কৃষিকাজ কী | ভারতীয় কৃষির বৈশিষ্ট্য গুলি কি কি

কৃষিকাজ কী

Join Telegram

Table of Contents

কৃষিকাজ কী : জমি থেকে ফসল উৎপাদন হল কৃষিকাজ। কিন্তু ফসল উৎপাদনের সাথে সাথে অন্যান্য কয়েকটি অর্থনৈতিক কাজকে কৃষির অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। E.W Zimmermann-এর মতে স্থায়ীভাবে বসবাস করে মানুষ যখন উদ্ভিদ ও প্রাণীর স্বাভাবিক প্রজনন ঘটিয়ে উদ্ভিদ ও প্রাণীজ দ্রব্য উৎপাদন করে তখন তা কৃষিকাজ। অতএব ফসল উৎপাদন, পশুপালন, মাছচাষ, ডেয়ারি ও ভারতীয় পোলট্রি, রেশম ও পশম উৎপাদন, বনসৃজন কৃষির অন্তর্ভুক্ত।

ভারতীয় কৃষির বৈশিষ্ট্য গুলি কি কি

ভারতীয় কৃষির বৈশিষ্ট্য : (1) জীবিকাসত্তাভিত্তিক
কৃষি : দু-একটি অঞ্চল বাদ দিলে এখনো ভারতের অধিকাংশ প্রান্তে সেই প্রাচীন পদ্ধতিতে চাষবাস হয়। চাষি ফসল উৎপাদন করে তার পরিবারের জন্য। ফসলের যে অতি সামান্য উদ্বৃত্ত হয় তা স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে।

(2) কৃষির উপর জনসংখ্যার চাপ : ভারতে জনসংখ্যা অত্যন্ত বেশি এবং এই জনসংখ্যার বেশিরভাগ অংশই কৃষিনির্ভর। কৃষি ছাড়া অন্যান্য অর্থনীতি সেইভাবে উন্নত না হওয়ায় জনসংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে কৃষির উপর চাপ বেড়েই চলেছে। ফলে সৃষ্টি হচ্ছে বেকারত্ব।

(3) কৃষিতে পশুশক্তির প্রাধান্য : জমিতে লাঙল দেওয়া, সেচকাজ, ফসল ঝাড়াই, পরিবহণ প্রভৃতি কাজে গোরু, মোষ ব্যবহার করা হয়। কৃষিকাজে যন্ত্রের ব্যবহার খুবই কম।

(4) মৌসুমি বৃষ্টির উপর নির্ভরতা : মৌসুমি বৃষ্টির উপর নির্ভরতা আমাদের দেশের কৃষির প্রধান বৈশিষ্ট্য। যে বছর মৌসুমি বায়ু ভালো বৃষ্টি ঘটায় সে বছর ভালো ফসল হয়। যে বছর কম বৃষ্টি হয় সে বছর উৎপাদন মার খায়। মৌসুমি বায়ুর খামখেয়ালিপনায় কৃষিকাজ ব্যাহত হয়।

(5) জলসেচের ব্যবহার : এখানও পর্যন্ত ভারতের মোট কৃষিজমির 1/3 ভাগ সেচের অন্তর্ভুক্ত। ফলে 2/3 ভাগ জমিতে বছরে মাত্র। একবার ফসল হয়। যে বছর বৃষ্টি কম হয় সেচের অভাবে ফসল উৎপাদন দারুণভাবে ব্যাহত হয়।

(6) ক্ষুদ্রাকৃতি জমিজোত : বংশপরম্পরায় জমি ভাগ হয়ে ছোটো হতে হতে এত ছোটো হয়েছে যে, তাতে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার সম্ভব নয়। জমি ভাগ হওয়ার কারণে জমি অপচয়ও হয়।

(7) কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার : এগুলির ব্যবহার ভারতীয় কৃষিতে বহুল বেড়েছে। কিন্তু অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের কারণে জমির উর্বরতা যেমন কমেছে, তেমনি পরিবেশগত সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এই কারণেই জৈব সার ও জৈব কীটনাশকের ব্যবহার বাড়ছে।

Join Telegram

(৪) খাদ্যশস্যের প্রাধান্য : এদেশের প্রচুর লোকের খাদ্যের জোগানের জন্য খাদ্যশস্য উৎপাদনের প্রাধান্যই বেশি, বাণিজ্যিক শস্য কম। 2/3 ভাগ জমিই খাদ্যশস্য (ধান, গম, মিলেট ইত্যাদি) উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়।

(9) পশুখাদ্যের অভাব : যদিও ভারতে গৃহপালিত পশুর সংখ্যা পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি তবুও পশুখাদ্য এদেশে তেমনভাবে চাষ হয় না। পশুপালন চারণভূমি নির্ভর। পশুখাদ্যের অভাবে দুধ, মাংস ইত্যাদির উৎপাদন কম।

(10) বহুশস্যের উৎপাদন : সুবিশাল দেশের বিভিন্ন অংশে জলবায়ু, ভূ-প্রকৃতি, মৃত্তিকা ইত্যাদির তারতম্যের কারণে বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন ফসলের চাষ হয়। পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে এত ধরনের ফসলের চাষ হয় না।

[su_note note_color=”#f0ef2b”]ভারতীয় কৃষির কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক: সবরকম কৃষিজ ফসল মিলিয়ে কৃষি উৎপাদনে ভারত দ্বিতীয় (চিন প্রথম)। বহির্বাণিজ্যে কৃষিদ্রব্যের ভূমিকা কম। ● স্বাধীনতার পর থেকে প্রায় সব ফসলের উৎপাদন বেড়েছে। মোট কৃষিজমির 35% সেচের আওতাভুক্ত।[/su_note]

[su_note note_color=”#f0ef2b”]জীবিকাসত্তাভিত্তিক কৃষি: কৃষক তার নিজ বা পরিবারের খাদ্যের প্রয়োজন মেটানোর উদ্দেশ্যে যে কৃষিকাজ করে তাকেই জীবিকাসত্তাভিত্তিক কৃষি বলে। ভারত সমেত দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় এই চাষ পদ্ধতির প্রাধান্য বেশি।[/su_note]

Join Telegram

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *