5,327 Members Now! 🎉
🔥 Live Job Alerts!
Join Instant Updates →
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

হরপ্পা সভ্যতার বৈশিষ্ট্যয – হরপ্পা সভ্যতার অবস্থান সময়কাল বৈশিষ্ট্য

Aftab Rahaman
Updated: Sep 26, 2021

হরপ্পা সভ্যতা প্রাচীন ভারত তথা বিশ্ব ইতিহাসের এক বিস্ময়কর অধ্যায়। এখানকার উন্নত রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, পয়ঃপ্রণালী, স্নানাগার, শস্যাগার, বিভিন্ন আধুনিক সামগ্রীর ব্যবহার, উন্নত স্বাস্থ্য সচেতনতা প্রভৃতি এই সভ্যতাকে শুধু প্রাচীন ভারতে নয়, সমগ্র বিশ্ব ইতিহাসে এক বিশিষ্টতা দান করেছে। এই নগর সভ্যতার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়। যেমনহরপ্পা সভ্যতার সূচনা ও অবলুপ্তি করে ঘটেছিল তা নিয়ে পণ্ডিতদের মধ্যে কিছু মতভেদ রয়েছে।

হরপ্পা সভ্যতার অবস্থান সময়কাল বৈশিষ্ট্য

(1) সূচনাকাল: ঐতিহাসিক ড. সি. জে. গ্যাড, ড. ফ্যারি প্রমুখ হরপ্পা সভ্যতার বিকাশকাল হিসেবে ৩,০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ২,৮০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দকে চিহ্নিত করেছেন। স্যার মর্টিমার হুইলার হরপ্পা সভ্যতার সূচনাকাল হিসেবে খ্রিস্টপূর্ব ২,৫০০ অব্দকে চিহ্নিত করেছেন। রমেশচন্দ্র মজুমদার, হেমচন্দ্র রায়চৌধুরী ও কালিকিঙ্কর দত্ত রচিত ‘An Advance History of India’-তে হরপ্পা সভ্যতার বিকাশকাল হিসেবে মোটামুটি ৩,৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দকে উল্লেখ করা হয়েছে। সুমের ও মহেন-জো-দারোতে প্রাপ্ত সিলমোহরের মধ্যে সাদৃশ্য লক্ষ করে স্যার জন মার্শাল অভিমত দিয়েছেন যে, হরপ্পা সভ্যতার বিকাশ ঘটেছিল ৩,২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ২,৭৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে। কেননা, সুমেরীয় সিলমোহরের তারিখ ৩,০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের বলে মনে করা হয়। সবদিক বিচার করে ৩,০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দকেই হরপ্পা সভ্যতার সূচনাকাল বলে মেনে নেওয়া হয়েছে। সমকালীন সুমেরীয়, মিশরীয়, আক্কাদীয়, মেসোপটেমীয়, ব্যাবিলনীয়, আসিরীয় প্রভৃতি সভ্যতার সঙ্গে হরপ্পা সভ্যতার যোগাযোগ ছিল।

(2) অবলুপ্তির কাল: ড. মটিমার হুইলার মনে করেন যে, বহিরাগত আর্যজাতির আক্রমণ হরপ্পা সভ্যতার পতনের একটি প্রধান কারণ ছিল। তাঁর মতে, ভারতে আর্যদের আগমনকাল ১৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ। সেই অনুসারে তিনি হরপ্পা সভ্যতার অবলুপ্তির কাল হিসেবে ১৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দকে চিহ্নিত করেছেন। অধিকাংশ পণ্ডিত এই অভিমত গ্রহণ করেছেন।

2. বিস্তার

প্রাচীন হরপ্পা সভ্যতা সিন্ধু নদের অববাহিকা অঞ্চল ছাড়াও বহুদূর বিস্তৃত ছিল। উত্তর-পশ্চিম ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে অন্তত ১৫০০টি কেন্দ্রে এই সভ্যতার

হরপ্পা সভ্যতা ফটো                হরপ্পা সভ্যতা বিস্তার

বিভিন্ন নিদর্শন মিলেছে। পৃথিবীর প্রাচীন সভ্যতাগুলির মধ্যে সর্ববৃহৎ এই হরপ্পা সভ্যতার আয়তন ছিল প্রায় সাড়ে ১২ লক্ষ বর্গকিলোমিটার। প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতার চেয়ে হরপ্পা সভ্যতার আয়তন অন্তত ২০ গুণ বেশি ছিল। এই সভ্যতা পশ্চিমে ইরান থেকে পূর্বে দিল্লির নিকটবর্তী আলমগিরপুর এবং উত্তরে জম্মুর নিকটবর্তী মান্ডা থেকে দক্ষিণে গোদাবরী নদীর তীরে দাইমাবাদ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। তবে এর সবগুলি কেন্দ্রেই উন্নত নগরজীবনের বিকাশ ঘটেনি।

3. প্রাগৈতিহাসিক যুগের সভ্যতা

হরপ্পা সভ্যতায় প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্য চালিয়ে বিভিন্ন মৃৎপাত্র, সিলমোহর প্রভৃতি পাওয়া গেছে। বিভিন্ন নিদর্শনের গায়ে লিপিও খোদাই করা আছে। কিন্তু এই লিপির পাঠোদ্ধার করা আজও পর্যন্ত সম্ভব হয়নি। এজন্য এই সভ্যতাকে ‘প্রাগৈতিহাসিক যুগের সভ্যতা‘ বলে চিহ্নিত করা হয়। লিখিত উপাদানের অভাবে পণ্ডিতগণ এই সভ্যতায় প্রাপ্ত বিভিন্ন হাতিয়ার, মৃৎপাত্র, মূর্তি, ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট প্রভৃতির ওপর ভিত্তি করে এখানকার ইতিহাস রচনা করেন।

4. তাম্র-প্রস্তর যুগের সভ্যতা

হরপ্পা সভ্যতায় মানুষ লোহার ব্যবহার জানত না। এখানকার বাসিন্দারা বিভিন্ন। হাতিয়ার ও অন্যান্য সরঞ্জাম তৈরির জন্য পাথর এবং তামা ব্যবহার করত। এজন্য এই সভ্যতাকে ‘তাম্র-প্রস্তর যুগের সভ্যতা‘ বলা হয়। পরবর্তীকালে এখানে তামার সঙ্গে টিন মিশিয়ে তৈরি ব্রোঞ্জের ব্যবহার শুরু হয়।

5. নদীমাতৃক সভ্যতা

পৃথিবীর বিভিন্ন প্রাচীন সভ্যতাগুলির মতো হরপ্পা সভ্যতাও নদীর তীরে গড়ে উঠেছিল। সিন্ধু-সহ পার্শ্ববর্তী অন্যান্য কয়েকটি নদীর বিস্তীর্ণ অববাহিকা অঞ্চলে এই সভ্যতার প্রসার ঘটেছিল। রাভি বা ইরাবতী, ঘর্ঘরা, শতদ্রু, ভোগাবর প্রভৃতি নদী ছাড়াও বিভিন্ন শাখানদী ও উপনদীর অববাহিকায় এই সভ্যতার প্রসার ঘটেছিল। এজন্য হরপ্পা সভ্যতাকে ‘নদীমাতৃক সভ্যতা’ বলা হয়।

6. হরপ্পা সভ্যতার নগর পরিকল্পনা

হরপ্পা সভ্যতা ছিল একটি সুপ্রাচীন নগরকেন্দ্রিক সভ্যতা। নাগরিকদের রুচিবোধ, কর্মপ্রচেষ্টা ও দক্ষতার দ্বারা এই সভ্যতা এক উন্নত নগর সভ্যতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিল। ঐতিহাসিক ড. এ. এল. বাসাম মনে করেন যে, এই নাগরিক সভ্যতার জন্ম দিয়েছিল মধ্যবিত্ত বণিক সম্প্রদায়। হরপ্পা ও মহেন-জো দারো—দুটি স্থানেই উন্নত নগর সভ্যতার নিদর্শন মিলেছে। এখানে সুবিন্যস্ত রাস্তাঘাট, রাস্তার পাশে ভূগর্ভস্থ পয়ঃপ্রণালী, পরিকল্পিত ঘরবাড়ি, স্নানাগার, শস্যাগার প্রভৃতি বিভিন্ন নাগরিক সুযোগসুবিধাগুলির অস্তিত্ব ছিল। স্বাস্থ্য-সচেতনতা, আধুনিক রুচিবোধ, নগরের সুরক্ষা, পরিচ্ছন্নতা প্রভৃতি বিষয়গুলি এই নগর সভ্যতায় যথেষ্ট গুরুত্ব পেত।

7. আধুনিকতা

হরপ্পা সভ্যতা অন্তত পাঁচ হাজার বছরের প্রাচীন হলেও এই সভ্যতায় বহু আধুনিক বৈশিষ্ট্যের অস্তিত্ব ছিল।(১) ঐতিহাসিকগণ অনুমান করেন যে, সম্ভবত হরপ্পা সভ্যতার প্রধান নগরগুলিতে রাতে গ্যাসের আলো জ্বলত । (২) এই সভ্যতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র চানহুদারোতে খননকার্য চালিয়ে এমন কিছু তথ্য পাওয়া গেছে যার ভিত্তিতে কোনো কোনো পণ্ডিত অনুমান করেন যে, এই সভ্যতায় মেয়েরা আধুনিক যুগের মেয়েদের অনুরূপ লিপস্টিক, নেলপলিশ, ভ্যানিটি ব্যাগ জাতীয় সামগ্রীর ব্যবহার জানত। (৩) স্বাস্থ্য-সচেতনতার বিষয়েও এই সভ্যতার মানুষ আধুনিক মানসিকতার পরিচয় দিয়েছিল।

About the Author

   Aftab Rahaman

AFTAB RAHAMAN

Aftab Rahaman is a seasoned education blogger and the founder of KaliKolom.com, India’s premier Bengali general knowledge blog. With over 10 years researching current affairs, history, and competitive exam prep, he delivers in‑depth, up‑to‑date articles that help students and lifelong learners succeed. His expert insights and data‑driven guides make KaliKolom.com an authoritative resource in Bengali education.

Unlock FREE Subject-Wise PDFs Instantly

Join Our Telegram Channel for Daily Updates!

      JOIN NOW ➔

Comments are closed.

Recent Posts

See All →