5,327 Members Now! 🎉
🔥 Live Job Alerts!
Join Instant Updates →
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

নারীর সম্পত্তির অধিকার ভারতে

Team KaliKolom
Published: Jul 14, 2021

 প্রাচীন ভারতের অধিকাংশ শাস্ত্রকার নারীর অর্থনৈতিক অধিকারের প্রশ্নে নানা বিধিনিষেধের কথা বলেছেন। মনু ও অন্যান্য শাস্ত্রকারগণ নারীকে জীবনের প্রতিটি স্তরেই পুরুষের অধীনে থাকার বিধান দিয়েছেন। সমাজে নারীর এরূপ মর্যাদা হ্রাসের পরিস্থিতিতে তাদের অর্থনৈতিক অধিকারের বিষয়টি ছিল কল্পনাতীত। ড. সুকুমারী ভট্টাচার্য বলেছেন যে, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ও মর্যাদা লাভে বঞ্চিত হয়ে নারীসমাজ তখন এক অসম্মানিত সম্প্রদায় হিসেবে জীবন কাটাতে বাধ্য হতেন।

স্ত্রীধন :- 1অবশ্য অর্থনৈতিক অধিকারের নানা সংকোচন বা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও প্রাচীন যুগের নারী কিছু কিছু অর্থনৈতিক অধিকার ভোগ করত। তারা কিছু সম্পত্তিও রাখার অধিকার পেত। নারীর এই সম্পত্তি ‘স্ত্রীধন’ (Streedhan) নামে পরিচিত। [2] মনু, যাজ্ঞবল্ক্য, নারদ, বৃহস্পতি, কাত্যায়ন প্রমুখ শাস্ত্রকার প্রাচীন যুগের নারীর বিভিন্ন সম্পত্তি বা স্ত্রীধনের উল্লেখ করেছেন। স্ত্রীধনের মধ্যে অন্যতম ছিল নারীর অলংকার ও পোশাক পরিচ্ছদ। বিভিন্ন স্মৃতিশাস্ত্রে বলা হয়েছে যে, পুত্রহীনা বিধবা তাঁর মৃত স্বামীর যাবতীয় সম্পত্তির অধিকারী হবেন। নারী বিবাহের আগে ও পরে যা কিছু উপহার পেতেন তা সবই তাঁর নিজের সম্পত্তি বা স্ত্রীধন হিসেবে গণ্য হত। নারীর মালিকানাভুক্ত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি নারী নিজের ইচ্ছামতো দান বা বিক্রি করতে পারত।

বিভিন্ন প্রকার স্ত্রীধন

প্রাচীন বিভিন্ন সাহিত্য থেকে নারীর নিজস্ব সম্পত্তি অর্থাৎ স্ত্রীধনের পরিমাণ সম্পর্কে জানা যায়। বিভিন্ন স্মৃতিশাস্ত্রকার তাঁদের আলোচনায় সে যুগের বিভিন্ন স্ত্রীধনের উল্লেখ করেছেন।

গুরুত্বপূর্ণ ছয় প্রকার স্ত্রীধন :- মনুসংহিতায় ও যাজ্ঞবল্ক্যস্মৃতিতে গুরুত্বপূর্ণ ছয় প্রকার স্ত্রীধনের উল্লেখ রয়েছে। এগুলি হল—[1] অধ্যগ্নি, [2] অধ্যবাহনিক, [3] প্রীতিদত্ত, [4] পিতৃদত্ত, [5] মাতৃদত্ত এবং [6] ভ্রাতৃদত্ত। বিবাহকালে আগুনকে সাক্ষী রেখে নারীকে প্রদত্ত সম্পদ ‘অধ্যগ্নি’ নামে পরিচিত। পতিগৃহে যাত্রাকালে নারী যে সম্পদ উপহার হিসেবে পেত তা ‘অধ্যবাহনিক’ নামে পরিচিত। আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবদের কাছ থেকে নারী যে প্রীতির দান লাভ করত তাকে বলা হত ‘প্রীতিদত্ত’। পিতা, মাতা ও ভ্রাতার দেওয়া উপহার যথাক্রমে ‘পিতৃদত্ত’, ‘মাতৃদত্ত’ ও ‘ভ্রাতৃদত্ত’ নামে পরিচিত ছিল। [2] আরও কয়েকটি স্ত্রীধন :- এগুলি ছাড়াও কাত্যায়নস্মৃতিতে আরও কয়েকটি স্ত্রীধনের উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলি হল—[1] সোদায়ক থাৎ কুমারী অবস্থায় প্রাপ্ত উপহার, [2] অম্বাধেয় অর্থাৎ পিতা-মাতা, স্বামী ও আত্মীয়দের কাছ থেকে প্রাপ্ত উপহার, [3] শুল্ক অর্থাৎ বিবাহের সময় পাত্রপক্ষ কর্তৃক কন্যাকে দেয় মূল্য প্রভৃতি। [2] অর্থশাস্ত্রে উল্লিখিত স্ত্রীধন :- অর্থশাস্ত্রে চার প্রকার স্ত্রীধনের উল্লেখ আছে। এগুলি হল—[1] শুল্ক’, [2] ‘অধিবেদনিক’, [3] ‘অন্বাধেয়’ এবং [4] ‘বন্ধুদত্ত’।

সীমাবদ্ধতা

নারী সম্পত্তি বা স্ত্রীধন রাখার অধিকারী হলেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই অধিকারে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। 1.স্ত্রীধনে নারীর অধিকার হ্রাস:- কাত্যায়নস্মৃতি এবং অর্থশাস্ত্রে বলা হয়েছে যে, বিবাহিতা নারী ২০০০ পণের (তৎকালীন রৌপ্যমুদ্রা) বেশি নিজের কাছে রাখার অধিকারিণী নন। কাত্যায়ন স্বামীর কাছ থেকে স্ত্রীর প্রাপ্ত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তিকে স্ত্রীধন হিসেবে মেনে নিলেও তিনি নারীর নিজের উপার্জিত অর্থকে স্ত্রীধন হিসেবে মেনে নেননি। পারিবারিক বা পৈত্রিক সম্পত্তিতেও নারীর কোনো অধিকার ছিল না। 2. স্ত্রীধনের ওপর স্বামীর অধিকার :- স্ত্রীধনের উপর স্বামীরও কিছু কিছু অধিকার ছিল। স্ত্রী যথেচ্ছভাবে নিজের সম্পত্তি দান করতে চাইলে স্বামী তাতে বাধা দিতে পারত। স্বামীর অত্যন্ত প্রয়োজনের সময় স্ত্রীর সম্পত্তি সে নিজে গ্রহণ ও বিক্রি করতে পারত। তা ছাড়া স্ত্রীর কাছে ২০০০ পণের বেশি অর্থ জমে গেলে অতিরিক্ত অর্থ তার স্বামীর হেফাজতে রক্ষিত হত।

উত্তরাধিকার :- 1. স্ত্রীধনের ওপর পিতা, স্বামী বা পুত্রের কোনো অধিকার ছিল না বলে যাজ্ঞবল্ক্য উল্লেখ করেছেন। 2. তবে স্ত্রীর মৃত্যুর পর তার মেয়েরা মায়ের সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবে বলে নারদস্মৃতিতে বলা হয়েছে। 3. কাত্যায়নস্মৃতিতে বলা হয়েছে যে, স্ত্রীর কন্যাসন্তান না থাকলে তার সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবে তার পুত্র। স্ত্রী নিঃসন্তান হলে মৃত স্ত্রীর সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবে তার স্বামী।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, প্রাচীন কালে যখন নারীর সার্বিক অধিকার নানাভাবে সংকুচিত হয়েছিল তখন তাদের বিধিবদ্ধ অর্থনৈতিক অধিকারভোগ কতটা বাস্তবায়িত হয়েছিল সেবিষয়ে সন্দেহের অবকাশ আছে। সমাজের উচ্চস্তরের নারীরা এবিষয়ে যতটা অধিকার ভোগ করতে পারত নিম্নস্তরের নারীরা তার অধিকাংশই ভোগ করতে পারত না। অবশ্য ড. এ. এল. বাসাম মনে করেন যে, সম্পত্তিতে নারীর অধিকার সংকুচিত হলেও অন্যান্য সভ্যতার তুলনায় ভারতীয় সভ্যতায় নারীর এই অধিকার অনেক বেশি ছিল।

 কোনো কোনো ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্তও খুঁজে পাওয়া যায়। প্রাচীন মিশরে নেফারতিতি এবং ক্লিওপেট্রার কথা এ প্রসঙ্গে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ভারতের মধ্যযুগের ইতিহাসেও এমন কয়েকজন নারীর কথা জানা যায় যাঁরা রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বিশেষ কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন সুলতান রাজিয়া, রানি দুর্গাবতী, নূরজাহান প্রমুখ। নারী হয়েও তাঁরা রাজনৈতিক কর্তৃত্বের বিষয়ে যে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছিলেন তা এককথায় অসাধারণ।

About the Author

   Aftab Rahaman

AFTAB RAHAMAN

Aftab Rahaman is a seasoned education blogger and the founder of KaliKolom.com, India’s premier Bengali general knowledge blog. With over 10 years researching current affairs, history, and competitive exam prep, he delivers in‑depth, up‑to‑date articles that help students and lifelong learners succeed. His expert insights and data‑driven guides make KaliKolom.com an authoritative resource in Bengali education.

Unlock FREE Subject-Wise PDFs Instantly

Join Our Telegram Channel for Daily Updates!

      JOIN NOW ➔

Recent Posts

See All →