WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কি ছিল



বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯২১ সালে পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। এর মূল উদ্দেশ্যগুলি ছিল নিম্নরূপ:



বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কি ছিল
  1. সাংস্কৃতিক সমন্বয় ও বিশ্বভ্রাতৃত্ব:
    রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস করতেন, শিক্ষার মাধ্যমে পূর্ব ও পশ্চিমের সংস্কৃতি, দর্শন ও জ্ঞানের সমন্বয় ঘটানো সম্ভব। বিশ্বভারতীকে তিনি “বিশ্বের সকল সংস্কৃতির মিলনক্ষেত্র” হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন, যেখানে বৈশ্বিক ভ্রাতৃত্ববোধ ও মানবতাবাদ প্রতিষ্ঠিত হবে।
  2. প্রকৃতিনির্ভর ও সৃজনশীল শিক্ষা:
    প্রথাগত শ্রেণীকক্ষের পরিবর্তে প্রকৃতির কোলে মুক্ত পরিবেশে শিক্ষাদানের উপর জোর দেওয়া হয়েছিল। রবীন্দ্রনাথের মতে, প্রকৃতির সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন এবং শিল্প-সাহিত্য-সংগীতের মাধ্যমে সৃজনশীলতা বিকাশ শিক্ষার অপরিহার্য অংশ।
  3. ভারতীয় ঐতিহ্য ও আধুনিকতার সমন্বয়:
    ভারতীয় সংস্কৃতি, দর্শন ও স্থানীয় জ্ঞানের গভীর অনুশীলনের পাশাপাশি আধুনিক বিজ্ঞান ও বিশ্বের অন্যান্য প্রগতিশীল চিন্তার সংমিশ্রণ ঘটানো হয়। এর লক্ষ্য ছিল ঔপনিবেশিক শিক্ষাব্যবস্থার বিকল্প হিসেবে স্বদেশী চেতনায় সমৃদ্ধ একটি শিক্ষাক্রম গড়ে তোলা।
  4. গ্রামীণ উন্নয়ন ও সমাজসেবা:
    বিশ্বভারতীর সঙ্গে “শ্রীনিকেতন” প্রকল্প যুক্ত ছিল, যার উদ্দেশ্য ছিল গ্রামীণ সমাজের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন। কৃষি, হস্তশিল্প ও স্থানীয় সম্পদ ব্যবহারের মাধ্যমে স্বাবলম্বী গ্রাম গঠনে এই উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
  5. শিক্ষাকে জীবনের সঙ্গে যুক্ত করা:
    রবীন্দ্রনাথের দর্শন অনুযায়ী, শিক্ষা কেবল পুঁথিগত বিদ্যা নয়—এটি জীবনদর্শন ও মানবিক মূল্যবোধের বিকাশের হাতিয়ার। বিশ্বভারতীতে শিক্ষার্থীরা শিল্প, সংগীত, নৃত্য ও হস্তকর্মের মাধ্যমে ব্যক্তিত্ব গঠনের সুযোগ পেত।
  6. আন্তর্জাতিকতাবাদ:
    বিশ্বভারতী “যেখানে বিশ্ব বিশ্বের ঘর হয়” (“Where the world makes a home in a single nest”)—এই আদর্শে পরিচালিত হয়। এটি বিশ্বজুড়ে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের জন্য একটি মুক্ত প্ল্যাটফর্ম হিসেবে গড়ে উঠেছিল, যেখানে বহুভাষা ও বহুসংস্কৃতির সহাবস্থান সম্ভব হয়।

মহত্ত্ব ও স্বীকৃতি:
১৯৫১ সালে বিশ্বভারতীকে “কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়”-এর মর্যাদা দেওয়া হয়। ২০০১ সালে ইউনেস্কো এটিকে “বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য” হিসাবে স্বীকৃতি দেয়। রবীন্দ্রনাথের এই প্রতিষ্ঠান আজও তার আদর্শে সমাজসেবা, শান্তি ও সৃজনশীল শিক্ষার আলো ছড়িয়ে চলেছে।

About the Author

Aftab Rahaman

AFTAB RAHAMAN

I am Aftab Rahaman, the founder of KaliKolom.com. For over 10 years, I have been writing simple and informative articles on current affairs, history, and competitive exam preparation for students. My goal is not just studying, but making the process of learning enjoyable. I hope my writing inspires you on your journey to knowledge.

📌 Follow me: