ভারতে বনভূমি সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা:
কোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অরণ্যের বা বনভূমির ভূমিকা অনস্বীকার্য। বর্তমানে দেশের মোট ভৌগোলিক আয়তনের শতকরা মাত্র ভারতের বনভূমির পরিমাণ 21.02 ভাগ (2021) স্থানে বনভূমি আছে তারমধ্যে ভারতের সবচেয়ে কম বনভূমি দেখা যায় হরিয়ানা রাজ্য এবং সবচেয়ে বেশি বনভূমি দেখা যায় মধ্যপ্রদেশ। তবে বিজ্ঞানীদের মতে, দেশের অন্তত এক-তৃতীয়াংশ স্থানে বনভূমি থাকা প্রয়োজন। বনভূমি সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তাগুলি এবং বনভূমি সংরক্ষণের প্রকার ভেদ গুলি হল —
1] পরিবেশের ভারসাম্য করা:
বর্তমানে পরিবেশদূষণের মাত্রা দ্রুতহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বনভূমি সংরক্ষণ ও নতুন বনভূমি সৃষ্টি করলে পরিবেশ দূষণের মাত্রা হ্রাস পাবে ও পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকবে।
[2] জলবায়ুর পরিবর্তন রোধ করা:
বনভূমি বায়ুর আর্দ্রতাকে বিশেষভাবে প্রভাডারতে বনভূমি সংরক্ষণের প্রভাবিত করে যা বৃষ্টিপাতের পরিমাণ নির্ধারণে ও নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। বর্তমানে বায়ুতে দূষিত পদার্থ বৃদ্ধি পাওয়াতে বায়ুমণ্ডলের উন্নতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটাচ্ছে। এই ভয়াবহ ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে হলে বনভূমি সংরক্ষণ ভীষণ প্রয়োজন।
[3] খরা ও ভূমিক্ষয় রোধ:
বনভূমির অভাবে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে যা পরোক্ষভাবে খরার সৃষ্টি করছে। এ ছাড়া, বনভূমি না থাকায় মৃত্তিকার আস্তরণ আলগা হয়ে মৃত্তিকা ক্ষয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ক্ষরা ও মৃত্তিকা ক্ষয় রোধ করতে বনভূমি সংরক্ষণ প্রয়োজন।
[4] মরুভূমির গ্লসার রোধ করা:
বনভূমির উপস্থিতি মৃত্তিকা ক্ষয় বন্ধ করে মরুভূমির প্রসার রোধ করতে সাহায্য করে।
[5] অরণ্যজাত সম্পদের জোগান অব্যাহত রাখা:
বনভূমি থেকে আমরা নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন জিনিস, যেমন—কাঠ ও অন্যান্য উপজাত দ্রব্য (যেমন—মধু, ধূপ, ভেষজ উদ্ভিদ প্রভৃতি) পেয়ে থাকি। এইসব সম্পদের যোগান বজায় রাখার জন্য বনভূমি সংরক্ষণ করা উচিত।