যখন আমরা প্রশ্ন করি, “এই বিশ্বের প্রথম ইউনিভার্সিটি কোনটি?”—তখন এর উত্তরটা আসলে নির্ভর করে আমরা ‘University’ শব্দটাকে কীভাবে Define করছি তার ওপর। আধুনিক মডেলের ইউনিভার্সিটি আসার অনেক আগেই পৃথিবীর বিভিন্ন কালচারে Higher Learning-এর সুশৃঙ্খল ব্যবস্থা ছিল। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেরই নিজস্ব ঐতিহ্য বা Legacy রয়েছে।
কিন্তু ইতিহাসের পাতা ঘাটলে সত্যিকার অর্থে প্রথম কে? চলুন জেনে নেওয়া যাক।
Which Was the World’s First University?
যদি আমরা মধ্যযুগীয় ইউরোপীয় মডেলের (Medieval European model) বাইরে তাকাই এবং এমন একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুঁজি যেটা প্রাচীনকাল থেকে আজ পর্যন্ত Continuously Operating (ধারাবাহিকভাবে চালু) আছে, তবে বিশ্বের বেশিরভাগ Scholars এবং অফিসিয়াল বডি যার নাম নেয়, সেটি হলো— মরক্কোর ফেজ শহরে অবস্থিত University of al-Qarawiyyin।
al-Qarawiyyin-এর উৎপত্তি বা Origins
এই ঐতিহাসিক ইউনিভার্সিটিটি ৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে (859 CE) প্রতিষ্ঠা করেছিলেন Fatima al-Fihri। তিনি ছিলেন তিউনিসিয়ান বংশোদ্ভূত একজন অত্যন্ত ধনাঢ্য এবং সুশিক্ষিত নারী।
শুরুতে al-Qarawiyyin ছিল মূলত একটি মসজিদ এবং Community Learning Centre। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এটি শুধুমাত্র ধর্মীয় শিক্ষার গণ্ডিতে আটকে থাকেনি। এর সুনাম ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে দূর-দূরান্ত থেকে স্কলাররা এখানে আসতে শুরু করেন। ধীরে ধীরে এখানে Theology-র পাশাপাশি Jurisprudence, Mathematics, Astronomy, Grammar এবং Philosophy-র মতো বিষয়গুলোতেও পাঠদান শুরু হয়। এভাবেই এটি বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী একটি Scholarship Centre-এ পরিণত হয়।
কেন al-Qarawiyyin-কে ‘First University’ বলা হয়?
UNESCO এবং Guinness World Records—উভয়েই al-Qarawiyyin-কে বিশ্বের “Oldest existing and continually operating educational institution” হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
ইউরোপের বিখ্যাত Bologna বা Oxford University প্রতিষ্ঠিত হওয়ার প্রায় ২০০ বছর আগে থেকেই al-Qarawiyyin-এ পুরোদমে শিক্ষা কার্যক্রম চলছিল। যদিও শুরুর দিকে এর ফরম্যাট ইউরোপিয়ান Degree-granting মডেলের মতো ছিল না, তবুও একটি ইউনিভার্সিটির সব Essential Functions এটি পালন করত:
- একটি স্থায়ী Scholarly Community।
- একটি Structured Curriculum বা পাঠ্যক্রম।
- উচ্চতর গবেষণার বা Advanced Study-র ঐতিহ্য।
- ১১৬০ বছরেরও বেশি সময়ের Unbroken Lineage বা ধারাবাহিকতা।













Centre of Global Scholarship
ইতিহাস জুড়ে উত্তর আফ্রিকা, আন্দালুসিয়া এবং ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের Intellectual Life গঠনে al-Qarawiyyin-এর ভূমিকা ছিল অপরিসীম।
এর বিখ্যাত লাইব্রেরিটি ১০ম শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত হয়, যা বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন লাইব্রেরি। এখানে Science, Philosophy এবং Literature-এর ওপর লেখা এমন কিছু Invaluable Manuscripts আছে যা আর কোথাও পাওয়া যায় না। মধ্যযুগে জ্ঞান-বিজ্ঞানের যে Translation Movements হয়েছিল, তাতেও এই ইউনিভার্সিটির বড় অবদান ছিল, যা পরবর্তীতে ইউরোপীয় চিন্তাধারা বা European Thought-কে প্রভাবিত করে।
-
প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃতি
- অবস্থান: ফেজ, মরক্কো
- প্রাচীনতম ও ক্রমাগত পরিচালিত কেন্দ্র
-
স্বীকৃতিদাতা
- ইউনেস্কো
- গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস
-
শিক্ষার অপরিহার্য কার্যাবলী
- স্থায়ী পণ্ডিত সম্প্রদায়
- সুগঠিত পাঠ্যক্রম
- উন্নত অধ্যয়নের ঐতিহ্য
-
উৎপত্তি ও প্রতিষ্ঠা
- প্রতিষ্ঠাকাল: ৮৫৯ খ্রিস্টাব্দ
- প্রতিষ্ঠাতা: ফাতিমা আল-ফিহরি
-
ফাতিমার পরিচয়
- তিউনিসিয়ান বংশোদ্ভূত
- ধনী ও উচ্চ শিক্ষিত মহিলা
- শিক্ষায় নারীর অবদানের মাইলফলক
-
প্রাথমিক কাঠামো ও পাঠ্যক্রম
- শুরু: মসজিদ ও সম্প্রদায় শিক্ষা কেন্দ্র
-
শিক্ষাদানের ক্ষেত্র
- ধর্মতত্ত্ব ও আইনশাস্ত্র
- গণিত ও জ্যোতির্বিদ্যা
- ব্যাকরণ ও দর্শন
- অবিচ্ছিন্ন বংশধারা: ১১৬০+ বছর
-
বৈশ্বিক প্রভাব
-
বৌদ্ধিক জীবন গঠনে ভূমিকা
- উত্তর আফ্রিকা
- আন্দালুসিয়া
- ভূমধ্যসাগর
-
ঐতিহাসিক গ্রন্থাগার
- দশম শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত
- অমূল্য পাণ্ডুলিপি (বিজ্ঞান, দর্শন, সাহিত্য)
- মধ্যযুগীয় অনুবাদ আন্দোলনে অবদান
- ইউরোপীয় চিন্তাধারা প্রভাবিত
-
-
আধুনিক প্রাসঙ্গিকতা
- ১৯৬৩ সালে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার একীভূত
- বর্তমান কার্যক্রম: আধুনিক একাডেমিক প্রোগ্রাম
- ঐতিহ্যবাহী জোর: ইসলামী বৃত্তি
- নালন্দা/তক্ষশিলার সাথে পার্থক্য (অবিচ্ছিন্ন ধারাবাহিকতা)
বর্তমান যুগে এর গুরুত্ব (Modern Relevance)
অনেকে ভাবতে পারেন এত পুরনো প্রতিষ্ঠান কি এখনো টিকে আছে? উত্তর হলো—হ্যাঁ। ১৯৬৩ সালে al-Qarawiyyin-কে মরক্কোর State University System-এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
নালন্দা (Nalanda) বা তক্ষশিলার (Takshashila) মতো প্রাচীন শিক্ষা কেন্দ্রগুলো একসময় ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল বা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু al-Qarawiyyin আধুনিক যুগেও তার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে এখানে ইসলামিক স্কলারশিপের পাশাপাশি Contemporary Academic Programmes-ও অফার করা হয়।
Conclusion
পরিশেষে বলা যায়, যদি আমরা Continuous Operation এবং Structured Scholarship-এর কথা বিবেচনা করি, তবে University of al-Qarawiyyin-ই বিশ্বের সর্বপ্রথম সত্যিকারের ইউনিভার্সিটি। আর এই অসাধারণ ইতিহাসের পেছনে যার অবদান সবচেয়ে বেশি, তিনি হলেন একজন নারী— Fatima al-Fihri। নারী শিক্ষার অগ্রগতি এবং ক্ষমতায়নে এটি ইতিহাসের একটি অনন্য মাইলফলক।











