবনের প্রাকৃতিক মধু, অনন্য স্বাদ এবং গুণমান।
টাঙ্গাইল, গরদ, করিয়াল শাড়ি২০২৪হস্তশিল্পঐতিহ্যবাহী শাড়ি, মুর্শিদাবাদের বুনন কৌশল।
উত্তরবঙ্গের কালো নুনিয়া চাল২০২৪কৃষিকালো রঙের সুগন্ধী চাল, পুষ্টিকর এবং ঐতিহ্যবাহী।
নলেন গুড়ের সন্দেশ২০২৫খাদ্যতাজা ছানা এবং খেজুর গুড়ের মিষ্টি, শীতকালীন স্বাদ সহ।
কামারপুকুরের সাদা বোঁদে২০২৫খাদ্যসাদা রঙের মৃদু মিষ্টি বোঁদে, দীর্ঘস্থায়ী এবং শ্রীরামকৃষ্ণের প্রিয়।
মুর্শিদাবাদের ছানাবড়া২০২৫খাদ্যছানা দিয়ে তৈরি মিষ্টি, সামান্য পোড়া ক্রাস্ট সহ।
বিষ্ণুপুরের মতিচুরের লাড্ডু২০২৫খাদ্যবেসনের ছোট মুক্তো দিয়ে তৈরি লাড্ডু, রাজকীয় ঐতিহ্য।
রাঁধুনিপাগল চাল২০২৫কৃষিসুগন্ধী ছোট দানার চাল, মিষ্টি স্বাদ এবং মুখে গলে যাওয়া টেক্সচার।
বারুইপুরের পেয়ারা২০২৫কৃষিমিষ্টি এবং সুগন্ধী পেয়ারা, পেঁপে এবং নাশপাতির মিশ্রণ স্বাদ।
মালদার নিস্তারি সিল্ক সুতো২০২৫হস্তশিল্পসূক্ষ্ম এবং চকচকে সিল্ক সুতো, ঐতিহ্যবাহী বুননে ব্যবহার।

২০২৫ সালের নতুন ৭টি GI ট্যাগ প্রাপ্ত পণ্যের বিস্তারিত বর্ণনা

২০২৫ সালে পশ্চিমবঙ্গের এই নতুন পণ্যগুলো GI ট্যাগ পেয়ে রাজ্যের মোট সংখ্যা ৩৯-এ পৌঁছেছে। নীচে প্রত্যেকটির বিস্তারিত তথ্য:

  1. নলেন গুড়ের সন্দেশ: তাজা ছানা এবং খেজুর গুড় দিয়ে তৈরি, ক্যারামেলের মতো স্বাদ এবং সোনালি রঙ। বাংলার শীতকালীন মিষ্টি ঐতিহ্যের প্রতীক।
  2. বারুইপুরের পেয়ারা: গোলাকার, হলুদ চামড়া এবং সাদা নরম মাংস সহ মিষ্টি ফল, পেঁপে-নাশপাতির মিশ্রণ স্বাদ। বারুইপুরের কৃষি পরিবেশের ফল।
  3. কামারপুকুরের সাদা বোঁদে: সাদা রঙের শুকনো মিষ্টি, গরমেও ৫-৭ দিন স্থায়ী। শ্রীরামকৃষ্ণের প্রিয়, কামারপুকুরের সাংস্কৃতিক গুরুত্ব।
  4. মুর্শিদাবাদের ছানাবড়া: ছানার মিষ্টি সামান্য পোড়া ক্রাস্ট সহ, অনন্য টেক্সচার। উপহার হিসেবে জনপ্রিয়।
  5. বিষ্ণুপুরের মতিচুরের লাড্ডু: বেসনের ছোট মুক্তো দিয়ে তৈরি, চিনির সিরাপে ভেজানো। মল্ল রাজাদের দ্বারা উন্নয়িত, ধর্মীয় গুরুত্ব।
  6. রাঁধুনিপাগল চাল: সুগন্ধী, মিষ্টি স্বাদের ছোট দানার চাল, মুখে গলে যায়। রাহর এবং গাঙ্গেয় সমতলে চাষ।
  7. মালদার নিস্তারি সিল্ক সুতো: সূক্ষ্ম, টেকসই এবং চকচকে সিল্ক, ঐতিহ্যবাহী বুননে ব্যবহার। মালদার সিল্ক উৎপাদনের ঐতিহ্য।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ)

পশ্চিমবঙ্গে কতগুলো GI ট্যাগ আছে?

২০২৫ সাল পর্যন্ত ৩৯টি।

ভারতের প্রথম GI ট্যাগ কোন পণ্যের?

দার্জিলিং চা (২০০৪)।

GI ট্যাগ কীভাবে পণ্যকে সাহায্য করে?

এটি নকল থেকে রক্ষা করে এবং বাজার মূল্য বাড়ায়।

যদি তোমার কোনো প্রশ্ন থাকে, কমেন্ট করো। এই পোস্ট শেয়ার করে অন্যদের সাহায্য করো। ধন্যবাদ!

Aftab Rahaman
Aftab Rahaman

I'm Aftab Rahaman, The Founder Of This Blog. My Goal is To Share Accurate and Valuable Information To Make Life Easier, With The Support of a Team Of Experts.

Articles: 1903