Chapter – 13
অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান-জয় গোস্বামী
MCQs on “অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান” by জয়া গোস্বামী:
MCQs (Multiple Choice Questions):
- ‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান’ কবিতাটির রচয়িতা কে?
ক. জীবনানন্দ দাশ
খ. শঙ্খ ঘোষ
গ. জয় গোস্বামী
ঘ. সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
উত্তর: গ. জয় গোস্বামী - কবিতার মূল বার্তা কী?
ক. অস্ত্র ব্যবহার
খ. গান ও শান্তির জয়
গ. সংগ্রামের আহ্বান
ঘ. প্রকৃতির সৌন্দর্য
উত্তর: খ. গান ও শান্তির জয় - “অস্ত্র ফ্যালো, অস্ত্র রাখো পায়ে” — এই বাক্যে ‘অস্ত্র’ কী বোঝায়?
ক. খেলনার অস্ত্র
খ. প্রকৃত অস্ত্র
গ. সহিংসতা
ঘ. রাজনীতি
উত্তর: গ. সহিংসতা - কবি গানকে কী হিসেবে ব্যবহার করেছেন?
ক. অস্ত্র
খ. বর্ম
গ. পাথেয়
ঘ. শত্রু
উত্তর: খ. বর্ম - “হাজার হাতে পায়ে এগিয়ে আসি”— এখানে কার কথা বলা হয়েছে?
ক. সৈনিক
খ. গান
গ. কবি
ঘ. শকুন
উত্তর: গ. কবি - “কোকিল” এখানে কোন গুণের প্রতীক?
ক. হিংসা
খ. স্নেহ
গ. সুর ও কোমলতা
ঘ. দৃঢ়তা
উত্তর: গ. সুর ও কোমলতা - “মাথায় গোঁজা ময়ূরপালক” কাকে বোঝায়?
ক. সৈনিক
খ. সন্ন্যাসী
গ. ঋষিবালক
ঘ. কবি
উত্তর: গ. ঋষিবালক - গান ‘নদীতে, দেশগাঁয়ে’ কী বোঝাতে চায়?
ক. গান শহরেই সীমিত
খ. গান নির্দিষ্ট স্থানে
গ. গান সর্বব্যাপী
ঘ. গান শুধু বেদনায়
উত্তর: গ. গান সর্বব্যাপী - “শুধু একটা কোকিল গান বাঁধবে সহস্র উপায়ে”— এখানে কী বোঝানো হয়েছে?
ক. কোকিল গান শেখায়
খ. গান বহু রকমে গাওয়া যায়
গ. গান শক্তিশালী অস্ত্র
ঘ. গান বাঁচার উপায়
উত্তর: গ. গান বহু রকমে গাওয়া যায় - “রক্ত মুছি শুধু গানের গায়ে”— এই বাক্যে কী বোঝানো হয়েছে?
ক. গান রক্ত মুছে দিতে পারে
খ. গান রক্তাক্ত
গ. গানে রক্তের চিহ্ন
ঘ. গান সহিংসতা শেখায়
উত্তর: ক. গান রক্ত মুছে দিতে পারে - কবিতায় কতবার “অস্ত্র ফ্যালো” কথাটি ব্যবহৃত হয়েছে?
ক. একবার
খ. দুইবার
গ. তিনবার
ঘ. চারবার
উত্তর: গ. তিনবার - “ঋষিবালক” শব্দটি কোন ভাব প্রকাশ করে?
ক. ভীতিপ্রদ
খ. নিরীহ
গ. অলৌকিক শক্তির প্রতীক
ঘ. পবিত্রতা ও জ্ঞান
উত্তর: ঘ. পবিত্রতা ও জ্ঞান - “বুলেট তাড়াই” বাক্যে কী অর্থ বোঝায়?
ক. গুলি করা
খ. বুলেট থেকে রক্ষা পাওয়া
গ. গুলি গ্রহণ করা
ঘ. বুলেট বানানো
উত্তর: খ. বুলেট থেকে রক্ষা পাওয়া - কবিতা কোন কাব্যধারায় লেখা হয়েছে?
ক. রোমান্টিক
খ. রাজনৈতিক
গ. প্রতীকবাদ
ঘ. অলংকারবহুল
উত্তর: গ. প্রতীকবাদ - “গানের দুটি পায়ে” কথাটি কিসের ইঙ্গিত দেয়?
ক. গান জীবন্ত
খ. গান মানুষের সমতুল্য
গ. গান চলতে পারে
ঘ. সবগুলো
উত্তর: ঘ. সবগুলো - “গানের বর্ম” বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
ক. গান রক্ষা করে
খ. গান লড়াই করে
গ. গান একধরনের অস্ত্র
ঘ. গানকে ঢাকনা হিসেবে
উত্তর: ক. গান রক্ষা করে - “সহস্র উপায়ে”— এই বাক্যাংশে ‘সহস্র’ মানে কী?
ক. দুইটি
খ. দশটি
গ. অনেক
ঘ. একটিই
উত্তর: গ. অনেক - গান এখানে কোন গুণের বাহক?
ক. ঘৃণা
খ. প্রতিশোধ
গ. মানবতা
ঘ. ভয়
উত্তর: গ. মানবতা - গানের মাধ্যমে কবি কী চান?
ক. যুদ্ধ
খ. প্রতিশোধ
গ. পরিবর্তন
ঘ. বিপ্লব
উত্তর: গ. পরিবর্তন - এই কবিতার ভাষার বৈশিষ্ট্য কী?
ক. কঠিন ও দার্শনিক
খ. সহজ ও প্রতীকধর্মী
গ. রূপকহীন
ঘ. শুধুমাত্র প্রকৃতি নির্ভর
উত্তর: খ. সহজ ও প্রতীকধর্মী
15টি অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর
নিচে “অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান” কবিতাটি থেকে ১৫টি অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন এবং প্রতিটির জন্য ২০ শব্দের মধ্যে উত্তর দেওয়া হলো:
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর:
- কবিতার নাম কী?
উত্তর: কবিতার নাম ‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান’, যেখানে গানকে শান্তি ও মানবতার প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। - কবিতাটি কে লিখেছেন?
উত্তর: কবিতাটি আধুনিক কবি জয় গোস্বামী রচিত, যিনি সমাজ ও মানবতাবাদী চিন্তায় বিশ্বাসী। - ‘অস্ত্র’ এখানে কী বোঝায়?
উত্তর: অস্ত্র বলতে বোঝানো হয়েছে সহিংসতা, যুদ্ধ, আগ্রাসন ও ধ্বংসের প্রতীক। - ‘গান’ শব্দটি কী প্রতীক?
উত্তর: গান প্রতীক শান্তি, সংস্কৃতি, মানবতা ও সৃজনশীল প্রতিরোধের। - কবি কী পরতে চেয়েছেন?
উত্তর: কবি গানের বর্ম পরতে চেয়েছেন, যা তাকে রক্ষা করে সহিংসতার বিরুদ্ধে। - ‘হাজার হাতে পায়ে এগিয়ে আসি’—এর অর্থ কী?
উত্তর: কবি অসংখ্য মানুষের প্রতিনিধি হয়ে, সাহস ও শক্তি নিয়ে শান্তির বার্তা নিয়ে এগিয়ে আসছেন। - কবি অস্ত্রকে কোথায় রাখতে বলেন?
উত্তর: কবি অস্ত্রকে পায়ের কাছে ফেলতে বলেন, যা অবজ্ঞা ও পরিত্যাগের প্রতীক। - গানের মাধ্যমে কবি কী করতে চান?
উত্তর: কবি গান দিয়ে যুদ্ধ ও সহিংসতাকে প্রতিহত করতে এবং মানবিক মূল্যবোধ ছড়িয়ে দিতে চান। - ‘বুলেট তাড়াই’—এর অর্থ কী?
উত্তর: গান দিয়ে কবি সহিংস বুলেট বা আক্রমণ প্রতিহত করেন। - ‘গানের গায়ে রক্ত মুছি’ কথাটি কী বোঝায়?
উত্তর: গান দিয়ে কবি সমাজের রক্তাক্ত ক্ষত বা সহিংসতার চিহ্ন মুছে ফেলতে চান। - কোকিলের উল্লেখ কেন করা হয়েছে?
উত্তর: কোকিলের মাধ্যমে গানের সুর, কোমলতা ও শান্তির সৌন্দর্য তুলে ধরা হয়েছে। - ‘ঋষিবালক’ প্রতীক কী বোঝায়?
উত্তর: ঋষিবালক প্রতীক জ্ঞান, পবিত্রতা ও নির্ভীক শান্তির বাণী বাহকের। - গানের যাত্রাপথ কোথায় কোথায়?
উত্তর: গান নদী, দেশগাঁয়ে ঘুরে বেড়ায়—যা তার সর্বব্যাপী প্রভাব ও শক্তিকে বোঝায়। - ‘গানের দুটি পায়ে’ কথাটি কী বোঝায়?
উত্তর: গানকে জীবন্ত ও গতিশীল এক সত্তা হিসেবে দেখানো হয়েছে, যা হেঁটে বেড়াতে পারে। - এই কবিতার মূল বার্তা কী?
উত্তর: সহিংসতার পরিবর্তে গান, সংস্কৃতি ও মানবতা দিয়ে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা।
4টি বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্ন ১: কবিতাটিতে ‘অস্ত্র’ ও ‘গান’—এই দুটি প্রতীকের মধ্যে কী দ্বন্দ্ব দেখানো হয়েছে?
উত্তর:
কবিতাটিতে ‘অস্ত্র’ প্রতীক ধ্বংস, সহিংসতা ও রক্তপাতের প্রতিরূপ। অন্যদিকে, ‘গান’ প্রতীক শান্তি, সংস্কৃতি, মানবতা এবং সৃজনশীলতার। কবি এই দুই প্রতীকের মাধ্যমে দ্বন্দ্ব তুলে ধরেছেন—যেখানে অস্ত্র ভয় দেখিয়ে দমন করতে চায়, গান চায় হৃদয় ছুঁয়ে পরিবর্তন আনতে। কবি অস্ত্রকে পরিত্যাগ করে গানকে গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি গানকে বর্ম হিসেবে ব্যবহার করে, বুলেট প্রতিহত করার কল্পচিত্র এঁকেছেন। এটি বোঝায়, গান বা শিল্প যে কারো মন জয় করতে পারে এবং সহিংসতাকে রুখে দিতে পারে। এভাবে গান ও অস্ত্রের দ্বন্দ্ব মূলত হিংসা ও মানবতার দ্বন্দ্ব।
প্রশ্ন ২: “গানের বর্ম” ও “মাথায় গোঁজা ময়ূরপালক”—এই চিত্রকল্পগুলোর তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।
উত্তর:
“গানের বর্ম” বলতে বোঝানো হয়েছে এমন এক আত্মরক্ষার শক্তি, যা সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে, কিন্তু সে প্রতিরোধ শান্তিপূর্ণ। এটি একটি প্রতীক, যা শিল্প ও সংস্কৃতির শক্তিকে তুলে ধরে। কবি বুঝাতে চান, গান কোনো তলোয়ার নয়, বরং এমন এক আবরণ যা ভেতরের মানবতাকে রক্ষা করে। “মাথায় গোঁজা ময়ূরপালক” চিত্রটি হিন্দু পুরাণে কৃষ্ণের প্রতীক—যিনি প্রেম, সৌন্দর্য ও অহিংসার প্রতিনিধি। এই চিত্রকল্পটি গানকে এক পবিত্র, স্নিগ্ধ, নিরীহ সত্তা হিসেবে উপস্থাপন করে, যা অস্ত্রের বিপরীতে অবস্থান নেয়। দুটি চিত্রই কবিতার মানবতাবাদী ভাবনাকে গভীরতর করে তোলে।
প্রশ্ন ৩: জয় গোস্বামীর কবিতায় সমাজ ও মানবতার প্রতি কবির দৃষ্টিভঙ্গি কেমনভাবে প্রকাশ পেয়েছে?
উত্তর:
জয় গোস্বামীর কবিতায় সমাজ ও মানবতার প্রতি গভীর মমত্ববোধ ও দায়িত্ববোধ প্রকাশ পায়। ‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান’ কবিতায় তিনি সহিংসতা ও দমননীতি প্রত্যাখ্যান করে গান বা শিল্পের মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠার কথা বলেন। তাঁর দৃষ্টিতে সমাজে পরিবর্তন আনার জন্য অস্ত্র নয়, দরকার সহানুভূতি ও সৃজনশীলতা। তিনি গানকে শুধু শিল্প হিসেবে নয়, বরং প্রতিরোধ ও পুনর্গঠনের হাতিয়ার হিসেবে দেখিয়েছেন। কবিতার প্রতিটি চিত্রকল্পে তিনি মানবতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি ফুটিয়ে তুলেছেন—কোকিল, ঋষিবালক, ময়ূরপালক ইত্যাদি সবই শান্তির প্রতীক। এসব উপমা-প্রতীকের মাধ্যমে তিনি জানান, সত্যিকারের শক্তি যুদ্ধ নয়, বরং গান ও ভালোবাসা। এভাবে সমাজ বদলানোর একটি বিকল্প দৃষ্টিভঙ্গি কবিতায় তুলে ধরেছেন।
প্রশ্ন ৩: অস্ত্র রাখো অস্ত্র ফ্যালো পায়ে”- কাদের উদ্দেশ্যে এমন আবেদন? এইরকম আবেদন করার কারণ কী? এই আবেদনের তাৎপর্য আলোচনা করো।
উত্তর: কবি জয় গোস্বামী রচিত ‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান’ কবিতায় পৃথিবীর সমস্ত মানুষের উদ্দেশ্যে প্রশ্নোদ্ভূত উক্তিটি করেছেন।
অস্ত্রকে সঙ্গী করার কারণে মানব সভ্যতা ক্রমশ ধ্বংস পথগামী। কবি জানেন অস্ত্র কখনো কোনো শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের চিন্তাচেতনা এবং শান্তিলাভের ভিত্তি হতে পারে না। আসলে অস্ত্র মানুষকে হিংসা, বিদ্বেষ, ক্ষমতা ও দম্ভের ওপর নির্ভরশীল ও যুদ্ধবাজ করে তোলে। জন্ম দেয় পাপের। সংবেদনশীল কবি জানেন প্রবলের অত্যাচার দমন করতে হলে, মানুষের যৌথতার প্রয়োজন। আর একমাত্র গানই পারে মানুষকে সংঘবদ্ধ করতে।
কারণ অস্ত্রের দ্বারা নীতিচ্যুত মানুষ শুধু অন্য মানুষের মনে ভয় প্রদর্শন করে। অস্ত্র যেন তারই ছায়াপথ ঘটায়।
“দুর্দিনের সমন্বয়, সম্মুখেতে অনন্ত প্রহর দৃষ্টিপথ অন্ধকার, সন্দিহান আগামী দিনেরা।”
এই বিধ্বংসী কালো দিনের হাত থেকে বাঁচাতে পারে একমাত্র গান। তাই কবি অস্ত্র বিসর্জনের আহ্বান জানান। মানুষ স্বশক্তিতে বলীয়ান হয়ে অস্ত্র পায়ে ফেলে, মানবতার উজ্জীবনকে সার্থক করতে পারে। সে দানববৃত্তি পরিহার করে মানবিকতার চিরস্থায়ী মহিমাকে অর্জন করতে পারে।
এই আবেদনের সাফল্য আসবে একমাত্র গানের মাধ্যমে, মানুষের অন্তরস্থিত সুরময় সত্ত্বার বিকাশ ঘটিয়ে। এছাড়া গান মানুষের মানবিক সত্ত্বার স্ফুরণ ঘটায়। মানুষের মধ্যে বৈরীতাকে দূরে সরিয়ে ফেলে মানুষের মধ্যে যৌথতা, মূল্যবোধের জাগরণ ঘটিয়ে মানব সভ্যতার প্রকৃত বিকাশে সাহায্য করে। তাই তো কবির ভাষায় “অস্ত্র নয়, শস্ত্র নয়, হিংসা নয়, রক্ত নয়, জয়ী হোক গান, জয়ী হোক সম্মিলিত মানব, জয়ী হোক মানবতা”।