WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

ননীবালা দেবী স্মরণীয় কেন class 10




ননীবালা দেবী কে ছিলেন?

ননীবালা দেবী (১৮৮৮–১৯৬৭) ছিলেন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন বিশিষ্ট বাঙালি বিপ্লবী এবং বাংলার প্রথম মহিলা রাজবন্দী। তিনি হাওড়া জেলার বালিতে একটি মধ্যবিত্ত ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম ছিল সূর্যকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মাতার নাম গিরিবালা দেবী। এগারো বছর বয়সে তাঁর বিবাহ হয়, কিন্তু ষোল বছর বয়সে তিনি বিধবা হন এবং পিতৃগৃহে ফিরে আসেন। সমাজের নানা বাধা সত্ত্বেও তিনি নিজের চেষ্টায় লেখাপড়া চালিয়ে যান এবং পরবর্তীতে বিপ্লবী আন্দোলনে যোগ দেন। তিনি যুগান্তর দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং বিপ্লবীদের আশ্রয় দেওয়া, গোপন তথ্য সংগ্রহ, এবং স্বাধীনতা সংগ্রামে সাহসী ভূমিকার জন্য পরিচিত।

Also Read – ননীবালা দেবী স্মরণীয় কেন?


ননীবালা দেবী স্মরণীয় কেন?

ননীবালা দেবী ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁর অসাধারণ অবদানের জন্য স্মরণীয়। নীচে তাঁর কীর্তির জন্য কিছু কারণ উল্লেখ করা হল:

  1. প্রথম মহিলা রাজবন্দী: ননীবালা দেবী ছিলেন বাংলার প্রথম মহিলা রাজবন্দী এবং ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে একমাত্র মহিলা স্টেট প্রিজনার। তিনি ১৮১৮ সালের ৩ নং রেগুলেশনের অধীনে বন্দী হন।
  2. বিপ্লবীদের আশ্রয়দান: তিনি পলাতক বিপ্লবীদের নিরাপদ আশ্রয় দিয়েছিলেন। রিষড়া ও চন্দননগরে তিনি গৃহকর্ত্রীর ছদ্মবেশে বিপ্লবীদের আশ্রয় দেন, যার মধ্যে ছিলেন অমরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, যাদুগোপাল মুখার্জী, অতুল ঘোষ প্রমুখ।
  3. সাহসী পদক্ষেপ: ১৯১৫ সালে তিনি রামচন্দ্র মজুমদারের স্ত্রী সেজে আলিপুর জেলে গিয়ে গোপন তথ্য সংগ্রহ করেন, যা তৎকালীন সমাজে একজন বিধবা মহিলার জন্য অকল্পনীয় ছিল।
  4. অনশন ধর্মঘট: কলকাতার প্রেসিডেন্সি জেলে তিনি ২১ দিনের অনশন ধর্মঘট করেন, যা কারা কর্তৃপক্ষকে চাপে ফেলে। তিনি শ্রীরামকৃষ্ণের পত্নী শারদা দেবীর কাছে থাকার শর্তে অনশন ভঙ্গ করেন।
  5. নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ: জেলে তাঁর উপর অকথ্য নির্যাতন করা হয়, যেমন লঙ্কাবাটা দিয়ে শারীরিক নির্যাতন। তবুও তিনি বিপ্লবী সংগঠনের গোপন তথ্য ফাঁস করেননি। তিনি পুলিশ সুপার গোল্ডিকে চড় মেরে প্রতিবাদ করেন।
  6. নারী জাগরণে অবদান: ননীবালা দেবী নারীদের মধ্যে স্বাধীনতার চেতনা জাগ্রত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাঁর সাহসী কাজ নারীদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে ওঠে।
  7. দৃঢ়চেতা মনোভাব: ব্রিটিশ পুলিশের নির্যাতন এবং সমাজের বঞ্চনা সত্ত্বেও তিনি কখনো হাল ছাড়েননি। তাঁর জীবনের শেষ পর্যায়ে দারিদ্র্য ও অবহেলার মধ্যেও তিনি গৌরবের সঙ্গে বেঁচে ছিলেন।

ননীবালা দেবী ছবি

ননীবালা দেবী ছবি
ননীবালা দেবী ছবি

ননীবালা দেবী প্রশ্নোত্তর (মাধ্যমিক ক্লাস ১০ এর জন্য)

নীচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর দেওয়া হল, যা মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য উপযোগী:



প্রশ্ন ১: ননীবালা দেবীর জন্ম ও মৃত্যু কবে হয়?
উত্তর: ননীবালা দেবী ১৮৮৮ সালে হাওড়া জেলার বালিতে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৬৭ সালে তাঁর মৃত্যু হয়।

প্রশ্ন ২: ননীবালা দেবী কোন বিপ্লবী দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন?
উত্তর: তিনি যুগান্তর দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

প্রশ্ন ৩: ননীবালা দেবী কেন গ্রেপ্তার হন?
উত্তর: তিনি বিপ্লবীদের আশ্রয় দেওয়া এবং গোপন তথ্য সংগ্রহের জন্য ব্রিটিশ পুলিশ কর্তৃক পেশোয়ারে গ্রেপ্তার হন, যখন তিনি কলেরা রোগে আক্রান্ত ছিলেন।

প্রশ্ন ৪: ননীবালা দেবী কতদিন অনশন করেছিলেন এবং কেন?
উত্তর: তিনি প্রেসিডেন্সি জেলে ২১ দিন অনশন করেছিলেন, কারণ তিনি শ্রীরামকৃষ্ণের পত্নী শারদা দেবীর কাছে থাকার শর্তে মুক্তি চেয়েছিলেন।

প্রশ্ন ৫: ননীবালা দেবী কীভাবে গোল্ডিকে প্রতিবাদ করেছিলেন?
উত্তর: পুলিশ সুপার গোল্ডি তাঁর দরখাস্ত ছিঁড়ে ফেললে, ননীবালা দেবী তাঁকে চড় মেরে প্রতিবাদ করেন।

প্রশ্ন ৬: ননীবালা দেবীর শেষ জীবন কেমন ছিল?
উত্তর: তাঁর শেষ জীবন দারিদ্র্য ও অবহেলার মধ্যে কেটেছিল। মুক্তির পর সমাজে তাঁকে অবাঞ্ছিত মনে করা হয় এবং তিনি একটি আধাঘুপচি ঘরে বাস করে জীবন কাটান।

প্রশ্ন ৭: ননীবালা দেবী কোন বিখ্যাত বিপ্লবীদের আশ্রয় দিয়েছিলেন?
উত্তর: তিনি অমরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, যাদুগোপাল মুখার্জী, অতুল ঘোষ, ভোলানাথ চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ বিপ্লবীদের আশ্রয় দিয়েছিলেন।

About the Author

Aftab Rahaman

AFTAB RAHAMAN

I am Aftab Rahaman, the founder of KaliKolom.com. For over 10 years, I have been writing simple and informative articles on current affairs, history, and competitive exam preparation for students. My goal is not just studying, but making the process of learning enjoyable. I hope my writing inspires you on your journey to knowledge.

📌 Follow me: