কারবালার ইতিহাস, হুসেইন হাসান এর ইতিহাস
হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহুর দ্বিতীয় পুত্র খাতুনে জান্নাত মা-ফাতিমার কলিজার টুকরা রাহমাতুল্লিল আলামীন বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদরের নাতি বেহেশতী যুবকদের সরদার বাতিলের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর শহীদে কারবালা ইমাম হুসাইন (রাদ্বি.) চতুর্থ হিজরীর শাবান মাসের ৫ তারিখ পবিত্র মদীনা নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন এবং ইরাকের ফোরাত নদীর তীরে মরু অঞ্চলে অবস্থিত ঐতিহাসিক স্থানের নাম কারবালা নামক স্থানে শহীদ হন। কারবালা কুফা থেকে দু-মঞ্জিল দূরে অবস্থিত।
প্রসঙ্গক্রমে আল্লামা শফী উকাড়বী (রহ.) উল্লেখ করেন-‘হযরত ইবনে সা’দ (রা.) হযরত সাবী (রা.) থেকে বর্ণনা করেছেন, হযরত আলী (রাদ্বি.) সিফফীনের যুদ্ধের সময় কারবালার পথ দিয়ে যাওয়ার প্রাক্কালে হঠাৎ দাঁড়িয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন এ জায়গার নাম কি? লোকেরা বলল, এ জায়গার নাম ‘কারবালা’।
কারবালার নাম শুনামাত্র হযরত আলী (রাদ্বি.) এমন কান্নাকাটি করলেন যে, মাটি চোখের পানিতে ভিজে গিয়েছিল। অতপর ফরমালেন, আমি একদিন প্রিয় নবীজির খেদমতে হাজির হয়ে দেখতে পেলাম, তিনি কাঁদতেছেন। আমি আরজ করলাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি কাঁদতেছেন কেন? উত্তরে রাসূলে মকবুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ ফরমালেন-এইমাত্র জিবরাইল (আ.) এসে আমাকে খবর দিয়ে গেলেন যে, ইন্না ওলদিয়াল হুসাইনা ইয়ুক্বতালু বিশাতিল ফোরাতি বিমাওদ্বাইন ইয়ুক্বালু লাহু কারবালা। অর্থাৎ ‘আমার ছেলে (দৌহিত্র) হুসাইনকে (ইরাকের) ফোরাত নদীর তীরে সেই জায়গায় শহীদ করা হবে, যে জায়গার নাম কারবালা।’
মহররম মাস ও আশুরার (১০ই মহররম) দিনটা মুসলিম জাহানের উপর চেপে বসা রাজা-বাদশাহ শেখ ও আমির শাসিত রাজতান্ত্রিক দেশগুলোর জন্যে একটা চরম বিব্রতকর দিন। রাজতন্ত্রের বিরোধিতা করার কারনে স্বৈরাচারী শাসক ইয়াজিদের সৈন্যদের হাতে ৬১ হিজরীতে এদিন মহানবীর দৌহিত্র বেহেস্তবাসী যুবকদের সর্দার হযরত ইমাম হুসাইন (রাঃ) শাহাদাত বরন করেছিলেন।
তৎকালীণ স্বৈরশাসক ইয়াজিদের হুকুমে তার গর্ভনর ওবাইদুল্লাহ জিয়াদের নেতৃত্বে মহানবীর এই দৌহিত্রকে সেদিন ইতিহাসের নির্মমতম এবং পৈশাচিকভাবে হত্যা করা হয়েছিল। ইসলামের ইতিহাসে অনেক নবী রসুলসহ খলিফা হযরত উসমান, হযরত আলীসহ হুসাইনের চাইতেও বেশী মর্যাদাপূর্ণ আরো অনেক বড় বড় মহান ব্যক্তির হত্যাকান্ডের ঘটনা থাকলেও ৬১ হিজরীর কারবালার ঘটনা এতোটাই পৈচাশিক ও নির্মমতম ছিল যে এটা যুগে যুগে কঠিন হৃদয়কেও নাড়া দিয়েছে, এখনো দেয় এবং নিঃসন্দেহ তা কেয়ামত পর্যন্ত জালিমদের বিরুদ্ধে ধিক্কার জানাতে ও ইসলামী শক্তির পক্ষে মুমীনদের উদ্ভূদ্ধ করায় নিয়ামক ভূমিকা পালন করবে।