‘সোমপ্রকাশ’ সংবাদপত্রটির প্রথম পরিকল্পনা করেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। তার পরে পত্রিকাটির সম্পাদনার ভার নেন দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ। ‘হিন্দু প্যাট্রিয়ট’ পত্রিকায় ‘সোমপ্রকাশ’-কে প্রথম সারির একটি সংবাদপত্র বলে মন্তব্য করা হয়।
ইতিহাসের উপাদানরূপে সোমপ্রকাশ
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের পরিকল্পনায় সংস্কৃত কলেজের অধ্যাপক দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ কর্তৃক প্রবর্তিত
‘সোমপ্রকাশ’ পত্রিকা (১৮৫৮ খ্রিঃ) আধুনিক ভারতের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কারণ—
প্রথমত, এই পত্রিকায় সাহিত্য, দর্শন, বিজ্ঞান, সমাজতত্ত্ব, রাজনীতি প্রভৃতি বিভিন্নধর্মী বিষয় প্রকাশিত হত।
দ্বিতীয়ত, কৃষকদের স্বার্থরক্ষা ও চেতনার প্রসারে, নীলকরদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে, বিধবাবিবাহ ও স্ত্রীশিক্ষা প্রসারের উদ্দেশ্যে লিখিত প্রবন্ধগুলি থেকে মূল্যবান উপাদান পাওয়া যায়।
তৃতীয়ত, এই পত্রিকায় ব্রিটিশ সরকারের জনবিরোধী নীতিগুলির সমালোচনার মাধ্যমে স্বাদেশিকতা প্রচার করা হত।
জনমানসে তীব্র প্রতিক্রিয়া
১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে লিটন দেশীয় সংবাদপত্র আইন জারি করলে ‘সোমপ্রকাশ’ সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু এর ফলে জনমানসে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হলে বাংলার লেফটেন্যান্ট গভর্নর অ্যাশনি ইডেনের প্রচেষ্টায় পত্রিকাটি আবার প্রকাশিত হয়।
উপসংহার
সহজ সরল ভাষা ও নির্ভীক সমালোচনার মাধ্যমে ‘সোমপ্রকাশ’ একটি আদর্শ সংবাদপত্রের দৃষ্টান্ত। ‘সোমপ্রকাশ’ যে জনমতের এক নিখুঁত দর্পণ হিসেবে কাজ করেছিল, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।