শেয়ার মার্কেট কী?
শেয়ার মার্কেট, অথবা স্টক মার্কেট, এটি একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে জনসাধারণের কাছে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলির শেয়ার কেনা-বেচা হয়। ভারতে, দুটি প্রধান স্টক এক্সচেঞ্জ রয়েছে: বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ (বিএসই) এবং ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ (এনএসই)। এটি বিনিয়োগকারীদের কোম্পানির অংশীদার হওয়ার সুযোগ দেয়, যার মাধ্যমে তারা ডিভিডেন্ড এবং শেয়ার মূল্য বৃদ্ধি থেকে লাভ করতে পারে।
ভারতীয় প্রেক্ষাপট
ভারতের শেয়ার বাজারের ইতিহাস ১৮৭৫ সালে বিএসই-এর প্রতিষ্ঠার সাথে শুরু, যা ১৫০ বছরেরও বেশি পুরনো। এনএসই ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এখন ট্রেডিং ভলিউমে সবচেয়ে বড়। এনএসই-তে ২,৬৯৭ ডোমেস্টিক কোম্পানি তালিকাভুক্ত, এবং ভারতীয় এক্সচেঞ্জগুলি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি আইপিওয়ের জন্য পরিচিত।
Also Read – শেয়ার বাজারে সর্বনিম্ন কত টাকা বিনিয়োগ করা যায়
বিনিয়োগ এবং ঝুঁকি
শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করতে হলে ডিম্যাট এবং ট্রেডিং অ্যাকাউন্ট খোলা প্রয়োজন, এবং একটি বিশ্বস্ত ব্রোকার নির্বাচন করা উচিত। যদিও উচ্চ ফেরতের সম্ভাবনা রয়েছে, শেয়ার মূল্যের অস্থিরতা ঝুঁকি তৈরি করে। ডাইভার্সিফিকেশন এবং দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ সফলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
শেয়ার মার্কেটের সংজ্ঞা এবং গুরুত্ব
শেয়ার মার্কেট, যা স্টক মার্কেট বা পুঁজি বাজার নামেও পরিচিত, এটি একটি বাজার যেখানে জনসাধারণের কাছে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলির শেয়ার কেনা-বেচা হয়। এটি কোম্পানিগুলিকে অর্থ সংগ্রহ করতে সাহায্য করে, যা তারা ব্যবসা বিস্তার, নতুন প্রকল্প, বা ঋণ পরিশোধের জন্য ব্যবহার করে। বিনিয়োগকারীদের জন্য, এটি কোম্পানির অংশীদার হওয়ার সুযোগ দেয়, যার মাধ্যমে তারা ডিভিডেন্ড (লাভের অংশ) এবং শেয়ার মূল্য বৃদ্ধি থেকে লাভ করতে পারে।
ভারতে, শেয়ার মার্কেট দুটি প্রধান স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে পরিচালিত হয়: বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ (বিএসই) এবং ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ (এনএসই)। বিএসই ১৮৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যা বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো স্টক এক্সচেঞ্জগুলির মধ্যে একটি, আর এনএসই ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এখন ট্রেডিং ভলিউমে সবচেয়ে বড়।
ভারতীয় শেয়ার মার্কেটের ইতিহাস
ভারতের শেয়ার বাজারের ইতিহাস ১৮৭৫ সালে বিএসই-এর প্রতিষ্ঠার সাথে শুরু, যা ১৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করে আসছে। এটি প্রথমে ম্যানুয়াল ট্রেডিং সিস্টেমে পরিচালিত হতো, কিন্তু সময়ের সাথে সাথে ইলেকট্রনিক ট্রেডিং প্রবর্তন হয়। ১৯৯২ সালে এনএসই-এর প্রতিষ্ঠা ভারতীয় শেয়ার মার্কেটে একটি নতুন যুগের শুরু করেছিল, যা সম্পূর্ণ ইলেকট্রনিক ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম নিয়ে এসেছিল। এনএসই এখন বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম স্টক এক্সচেঞ্জ, ইকুইটি ভলিউমের দিক থেকে।
শেয়ার মার্কেট কীভাবে কাজ করে?
শেয়ার মার্কেটে কোম্পানিগুলি তাদের ব্যবসা বিস্তার করতে বা অন্যান্য উদ্দেশ্যে অর্থ সংগ্রহ করতে শেয়ার জারি করে। এই প্রক্রিয়া দুটি পর্যায়ে বিভক্ত:
- প্রাথমিক বাজার (Primary Market): এখানে কোম্পানি নতুন শেয়ার জারি করে, যা প্রায়শই আইপিও (Initial Public Offering) বা এফপিও (Follow-on Public Offering) হিসেবে পরিচিত। বিনিয়োগকারীরা সরাসরি কোম্পানি থেকে শেয়ার ক্রয় করে।
- দ্বিতীয় বাজার (Secondary Market): এখানে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় হয়, যা স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে পরিচালিত হয়।
উদাহরণস্বরূপ, ধরা যাক একটি কোম্পানি ১০০ টি শেয়ার জারি করেছে। আপনি যদি ১ টি শেয়ার কিনেন, তাহলে আপনি সেই কোম্পানির ১% অংশীদার হবেন। পরবর্তীতে, আপনি এই শেয়ারটি অন্য কোনো বিনিয়োগকারীকে বিক্রি করতে পারেন, যা দ্বিতীয় বাজারে ঘটে।
প্রধান খেলোয়াড় এবং নিয়ন্ত্রণ
ভারতীয় শেয়ার মার্কেটে কিছু গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় রয়েছে:
- স্টক এক্সচেঞ্জ: বিএসই এবং এনএসই, যা শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের প্ল্যাটফর্ম প্রদান করে।
- নিয়ন্ত্রক: সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া (সেবি) শেয়ার বাজারের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে, যা নিশ্চিত করে যে সব কার্যক্রম নিয়মিত এবং স্বচ্ছ।
- বিনিয়োগকারী: খুচরা বিনিয়োগকারী (রিটেইল ইনভেস্টর) এবং পেশাদার বিনিয়োগকারী (ইনস্টিটিউশনাল ইনভেস্টর, যেমন মিউচুয়াল ফান্ড, ব্যাংক)।
- ব্রোকার: বিনিয়োগকারীদের পক্ষে শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় করে, যেমন গ্রো, অ্যাঞ্জেল ওয়ান, 5পাইসা।
গুরুত্বপূর্ণ শব্দাবলী এবং ধারণা
শেয়ার মার্কেট সম্পর্কে জানতে গেলে, নিম্নলিখিত শব্দাবলী জানা প্রয়োজন:
- শেয়ার/স্টক: কোম্পানির অংশীদারত্বের প্রতিনিধিত্ব করে।
- সেন্সেক্স: বিএসই-এর শীর্ষ 30 কোম্পানির শেয়ারের একটি সূচক, যা বাজারের পারফরম্যান্স পরিমাপ করে।
- নিফটি: এনএসই-এর শীর্ষ 50 কোম্পানির শেয়ারের একটি সূচক।
- ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট: ইলেকট্রনিক ফর্ম্যাটে শেয়ার রাখার জন্য একটি অ্যাকাউন্ট, যা শেয়ার রাখা এবং লেনদেন সহজ করে।
- ট্রেডিং অ্যাকাউন্ট: শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় করতে ব্যবহৃত অ্যাকাউন্ট।
- আইপিও (IPO): একটি কোম্পানির প্রথমবারের মতো শেয়ার জনসাধারণের কাছে জারি করা।
- বুল মার্কেট: শেয়ার মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার সময়কাল, যা অর্থনৈতিক বৃদ্ধির সঙ্গে যুক্ত।
- বিয়ার মার্কেট: শেয়ার মূল্য হ্রাস পাওয়ার সময়কাল, যা অর্থনৈতিক ধীরতার সঙ্গে যুক্ত।
বিনিয়োগ প্রক্রিয়া
শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করতে হলে নিম্নলিখিত ধাপগুলি অনুসরণ করতে হয়:
- ডিম্যাট এবং ট্রেডিং অ্যাকাউন্ট খোলা: ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট শেয়ার রাখার জন্য, আর ট্রেডিং অ্যাকাউন্ট শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য।
- বিশ্বস্ত ব্রোকার নির্বাচন: যেমন গ্রো (Stock Market Basics – Learn Share Market Basics in India), অ্যাঞ্জেল ওয়ান, 5পাইসা।
- শেয়ার গবেষণা: কোম্পানির ফান্ডামেন্টালস (মুনাফা, রাজস্ব) এবং টেকনিকাল অ্যানালিসিস দেখুন।
- অর্ডার দেওয়া: শেয়ার ক্রয় বা বিক্রয়ের জন্য অর্ডার দিন, যা ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।
ঝুঁকি এবং লাভ
শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগের মাধ্যমে উচ্চ ফেরত পাওয়া যেতে পারে, কিন্তু এটি ঝুঁকিপূর্ণও। শেয়ার মূল্য দ্রুত উঠতে পারে আবার নামতেও পারে, যা বাজারের অস্থিরতার কারণে ঘটে। গবেষণা সুপারিশ করে যে, ডাইভার্সিফিকেশন (বিভিন্ন ধরনের শেয়ারে বিনিয়োগ) এবং দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ সফলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। উদাহরণস্বরূপ, ইতিহাস বলে যে স্টক মার্কেট প্রায়শই প্রতি বছর ১০% ফেরত দেয়, কিন্তু এটি সবসময় নিশ্চিত নয়।
সাম্প্রতিক ট্রেন্ড এবং পরিসংখ্যান
ভারতীয় শেয়ার মার্কেটের বর্তমান অবস্থা নিম্নলিখিত পরিসংখ্যানে প্রতিফলিত:
পরিসংখ্যান | মান |
---|---|
এনএসই-তে তালিকাভুক্ত কোম্পানি | ২,৬৯৭ |
বিএসই-এর বয়স | ১৫০ বছর |
আইপিও সংখ্যা (বিশ্বে সবচেয়ে বেশি) | এনএসই এবং বিএসই |
এছাড়াও, ভারতীয় শেয়ার মার্কেটের মোট মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন ৪.৫২ ট্রিলিয়ন ডলার (আপ্রিল ৯, ২০২৫-এর মতো), যা অর্থনৈতিক বৃদ্ধির একটি নির্দেশক।
গ্রাফিক্স এবং ইমেজ সাজেশন
আর্টিকেলটি আরও আকর্ষণীয় এবং বোঝার সহজতা বাড়াতে নিম্নলিখিত গ্রাফিক্স এবং ইমেজ অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে:
- একটি টাইমলাইন চার্ট, যা বিএসই এবং এনএসই-এর ইতিহাস দেখাবে।
- একটি ডায়াগ্রাম, যা প্রাথমিক এবং দ্বিতীয় বাজারের মধ্যে পার্থক্য বোঝাবে।
- বিএসই এবং এনএসই-এর ভবনের ছবি, যা পাঠকদের ভারতীয় শেয়ার মার্কেটের শারীরিক উপস্থিতি বোঝাতে সাহায্য করবে।
- একটি ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মের স্ক্রিনশট, যা অর্ডার দেওয়ার প্রক্রিয়া দেখাবে।
- সেন্সেক্স এবং নিফটির পারফরম্যান্স দেখানো একটি গ্রাফ, যা বাজারের ট্রেন্ড বোঝাতে সাহায্য করবে।