2013 সালে ভারতে বনাবৃত ভূমির পরিমাণ ছিল 21.23 শতাংশ। এ ছাড়া মোট উদ্ভিদ আচ্ছাদনের পরিমাণ ছিল 24.01 শতাংশ ( Indian State of Forest Report (13)। অথচ সমগ্র ভূমির আয়তনের 33 শতাংশ বনভূমি থাকা বাঞ্ছনীয়। ভারতের অরন্য সংরক্ষণ আইন চালু হয় ২১ শে মার্চ ১৯২৭ সালে এর সাথে জাতীয় অরণ্য সপ্তাহও পালিত হয় ৮–১৪ জুলাই। এবং এটা বিশ্ব অরণ্য দিবস হিসেবে পালিত হয়। তাই নানা পদ্ধতিতে বর্তমানে অরণ্য সংরক্ষণ করা যায়। অরণ্য সংরক্ষণের উপায়গুলি হল —
[1] অনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃক্ষচ্ছেদন রোধ:
অপ্রয়োজনীয় বৃক্ষচ্ছেদন রোধ করতে হবে। যে-কোনো বনভূমি, যে-কোনো স্থান থেকে গাছ কাটা নিষিদ্ধ করতে হবে। অরণ্যের বাস্তুতন্ত্রের কথা মাথায় রেখেই বৃক্ষচ্ছেদন করতে হবে।
[2] অপরিণত বৃক্ষচ্ছেদন হ্রাস:
গাছ কাটার সময় সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে যাতে আশেপাশের কোনো গাছের ক্ষতি না হয়। বিশেষ করে চারাগাছ ও অপরিণত গাছের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে।
[3] জ্বালানি কাঠের পরিবর্তে বিকল্প জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি:
কাঠের জ্বালানির পরিবর্তে কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাস, জৈব গ্যাস, বিদ্যুৎ চালিত উনুন এসব ব্যবহার করতে হবে। যার ফলে অরণ্যের ওপর যেমন চাপ কমবে, তেমনি বনভূমি সুরক্ষিত থাকবে।
[4] দাবানল প্রতিরোধ:
বনভূমিতে আগুন লাগলে তাকে দাবানল বলে। নানা কারণে ঘন বনভূমিতে দাবানল তৈরি হয়। দাবানল যাতে না লাগে তার দিকে দৃষ্টি রাখতে হবে এবং দাবানল লাগলে যাতে দ্রুত তা প্রতিরোধ করা যায় তার ব্যবস্থা করতে হবে।
[5] পশুচারণ নিয়ন্ত্রণ:
অরণ্যকে রক্ষা করার জন্য পশুচারণ ক্ষেত্র নির্দিষ্ট করে দিতে হবে। অরণ্যভূমিতে পশুরদল চারাগাছ খেয়ে ফেলে এবং গাছকে নষ্ট করে দেয়। তাই পশুচারণ নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।
[6] বনসৃজন ও পুনর্বনসৃজন:
যেসব স্থান উদ্ভিদহীন সেখানে নতুন করে বনসৃজন করা যেতে পারে এবং বনভূমিতে যেখানে পশুচারণ বা মানুষ নিজের প্রয়োজনে গাছ কেটে ফেলেছে সেখানে পুনর্বনসৃজন ঘটিয়ে অরণ্য পুনরুদ্ধার করা যেতে পারে।
[7] মানুষের অংশগ্রহণ:
বর্তমানে উদ্ভিদের স্বল্পতার জন্য মানুষই দায়ী। তাই পরিবেশ ব্যবস্থাপনায় সকলের সহযোগিতায় সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণের মাধ্যমে বনসংরক্ষণ কর্মসূচিকে এগিয়ে নিতে হবে। সেজন্য যৌথ বন পরিচালনা (joint-forest management) ব্যবস্থাপনা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছে।
[8] অসুস্থ বৃদ্ধের রোগ প্রতিরোধ:
উদ্ভিদে নানারকম রোগ পোকার আক্রমণ, ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস সংক্রমণ ঘটে। এতে অরণ্য নষ্ট হয়ে যেতে পারে। সেজন্য অরণ্যের বৃক্ষগুলিকে সুস্থ এবং সতেজ রাখতে, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজনে রাসায়নিক ও জৈবিক উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে।
[9] অরণ্য সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে কর্মসূচি গ্রহণ :
বর্তমানে অরণ্য সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। ১ জুন দিনটিকে ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। এবং ওই দিন নিয়মানুয়ী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করা হয়। এ ছাড়া বছরের বিভিন্ন সময়ও অরন্য সংরক্ষণের বিভিন্ন পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।
অরণ্য সংরক্ষণের সংজ্ঞা:
অরণ্য বা বন হলো ঘন বিভিন্ন প্রকার উদ্ভিদের দ্বারা ঘেরা একটি এলাকা। বিভিন্ন মাপকাঠির ভিত্তিতে, বনের নানান ধরনের সংজ্ঞা আছে।ব্যাপকভাবে।