WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

যুদ্ধ নয় শান্তি চাই রচনা



যুদ্ধ নয় শান্তি চাই রচনা
যুদ্ধ নয় শান্তি চাই রচনা

যুদ্ধ নয় শান্তি চাই

ভূমিকা:
মানবসভ্যতার ইতিহাসে যুদ্ধের কারণে অসংখ্য জীবন নষ্ট হয়েছে, ধ্বংস হয়েছে মানবতার সব অর্জন। অস্ত্রের ঝনঝনানি কখনোই সুখ আনতে পারে না। তাই আজকের বিশ্বে সকল মানুষের একটাই প্রত্যাশা—যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই। শান্তি হল উন্নতি, সুখ, অগ্রগতি ও মানবতার মূল ভিত্তি।

যুদ্ধের ক্ষতিকর প্রভাব:
যুদ্ধ শুরু হলে প্রথমেই মারা যায় নিরীহ মানুষ। শিশু, নারী, বৃদ্ধ কেউই রক্ষা পায় না। মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে শরণার্থী হয়ে পড়ে, ক্ষুধা ও রোগবালাই ছড়িয়ে পড়ে। যুদ্ধের ফলে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যায়, শিক্ষাব্যবস্থা থমকে যায়, শিল্প-সংস্কৃতি বিলীন হয়ে পড়ে। শুধু আজ নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মও এর খারাপ প্রভাব বয়ে বেড়ায়। তাই যুদ্ধ কখনোই কোনো সমস্যার স্থায়ী সমাধান হতে পারে না।

শান্তির গুরুত্ব:
শান্তি থাকলে দেশ এগিয়ে যায়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উন্নত হয়, মানুষ সুখে-স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপন করে। শান্তির মাধ্যমে দেশগুলোর মধ্যে বন্ধুত্ব সৃষ্টি হয়, বাণিজ্য বৃদ্ধি পায় এবং মানুষের জীবনমান উন্নত হয়। শান্তি মানবতার উন্নতির সোপান এবং বিশ্বকে সুন্দর করে তোলে।

শান্তি প্রতিষ্ঠায় আমাদের ভূমিকা:
শান্তি শুধু সরকারের কাজ নয়, আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্বও বটে। পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সহনশীলতা, ভ্রাতৃত্ববোধ ও মানবিকতা বজায় রাখতে হবে। কোনো বিবাদ হলে তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে, হিংসা বা আক্রমণ নয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শান্তি ও মানবতার শিক্ষা দিতে হবে, যাতে নতুন প্রজন্ম সঠিক মূল্যবোধ নিয়ে বড় হতে পারে। গণমাধ্যম, সংগঠন এবং বিশ্বশান্তি আন্দোলনগুলোও শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দিতে পারে।

বিশ্বশান্তি বজায় রাখতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা:
সব দেশকে একে অপরের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করতে হবে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনকে শান্তি রক্ষায় আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। অস্ত্রনির্মাণে অযথা অর্থ খরচ না করে চিকিৎসা, শিক্ষা ও উন্নয়নমূলক কাজে বিনিয়োগ করতে হবে। বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য, বৈষম্য ও অন্যায় কমাতে পারলে সংঘাতও কমে যাবে।

উপসংহার:
যুদ্ধ মানুষকে শুধু ধ্বংসের পথেই নিয়ে যায়। কিন্তু শান্তি মানুষের স্বপ্ন পূরণ করে, পৃথিবীকে করে তোলে বাসযোগ্য। তাই আমাদের সবার শপথ হোক—যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই। ভালোবাসা, সহনশীলতা ও মানবিকতার মাধ্যমে আমরা গড়ে তুলতে পারি একটি সুন্দর, সমৃদ্ধ ও শান্তিময় বিশ্ব।


#2 যুদ্ধ নয় শান্তি চাই রচনা

যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই

ভূমিকা:



মানবসভ্যতার ইতিহাস যেমন সৃষ্টি আর অগ্রগতির ইতিহাস, তেমনি তা রক্তক্ষয়ী সংঘাতেরও ইতিহাস। আদিম যুগ থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ নিজের আধিপত্য বিস্তারের জন্য বারবার যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। কিন্তু যুদ্ধ কখনো মানবজাতির জন্য কল্যাণ বয়ে আনেনি। যুদ্ধ মানেই ধ্বংস, মৃত্যু, হাহাকার আর কান্না। বারুদের গন্ধে ভারী বাতাস আর স্বজন হারানোর বেদনায় নীল আকাশ আজ চিৎকার করে বলছে— আমরা আর ধ্বংস চাই না, আমরা শান্তি চাই। বর্তমান বিশ্বের পরিপ্রেক্ষিতে ‘যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই’ কেবল একটি স্লোগান নয়, এটি অস্তিত্ব রক্ষার দাবি।

যুদ্ধের ভয়াবহতা:

যুদ্ধের নাম শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে ধ্বংসস্তূপ, পঙ্গুত্ব আর লাশের সারি। প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা আজও বিশ্ববিবেককে তাড়িয়ে বেড়ায়। হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে ফেলা পারমাণবিক বোমার তেজস্ক্রিয়তায় আজও সেখানে বিকলাঙ্গ শিশু জন্ম নেয়। যুদ্ধ কেবল সৈনিকের প্রাণ কেড়ে নেয় না, এটি সাধারণ মানুষ, নারী ও শিশুদেরও রেহাই দেয় না। যুদ্ধের ফলে স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, ঘরবাড়ি সব মাটির সাথে মিশে যায়। হাজার হাজার মানুষ শরণার্থী হয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটায়। যুদ্ধের আগুনে পুড়ে ছাই হয় মানুষের স্বপ্ন আর ভবিষৎ।

শান্তির প্রয়োজনীয়তা:

মানুষের বেঁচে থাকার জন্য যেমন অক্সিজেনের প্রয়োজন, তেমনি সভ্যতার বিকাশের জন্য শান্তির প্রয়োজন অপরিহার্য। শান্তি হলো উন্নয়নের চাবিকাঠি। একটি দেশে শান্তি বজায় থাকলে সেখানে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রসার ঘটে। শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতির চর্চা কেবল শান্তিময় পরিবেশেই সম্ভব। যুদ্ধের পেছনে যে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা হয়, তা যদি মানবকল্যাণে বা দারিদ্র্য দূরীকরণে ব্যয় করা হতো, তবে এই পৃথিবী স্বর্গে পরিণত হতো। ক্ষুধার্ত শিশুর মুখে অন্ন তুলে দেওয়া কিংবা চিকিৎসার অভাবে ধুঁকতে থাকা মানুষের সেবা করা যুদ্ধের চেয়ে অনেক বেশি মহৎ কাজ।

বর্তমান বিশ্ব ও মানবিকতা:

দুর্ভাগ্যবশত, একবিংশ শতাব্দীতে এসেও আমরা যুদ্ধমুক্ত পৃথিবী গড়তে পারিনি। আজও পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ক্ষমতার লড়াই চলছে। শক্তিশালী দেশগুলো দুর্বল দেশের ওপর আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টায় লিপ্ত। পারমাণবিক অস্ত্রের প্রতিযোগিতা পৃথিবীকে এক ভয়ংকর অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে, “চোখের বদলে চোখ নিলে পুরো পৃথিবী অন্ধ হয়ে যাবে।” হিংসা দিয়ে কখনো হিংসাকে জয় করা যায় না, তাকে জয় করতে হয় ভালোবাসা দিয়ে। আজ সময় এসেছে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে এক হয়ে যুদ্ধের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর।

উপসংহার:

আমরা ধ্বংস চাই না, সৃষ্টি চাই। আমরা বারুদের গন্ধ চাই না, ফুলের সুবাস চাই। পৃথিবীর প্রতিটি শিশু যেন নিরাপদ ও সুন্দর পরিবেশে বেড়ে উঠতে পারে, তার নিশ্চয়তা দেওয়াই আমাদের দায়িত্ব। যুদ্ধ মানুষকে পশুতে পরিণত করে, আর শান্তি মানুষকে দেবত্বে উন্নীত করে। তাই আসুন, আমরা সবাই মিলে যুদ্ধের বিরুদ্ধে সোচ্চার হই এবং শান্তির পতাকা উড়িয়ে দিই। কবি সুকান্তের ভাষায় আমাদের অঙ্গীকার হোক— “এ বিশ্বকে এ-শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি— নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।”

About the Author

Aftab Rahaman

AFTAB RAHAMAN

I am Aftab Rahaman, the founder of KaliKolom.com. For over 10 years, I have been writing simple and informative articles on current affairs, history, and competitive exam preparation for students. My goal is not just studying, but making the process of learning enjoyable. I hope my writing inspires you on your journey to knowledge.

📌 Follow me:

Leave a Comment