5,327 Members Now! 🎉
🔥 Live Job Alerts!
Join Instant Updates →
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

জাতীয় শিক্ষা পরিষদ এর ইতিহাস আর বিশ্লেষণ

Team KaliKolom
Published: Jul 3, 2021

 ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ বড়োলাট লর্ড কার্জন কর্তৃক বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে স্বদেশি আন্দোলন অত্যন্ত সক্রিয় হয়ে ওঠে। জাতীয় নেতৃবৃন্দ ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘গোলদিঘির গোলামখানা’ বলে বাঙ্গা করে ছাত্রদের এই প্রতিষ্ঠান ত্যাগ করার আহ্বান জানান। কারণ, গোলদিঘির কাছাকাছি প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয় শুধু ব্রিটিশদের অফিস-আদালতের জন্য কেরানি তৈরি করত। বিদেশি শিক্ষানীতির ত্রুটি ও সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে সচেতন দেশীয় শিক্ষাদরদি ব্যক্তিরা এই সময় বিদেশি শিক্ষাব্যবস্থার বিকল্প হিসেবে স্বদেশি ধাঁচের একটি জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ নেন। সম্ভবত (প্রসন্নকুমার ঠাকুর সর্বপ্রথম ‘জাতীয় শিক্ষা’ কথাটি ব্যবহার করেন।)

স্বদেশি আন্দোলনের সময় বাংলায় জাতীয় শিক্ষা আন্দোলন শক্তিশালী হয়ে ওঠে। সর্বপ্রথম রংপুরে জাতীয় বিদ্যালয় (৮ নভেম্বর, ১৯০৫ খ্রি.) স্থাপিত হয়। ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ১৬ নভেম্বর পার্ক স্ট্রিটে প্রায় ১৫০০ প্রতিনিধি নিয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় ব্রিটিশ সরকারের শিক্ষাব্যবস্থার বিরোধিতা করে স্বদেশি শিক্ষার প্রসারের উদ্দেশ্যে ‘জাতীয় শিক্ষা পরিষদ‘ গঠনের প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়।

এরপর সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সভাপতিত্বে ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দের ১১ মার্চ ৯২ জন সদস্য নিয়ে ‘জাতীয় শিক্ষা পরিষদ’ গড়ে ওঠে। জাতীয় শিক্ষা পরিষদ প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্দেশ্যগুলি ছিল—

জাতীয় আদর্শ অনুসারে সাহিত্য, বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষা দান করা, শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেশসেবার মনোভাব জাগিয়ে তোলা, নৈতিক শিক্ষা দান করা, মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষার প্রসার ঘটানো প্রভৃতি।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, অরবিন্দ ঘোষ, রাজা সুবোধচন্দ্র মল্লিক, গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, হীরেন্দ্রনাথ দত্ত, ব্রজেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরি প্রমুখ জাতীয় শিক্ষা পরিষদের সক্রিয় পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। জাতীয় শিক্ষার উদ্দেশ্যে ব্রজেন্দ্রকিশোর

রায়চৌধুরি ৫ লক্ষ টাকা, সূর্যকান্ত আচার্যচৌধুরি ২.৫ লক্ষ টাকা এবং সুবোধচন্দ্র মল্লিক ১ লক্ষ টাকা দান করেন। এই পরিষদের অধীনে ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে (১৫ আগস্ট) ‘বেঙ্গল ন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ’ প্রতিষ্ঠিত হয়। এর অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন বিপ্লবী অরবিন্দ ঘোষ। রাধাকুমুদ মুখোপাধ্যায়, বিনয়কুমার সরকার, সখারাম গণেশ দেউসকর, ধর্মানন্দ কোশান্বী প্রমুখ এখানে শিক্ষাদান করেছেন।

এই পরিষদের প্রেরণায় বাংলার বিভিন্ন স্থানে জাতীয় বিদ্যালয় গড়ে ওঠে। বিভিন্ন ধনবান ব্যক্তির আর্থিক সহায়তায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি নিযুক্ত হন রাসবিহারী ঘোষ। ব্রিটিশ সরকার বাংলার জাতীয় শিক্ষার প্রসারকে সুনজরে দেখেনি। জাতীয় শিক্ষা গ্রহণকারী ছাত্রদের সরকারি চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল না। আর্থিক সংকট বাধা হয়ে দাঁড়ালেও জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলার বিষয়ে যে উদ্যোগ দেখা দিয়েছিল তার গুরুত্ব মোটেই কম নয়।

বেঙ্গল টেক নিক্যাল ইন্সটিটিউট

স্বদেশি আন্দোলনের যুগে যে-সকল মনীষী বাংলায় কারিগরি শিক্ষার প্রসারে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন তাঁদের মধ্যে অগ্রগণ্য হলেন তারকনাথ পালিত। তাঁর প্রচেষ্টায় ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে (২৫ জুলাই) কলকাতায় ‘বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট’ নামে একটি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয়।

বেঙ্গল ন্যাশনাল কলেজ ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট-এর সঙ্গে মিলে যায়। এখানে কলাবিভাগের পাশাপাশি পদার্থবিদ্যা, রসায়ন প্রযুক্তি, শিল্প প্রযুক্তি প্রভৃতি বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষাদানের ব্যবস্থা হয়। বাংলার বহু শিক্ষিত যুবক এখান থেকে কারিগরিবিদ্যা লাভ করে স্বনির্ভর ও স্বাবলম্বী হয়ে ওঠে। এই প্রতিষ্ঠান ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে যাদবপুরে স্থানান্তরিত হয় এবং ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে এর নতুন নাম হয় ‘কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি বা (C.E.T.)

এখানকার ছাত্রছাত্রীরা ‘টেক’ নামে একটি জার্নাল প্রকাশ করেন। এই জার্নালের প্রথম সংখ্যাটি তাঁরা স্বদেশি আন্দোলনের যুগের সেই সকল আত্মত্যাগীদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেন, যাঁরা জাতীয় শিক্ষার স্বপ্ন দেখেছিলেন। ভারতের স্বাধীনতা লাভের পরবর্তীকালে ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে এটি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়। এখান থেকে পাস করে বহু বাঙালি যুবক কারিগরি বিদ্যার বিভিন্ন শাখায় নিজেদের সুপ্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়। তাদের উদ্যোগে বাংলায় বহু কারিগরি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে থাকে।

About the Author

   Aftab Rahaman

AFTAB RAHAMAN

Aftab Rahaman is a seasoned education blogger and the founder of KaliKolom.com, India’s premier Bengali general knowledge blog. With over 10 years researching current affairs, history, and competitive exam prep, he delivers in‑depth, up‑to‑date articles that help students and lifelong learners succeed. His expert insights and data‑driven guides make KaliKolom.com an authoritative resource in Bengali education.

Unlock FREE Subject-Wise PDFs Instantly

Join Our Telegram Channel for Daily Updates!

      JOIN NOW ➔

Recent Posts

See All →