Physical Address
304 North Cardinal St.
Dorchester Center, MA 02124
Physical Address
304 North Cardinal St.
Dorchester Center, MA 02124
ভারতে সংগ্রামশীল জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের এক অগ্নিগর্ভ কেন্দ্র ছিল বাংলা। বাংলার বিপ্লবী আন্দোলনে বিভিন্ন গুপ্ত সমিতি যুবকদের মনে বিপ্লবী মানসিকতা গড়ে দিয়েছিল। অরবিন্দ ঘোষ, বারীন্দ্রকুমার ঘোষ প্রমুখের প্রচেষ্টায় এবং ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকীর আত্মবলিদানে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাঙালি যুবকেরা জীবনমৃত্যুকে পায়ের ভৃত্য করে যেভাবে বিপ্লবী কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন সেই বহ্নিশিখাতে স্বাধীন ভারতের স্বপ্ন ভেসে উঠেছিল।
উনিশ শতকের গোড়াতেই মেদিনীপুরে গুপ্ত সমিতি প্রতিষ্ঠা করে বৈপ্লবিক সংগ্রামের উদ্যোগ নেওয়া হয়। হেমচন্দ্র কানুনগো, জ্ঞানেন্দ্রনাথ বসু, সত্যেন্দ্রনাথ বসু প্রমুখ এই কাজে অগ্রণী ভূমিকা নেন।
(i) প্রতিষ্ঠা ও সদস্য : বাংলায় বিপ্লবী আন্দোলনের পথিকৃৎ হিসেবে অনুশীলন সমিতি-র নাম খ্যাত। ১৯০২ খ্রিস্টাব্দের গোড়ার দিকে বিপ্লবী সতীশচন্দ্র বসুর বিশেষ উদ্যোগ ও সহায়তায় ব্যারিস্টার পি. মিত্র (প্রমথনাথ মিত্র) অনুশীলন সমিতির প্রতিষ্ঠা করেন। কলকাতার মদনমিত্র লেনে এক গোপন আস্তানায় সমিতির কাজ শুরু হয়। ক্রমে অরবিন্দ ঘোষ, তাঁর ভাই বারীন্দ্রকুমার ঘোষ, চিত্তরঞ্জন দাশ (দেশবন্ধু) প্রমুখ অনেকেই অনুশীলন সমিতির সঙ্গে যুক্ত হন।
(ii) সমিতির শাখা:
বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অনুশীলন সমিতির কার্যকলাপ দ্রুত বৃদ্ধি পায়। কলকাতা-সহ বাংলার অধিকাংশ জেলায় এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ, রাজশাহি, রংপুর, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা প্রভৃতি স্থানে অনুশীলন সমিতির শাখা স্থাপিত হয়।
(iii) কার্যকলাপ :
প্রথমদিকে অনুশীলন সমিতি কোনো বৈপ্লবিক কর্মসূচির পক্ষপাতী ছিল না। শরীরচর্চা, চরিত্র গঠন ও দেশপ্রেমের আদর্শ প্রচার করাই ছিল এর লক্ষ্য। কিন্তু বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতি এই সমিতির সদস্যদের একাংশকে বৈপ্লবিক সংগ্রামের দিকে আকৃষ্ট করে। ও যুগান্তর দল:
(i) গঠন: বারীন্দ্রকুমার ও উপেন্দ্রনাথ ‘যুগান্তর’ পত্রিকা প্রকাশ করে (১৯০৬ খ্রি.) বিপ্লবী আদর্শ প্রচার শুরু করেন। ‘যুগান্তর’ পত্রিকা প্রকাশ্যে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধের প্রচার করে। ক্রমে এই গোষ্ঠী ‘যুগান্তর দল’ নামে পরিচিতি লাভ করে।
(ii) কার্যকলাপ: যুগান্তর দলই সর্বপ্রথম বিদেশি শাসকদের বিরুদ্ধে বোমা প্রভৃতি মারণাস্ত্রের ব্যবহারের কথা প্রকাশ্যে প্রচার করেন। যুগান্তর দলের উদ্যোগে পূর্ববঙ্গ ও আসামের অত্যাচারী ছোটোলাট ব্যামফিল্ড ফুলারকে হত্যার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। পরের বছরে বাংলার গভর্নর অ্যান্ড্রু ফ্রেজারকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। ঢাকার প্রাক্তন ম্যাজিস্ট্রেট মি. অ্যালেনকে লক্ষ করে গুলি ছোঁড়া হয়। কলকাতার অত্যাচারী ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ডকে হত্যার দায়িত্ব দেওয়া হয় এই দলের সদস্য ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকীকে।
(3)অন্যান্য সমিতি:
সমগ্র বাংলায় অন্যান্য বিপ্লবী সংস্থার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল পুলিনবিহারী দাসের ‘ঢাকা অনুশীলন সমিতি’, ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত ও বারীন্দ্রকুমার ঘোষের ‘আত্মোন্নতি সমিতি’। এ ছাড়া ব্রতী সমিতি, সুহৃদ সমিতির নাম করা যায়।
ভারতীয় রাজনীতিতে স্বরাজ্য দলের অবদান | এই দলের ব্যর্থতার কারণ আলোচনা ।