5,327 Members Now! 🎉
🔥 Live Job Alerts!
Join Instant Updates →
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

স্বাধীনতা পরবর্তী ভারতে সংসদীয় গণতন্ত্র কীভাবে বিকশিত হয়েছে ?

Team KaliKolom
Published: Aug 16, 2021

 

 সূচনা : ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ আগস্ট থেকে স্বাধীন ভারতের পথ চলা শুরু হয় । স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে বলেন , আমাদের প্রধান কাজ কেবল ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়ন নয় , আরও বড়াে কাজ হল ভারতবাসীর আবেগ ও মননশীলতার সংহতি বিধান করা । তাই ভারতের সংসদীয় গণতন্ত্রের বিকাশের জন্য নিম্নলিখিত কর্মসূচি গৃহীত হয় ।

 

The Indian Flug


ভারতে সংসদীয় গণতন্ত্রের বিকাশ 

1. জাতীয় সংহতি সুদৃঢ়করণ : জাতি , ভাষা , ধর্ম ও আচার আচরণগত বৈচিত্র্যকে বিবেচনার মধ্যে রেখেই নেহরু ভারতের জাতীয় সংহতি সুদৃঢ় করার কথা বলেন । তিনি লেখেন , বৈচিত্র্য ও বিভিন্নতা ভারতের জাতীয় সংহতির পরিপন্থী নয় , উপরন্তু এই বৈচিত্র্যই ভারতের প্রাণশক্তির ভিত্তি । তাই সব ভাষা , ধর্ম বা জাতির স্বাতন্ত্রকে অক্ষুন্ন রেখেই তিনি জাতীয় ঐক্য সুদৃঢ় করার কর্মসূচি গ্রহণের ওপর জোর দেন । 

 2. যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামাে গঠন : ভারতে জাতীয় সংহতি বিধানের ক্ষেত্রে সংসদীয় গণতন্ত্রের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ । ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে যে সংবিধান গৃহীত হয় , তা ভারতের চিরাচরিত বৈচিত্র্যের মাঝে ঐক্যের পথ দেখায় । এখানে যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনকাঠামাে গ্রহণ করা হয় । শক্তিশালী কেন্দ্রীয় সরকার গঠনের পাশাপাশি অঙ্গরাজ্যগুলির স্বশাসনের অধিকার সুনিশ্চিত করার ব্যবস্থা হয় । 

 3. সংসদীয় ব্যবস্থার প্রবর্তন : দেশের মৌলিক ও চূড়ান্ত ক্ষমতা ( basic and ultimate power ) পার্লামেন্ট বা সংসদের হাতেন্যস্ত করা হয়েছে । এখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের মতামত স্বাধীনভাবে প্রকাশ করতে এবং একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে । অশােক মেহতা বলেছেন যে , “ ভারতের পার্লামেন্ট জাতীয় ঐক্য রক্ষাকারীর ভূমিকা পালন করেছে । 

4. বহুদলীয় ব্যবস্থা : রাজনৈতিক দলসমূহ এবং তাদের কর্মসূচি ভারতে সংসদীয় শাসনধারার এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান । সােশ্যালিস্ট পার্টি , কমিউনিস্ট পার্টি , জনসংঘ , স্বতন্ত্র দল এবং সর্বোপরি জাতীয় কংগ্রেস সবগুলিই ছিল সর্বভারতীয় দল এবং প্রত্যেকের দর্শন ও আদর্শ ছিল ভারতের ঐক্য , সংহতি ও প্রগতি । নীতির ভিত্তিতে গঠিত বহুদলীয় ব্যবস্থা ভারতে গণতন্ত্রের ভিত্তি দৃঢ় করেছে ।  

5. সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠা : স্বাধীনতা – পরবর্তী ভারতের অন্যতম জাতীয় বৈশিষ্ট্য হল সামাজিক ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা ও সম্প্রসারণ । ভারতের সংবিধানে জাতি , ধর্ম বা লিঙ্গের বৈষম্য অস্বীকার করা হয়েছে । সমাজের অবহেলিত , পশ্চাৎপদ ও শােষিত মানুষের নিরাপত্তা , উন্নয়ন ও মর্যাদা বৃদ্ধি করার অঙ্গীকার সংবিধানে উল্লেখ করা হয় । এই লক্ষ্যে তপশিলি জাতি ও তপশিলি উপজাতিদের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান , চাকুরি , নির্বাচন ইত্যাদি ক্ষেত্রে সংরক্ষণ নীতি ’ ( Reservation ) চালু করা হয় । 

6 : সামাজিক সংস্কারসাধন : সমাজের উন্নতিকল্পে সংস্কারমূলক ও কল্যাণমূলক আইন জারি করা হয় । জমিদারি প্রথার অবসান ঘটানাে হয় এবং উদ্বৃত্ত জমি ভূমিহীন মানুষদের মধ্যে বণ্টন করা হয় । অস্পৃশ্যতাকে একটি সামাজিক অপরাধ বলে ঘােষণা করা হয় এবং আইনগতভাবে নিষিদ্ধ করা হয় । ধর্মনিরপেক্ষতার নীতিকে কার্যকর ও সক্রিয় রাখার ব্যবস্থা গৃহীত হয় ।

7. দেশীয় রাজ্যসমূহের অন্তর্ভুক্তি : স্বাধীনতা লাভের মুহূর্তে ভারত সরকারের সামনে একটি বড়াে কাজ ছিল স্বাধীন দেশীয় রাজ্যগুলিকে ভারতের সঙ্গে যুক্ত করা । এই কাজের জন্য রাজ্য মন্ত্রীদপ্তর ’ ( States Ministry ) গঠন করা হয় এবং এই দপ্তরের দায়িত্ব পান সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল । সর্দার প্যাটেলের দৃঢ়তা এবং নেহরুর নেতৃত্বে ১৯৪৭ – এর ১৫ আগস্টের মধ্যে জুনাগড় , হায়দ্রাবাদ ও কাশ্মীর ছাড়া সমস্ত রাজ্য ভারতের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায় । ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে জুনাগড় , নভেম্বর মাসে হায়দ্রাবাদ ভারতের সঙ্গে যুক্ত হয় । পরে সংঘর্ষের মধ্যে দিয়ে কাশ্মীরের ভারতভুক্তি ঘটে ।নামক দুটি রাজ্য গড়া হয় । রজনী কোঠারি , বিপান চন্দ্র প্রমুখের মতে , ভাষাভিত্তিক রাজ্য পুনর্গঠনের ফলে ভারতের জাতীয় সংহতি সুদৃঢ় হয় ।

8. ভাষাভিত্তিক রাজ্য পুনর্গঠন : স্বাধীন ভারতে রাজ্যগুলির পুনর্গঠনের প্রশ্নটি বিবেচনার জন্য ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে একটি কমিশন নিয়ােগ করা হয় । বিচারপতি ফজল আলি , কে , এম , পানিক্কর এবং হৃদয়নাথ কুরু এই কমিশনের সদস্য মনােনীত হন । ১৯৫৫ – এর অক্টোবরে কমিশনের রিপাের্ট পেশ করা হয় । ১৯৫৬ – তে রাজ্য পুনর্গঠন আইন জারি হয় । এই আইন অনুযায়ী 0 হায়দ্রাবাদের তেলেঙ্গানা যুক্ত হয় অন্ত্রের সঙ্গে । 2 মালাবার জেলা ও ত্রিবাঙ্কুর – কোচিন যুক্ত করে কেরালা রাজ্য সৃষ্টি করা হয় । ও ১৯৬০ সালে বােম্বাইকে বিভক্ত করে গুজরাত রাজ্য সৃষ্টি করা হয় । ১৯৬৬ সালে পাঞ্জাবকে বিভক্ত করে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা

9. সমাজতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা : স্বাধীন ভারত সরকারের ঘঘাষিত লক্ষ্য হল সমাজতান্ত্রিক ধাঁচের সমাজব্যবস্থা প্রবর্তন করা । এই প্রস্তাব ভারতে কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের ধারণা ব্যক্ত করে । এই লক্ষ্যে পৌঁছােনাের জন্য নানা জনমুখী পরিকল্পনা রূপায়ণে জোর দেওয়া হয় । 

 10 , পরিকল্পনা কমিশন : ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে এই কমিশন গঠিত হয় । এর কাজ হল জাতীয় সম্পদ পরিমাপ করা , অর্থনৈতিক পরিকল্পনা রচনা করা , অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ও সুষ্ঠু বণ্টনের মাধ্যমে ওই সম্পদ ব্যবহার করা ইত্যাদি । ১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দে পরিকল্পনা কমিশনের পুনর্গঠন করা হয় । প্রধানমন্ত্রী এই কমিশনের নেতৃত্ব দেন । রাজ্যগুলিতে পরিকল্পনা – বিষয়ক পরামর্শদাতারা এঁদের কাছে স্থানীয় = উন্নয়নের সমস্যা ও সমাধান সম্পর্কে সুপারিশ পাঠান । রাজ্য ও জেলাস্তরেও পরিকল্পনা সংস্থা গঠন করা হয় । 

 11 , জাতীয় উন্নয়ন পর্ষদ : ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে জাতীয় উন্নয়ন এ । পর্ষদ গঠিত হয় । এর সভাপতি হন প্রধানমন্ত্রী । রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীগণ ও পরিকল্পনা কমিশনের সব সদস্য এর অন্তর্ভুক্ত । এর কাজ হল জাতীয় উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত সামাজিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিচারবিবেচনা করা । এর পদমর্যাদা প্রায় সুপার ক্যাবিনেট ’ পর্যায়ের । এটি ভারত সরকার ও সব রাজ্য সরকারের পক্ষে কার্য পরিচালনা করে । 

 12. সাধারণ নির্বাচন ব্যবস্থার প্রবর্তন : ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে স্বাধীন ভারতে প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় । এই নির্বাচনে ত জাতীয় কংগ্রেস বিপুল ভােটে বিজয়ী হয় ও সরকার গঠন করে । ১৯৫৭ ও ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ও তৃতীয় সাধারণ য় । নির্বাচনেও কংগ্রেস জয়লাভ করে । তবে দ্বিতীয় সাধারণ নির্বাচনে প্রদেশে সর্বপ্রথম অকংগ্রেসি মন্ত্রীসভা গঠিত হয় । ই . এম . এস . নাম্বুদ্রিপাদের নেতৃত্বে কেরলে প্রথম কমিউনিস্ট সরকার গঠিত হয় । 

 উপসংহারঃ

সংসদীয় গণতন্ত্রের বিকাশকে চূড়ান্ত পর্যায়ে উন্নীত করার জন্য শুধুমাত্র সাংবিধানিক সুরক্ষাই যথেষ্ট নয় , এর জন্য দারিদ্র্য মােচন , নির্বাচনে দুর্নীতি রােধ , আর্থিক বৈষম্য হ্রাস , উগ্র প্রাদেশিকতা ও আলিকতাবাদের অবসান ঘটানাে প্রয়ােজন । এ ব্যাপারে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলিকে আন্তরিক উদ্যোগ নিতে হবে। 


About the Author

   Aftab Rahaman

AFTAB RAHAMAN

Aftab Rahaman is a seasoned education blogger and the founder of KaliKolom.com, India’s premier Bengali general knowledge blog. With over 10 years researching current affairs, history, and competitive exam prep, he delivers in‑depth, up‑to‑date articles that help students and lifelong learners succeed. His expert insights and data‑driven guides make KaliKolom.com an authoritative resource in Bengali education.

Unlock FREE Subject-Wise PDFs Instantly

Join Our Telegram Channel for Daily Updates!

      JOIN NOW ➔

Recent Posts

See All →