হ্যালো বন্ধুরা, Kalikolom অবরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে ফিরে এসেছে ভারতসভা ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন এবং আমাদের রিচার্জ অফার সাইট Free Recharge Tricks সাইডে click করে বিভিন্ন অফার এবং ক্যাশব্যাক উপভোগ করুন। ঠিক আছে চলুন শুরু করা যাক
অমৃতবাজার পত্রিকার সম্পাদক শিশিরকুমার ঘোষ ও হেমন্তকুমার ঘোষ ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে ‘ইন্ডিয়ান লিগ’ নামে একটি রাজনৈতিক সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু নেতৃবৃন্দের মতবিরোধের ফলে কিছুদিনের মধ্যেই এর অস্তিত্ব লোপ পায়। এরপর সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, আনন্দমোহন বসু, শিবনাথ শাস্ত্রী, দ্বারকানাথ গাঙ্গুলি প্রমুখের উদ্যোগে ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে ‘ভারতসভা’ বা ‘ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন’ নামে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে ওঠে। কলকাতার অ্যালবার্ট হলে ভারতসভার প্রথম অধিবেশন (২৬ জুলাই, ১৮৭৬ খ্রি.) বসে। নানা কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় হয়ে ওঠেন ভারতসভার প্রাণপুরুষ।
ভারতসভা প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কী ছিল
ভারতসভা প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ভারতীয়দের সার্বিক কল্যাণসাধন ও স্বার্থরক্ষা। এর জন্য সর্বপ্রথম প্রয়োজন ছিল শিক্ষিত মধ্যবিত্ত ভারতীয়দের মধ্যে রাজনৈতিক চেতনার প্রসার ঘটানো। এজন্য ভারতসভা যেসব কর্মসূচি গ্রহণ করে সেগুলি হল—জনমত গঠন করা; রাজনৈতিক স্বার্থে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের অধিবাসীদের ঐক্যবদ্ধ করা; হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি স্থাপন করা এবং স্বল্পশিক্ষিত ও সাধারণ ভারতীয়দের রাজনৈতিক গণ-আন্দোলনে শামিল করা। সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে লখনউ, মিরাট, লাহোর, সিন্ধু প্রভৃতি অঞ্চলে ভারতসভার শাখা গড়ে ওঠে।
লর্ড রিপন (১৮৮০-৮৪ খ্রি.) এদেশে আসার আগে কোনো ভারতীয় বিচারক কোনো ইংরেজের বিচার করার অধিকারী ছিলেন না। এই বর্ণবৈষম্য দূর করার উদ্দেশ্যে রিপনের পরামর্শে তার আইন সচিব ইলবার্ট একটি বিল রচনা করেন। এতে ভারতীয় বিচারকরা শ্বেতাঙ্গ ইংরেজদের বিচার করারও অধিকার পান | এটি ইলবার্ট বিল নামে পরিচিত।
ভারতসভা প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইংরেজ সরকার ভারতীয়দের স্বার্থে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে। ভারতসভার আন্দোলনের চাপে সরকার বাধ্য হয়ে ভারতীয়দের অনুকূলে নতুন আইন প্রণয়ন বা পুরোনো আইনের সংশোধন করে। ভারতীয় সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার্থীদের ঊর্ধ্বতম বয়স ২২ বছর করার দাবিতে, ইলবার্ট বিলের সমর্থনে, লর্ড লিটন প্রবর্তিত নাট্যাভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইন (১৮৭৬ খ্রি.), দেশীয় ভাষায় সংবাদপত্র আইন (১৮৭৮ খ্রি.), অস্ত্র আইন (১৮৭৮ খ্রি.)-সহ বিভিন্ন দমনমূলক আইন, শোষণমূলক আমদানি ও শুল্ক আইন প্রভৃতির বিরুদ্ধে এবং প্রতিনিধিত্বমূলক শাসন-পরিষদ গঠন, স্বায়ত্তশাসন প্রবর্তন, প্রজাস্বত্ব আইন প্রণয়ন, মদ্যপান নিবারণ প্রভৃতির দাবিতে ভারতসভা তীব্র আন্দোলন চালায়।
ভারতসভার নেতৃবৃন্দের উদ্যোগে কলকাতায় ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে ‘সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলন’ বা ‘অল ইন্ডিয়া ন্যাশনাল কনফারেন্স’ নামে মহাসভা অনুষ্ঠিত হয়। ড. অমলেশ ত্রিপাঠী এই সম্মেলনকে ‘জাতীয় কংগ্রেসের মহড়া’ বলে অভিহিত করেছেন। কেন-না, এই সম্মেলন
১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে অ্যালান অক্টাভিয়ান হিউম কর্তৃক ভারতের জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠায় অনুপ্রেরণা জোগায়। ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় কংগ্রেসের দ্বিতীয় অধিবেশন বসলে সুরেন্দ্রনাথ তাঁর অনুগামীদের নিয়ে অধিবেশনে যোগ দেন। ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে ভারতসভা স্বদেশি আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। স্বদেশি দ্রব্যের ব্যবহার জনপ্রিয় করার উদ্দেশ্যে ভারতসভা একটি জাতীয় ভাণ্ডার’ গড়ে তোলে।
ভারতের জাতীয়তাবোধের বিকাশে বিভিন্ন সভাসমিতির গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। আঞ্চলিক তথা শ্রেণিগত স্বার্থ কিছু ক্ষেত্রে প্রাধান্য পেয়ে থাকলেও এই সময়ের নেতৃবর্গ শিক্ষিত মধ্যবিত্তের মধ্যে একটি সার্বিক চেতনার স্ফুরণ ঘটাতে সক্ষম হয়েছিলেন। তাঁরা ক্রমবিবর্তনের মধ্য দিয়ে প্রাদেশিকতাকে অতিক্রম করতে শুরু করেছিলেন। জাতীয়স্তরে নিজেদের মধ্যে ব্রিটিশ-বিরোধিতার প্রশ্নে একটি সামগ্রিক আন্দোলনের ভিত্তিভূমি তৈরি করা তাই সম্ভবপর হয়েছিল।