[MCQ] বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর (৪৫টি)
- ‘অভিষেক’ কবিতার রচয়িতা কে?
ক. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর খ. মাইকেল মধুসূদন দত্ত গ. বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ঘ. জীবনানন্দ দাশ
উত্তর: খ - ’অভিষেক’ শব্দের সরাসরি অর্থ কী?
ক. বিদায় খ. অভিষিক্তকরণ গ. রাজ্যাভিষেক ঘ. পরাজয়
উত্তর: গ - কবিতার প্রধান ধরণ কী?
ক. নাট্যমূলক মহাকাব্য খ. সরল গীতিকবিতা গ. ছড়া ঘ. নাটক
উত্তর: ক - ভাষার সবচেয়ে উচ্চাঙ্গ বৈশিষ্ট্য কী?
ক. দীর্ঘ উচ্চারণ খ. অলংকারবহুল তৎসম গ. বাঙালি কথাসরলতা ঘ. আধুনিক কথ্যভাষা
উত্তর: খ - ’শিশু চুরি’ উপমায় কি বোঝানো হয়েছে?
ক. সামাজিক দুর্বলতা খ. শাসকদলের অপরাধ গ. শত্রুর নাশ ঘ. আশীর্বাদের অভাব
উত্তর: ক - ‘ছদ্মবেশী অশুভরাশি’ নির্দেশ করে কীকে?
ক. প্রতারক শাসক খ. বৈরী বিদেশি গ. দাকারলুণ্ঠনকারী ঘ. দানশিল্পী
উত্তর: ক - কাব্যটিতে ‘কুরুক্ষেত্র’ রূপক হিসেবে ব্যবহার হয়েছে কী জন্য?
ক. রাজনৈতিক সংঘাত খ. সামাজিক দ্বন্দ্ব গ. ঐতিহাসিক যুদ্ধ ঘ. ধর্মীয় উৎসব
উত্তর: ক - ‘মেঘনাদ’ নামের অর্থ এখানে কী প্রতীক?
ক. জাতীয় শক্তি খ. স্বপ্নিল নেতা গ. গৌরবময় আত্মত্যাগ ঘ. আলোকিত ভবিষ্যৎ
উত্তর: গ - কোন চরিত্রকে ‘শ্রেষ্ঠ বীর’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে?
ক. যুদ্ধে নিহত সৈনিক খ. সত্যভক্ত যোদ্ধা গ. রাজপুরোহিত ঘ. কৃষক বিদ্রোহী
উত্তর: খ - ’রক্তমাখা রাজপথ’ রূপক কী বোঝায়?
ক. যুদ্ধের মরণপণ লড়াই খ. রক্তদান উৎসব গ. শাসকের অভিশাপ ঘ. শিল্পী জীবন
উত্তর: ক - ‘সাজিছে রাণীর রাজা’— এখানে জাতির কোন অবস্থা বোঝাচ্ছে?
ক. পরাধীনতা খ. নতুন নেতৃত্বের আবির্ভাব গ. পুরনো রাজ্যের পুনরুজ্জীবন ঘ. রাজনৈতিক দুর্নীতি
উত্তর: খ - কবিতায় সংলাপের মাধ্যম কি উদ্দেশ্য পূরণ?
ক. নান্দনিক সুর খ. চরিত্রচিত্র অগ্রসর করা গ. ছন্দ পোষণ ঘ. শ্রোতাকে বিনোদন
উত্তর: খ - গুরুত্বপূর্ণ অলংকার কোনটি?
ক. উপমা খ. দ্বন্দ্ব গ. অলংকারবিহীন ভাষা ঘ. সরল উপস্থাপনা
উত্তর: ক - কবিতার মূল বার্তা কী?
ক. শান্তির আহ্বান খ. আত্মত্যাগে জাতি উজ্জীবন গ. ইতিহাসের খণ্ডচিত্র ঘ. প্রেমের বন্দনা
উত্তর: খ - ‘দূরবীণ’ শব্দটি প্রতীকী অর্থে কী নির্দেশ করে?
ক. দুর্বল বিশ্বাস খ. দূরদৃষ্টিশক্তি গ. শত্রু নিরীক্ষণ ঘ. সামাজিক বিচ্ছার
উত্তর: খ - কবিতায় পৌরাণিক চরিত্র কেন ব্যবহার?
ক. ছন্দের প্রয়োজনেই খ. ঐতিহ্যবাহী ভাব যোগে গ. সাধারন পাঠকের আকর্ষণে ঘ. বিনোদনের জন্য
উত্তর: খ - লক্ষ্মণের উপস্থিতি কী নির্দেশ করে?
ক. দুঃখ ও যন্ত্রণা খ. সৎ সহচর গ. রাজনৈতিক মিত্র ঘ. পৌরাণিক অমঙ্গলের শিক্ষা
উত্তর: খ - কৃষ্ণের পরামর্শে কবি কী গুরুত্ব দিয়েছেন?
ক. নৈতিক সংকট খ. সাহিত্যিক শৈলী গ. সঠিক নেতৃত্ব ঘ. ধর্মীয় আচার
উত্তর: গ - রামের প্রতিনিধিত্ব এখানে কী?
ক. শত্রু বিনাশ খ. সত্য ও ধর্ম গ. রাজাতন্ত্র ঘ. সাংস্কৃতিক আধিপত্য
উত্তর: খ - সীতার উপস্থিতি কবিতায় কী যোগ করে?
ক. ন্যায়ের মাদড়া খ. পবিত্রতা ও ভক্তি গ. সামাজিক সংকট ঘ. রাজনৈতিক তুচ্ছতা
উত্তর: খ - কবিতার ছন্দবিন্যাস কোন প্রকার?
ক. লেখা পদ খ. মুক্ত ছन्द গ. দ্বন্দ্ব ছন্দ ঘ. চন্দ্রবিন্দু ছন্দ
উত্তর: খ - পদ্যবিন্যাসে প্রধান যা দেখা যায়?
ক. দোলনায়িত ছন্দ খ. সংলাপময় বিন্যাস গ. একক নিরাকার লয় ঘ. প্রাচীন সংস্কৃত লয়
উত্তর: খ - ‘কঙ্কাল-কম্পিত কুসুমমাল্য’ কোন ভাব প্রকাশ?
ক. সহজ সৌন্দর্য খ. ভয়ানক শাসন গ. ভঙ্গুর প্রশংসা ঘ. ঐতিহাসিক স্মৃতি
উত্তর: গ - ’শবে-দেহ’ শব্দগুচ্ছের রূপক অর্থ কী?
ক. মৃতদেহ খ. নৈতিক শূন্যতা গ. কলঙ্কিত সংস্কৃতি ঘ. বিরহ সাধনা
উত্তর: খ - ‘শূন্য কোষ’ ব্যবহার করা হয়েছে কী বোঝাতে?
ক. জেনেটিক শব্দ খ. সংকীর্ণ চেতনা গ. আত্মপরিচয়হীনতা ঘ. শারীরিক দুর্বলতা
উত্তর: গ - কবিতায় ‘বিদ্রোহী মন’ কোন পরিস্থিতি নির্দেশ করে?
ক. স্বৈরাচারী শাসন খ. ব্যক্তিগত প্রতিবাদ গ. সাংস্কৃতিক পরিবর্তন ঘ. প্রেমের বিপর্যয়
উত্তর: খ - মাইকেল কী ভূমিকায় নিজেকে তুলে ধরেছেন?
ক. সমালোচক খ. যোদ্ধা গ. কিংবদন্তি ঘ. দর্শনশাস্ত্রীয় সংকেত
উত্তর: খ - কবিতার প্রেক্ষাপট কোন?
ক. ব্যক্তিগত নৈরাশ্য খ. জাতীয় জাগরণকাল গ. রোমান্টিক প্রেম ঘ. কৃষি বিপ্লব
উত্তর: খ - রূপকধর্মী কোনাংশ পাঠককে কী অনুভূতি দেয়?
ক. ভয়ের সঞ্চার খ. ঐতিহাসিক গর্ব গ. হাস্যরস ঘ. দুঃখবোধ
উত্তর: খ - কবি যে ‘বীর’ চায়, তার প্রধান গুণ কী?
ক. নিঃস্বার্থ আত্মত্যাগ খ. সৌন্দর্য প্রতিপালন গ. কূটনৈতিক মেধা ঘ. ধর্মীয় ভাবPurity
উত্তর: ক - ‘অপকর্ম’ শব্দ দ্বারা কী বোঝানো?
ক. কল্যাণকর কাজ খ. নিকৃষ্ট কাজ গ. নৈতিক উন্নতি ঘ. সামাজিক সেবা
উত্তর: খ - কবিতায় ‘সংকটকাল’ উল্লেখ কেন?
ক. প্রেমের হতাশা খ. রাজনৈতিক অবক্ষয় গ. অর্থনৈতিক মন্দা ঘ. প্রাকৃতিক দুর্যোগ
উত্তর: খ - মাইকেল কোন যুগের লেখক?
ক. ১৭শ শতক খ. ১৮-১৯শ শতক সংক্রমণকাল গ. ২০শ শতক ঘ. ২১শ শতক
উত্তর: খ - কবিতায় প্রধান বাধা কী?
ক. ইতিহাসের অন্ধকার খ. অনৈতিক শাসন গ. দেশের অভাব ঘ. আলোকিত ভবিষ্যৎর অভাব
উত্তর: খ - ’অভিষিক্ত রাজরানী’ এখানে কে?
ক. সীতা খ. ভারতমাতা গ. লক্ষ্মী ঘ. সংস্কৃতি
উত্তর: খ - কবি কেন পৌরাণিক চরিত্র নিয়ে এসেছেন?
ক. ঐতিহাসিক ব্যাপ্তি বাড়াতে খ. শব্দসংঘট সহজ করতে গ. ছন্দবদ্ধ করতে ঘ. বর্ণনার সৌন্দর্য বাড়াতে
উত্তর: ক - কোন অলংকারে ‘শ্রী’ ও ‘রক্ত’ একত্র?
ক. তুলনা খ. বিপরীতোক্তি গ. রূপক মিল ঘ. অপ্রত্যাশিত মিলন
উত্তর: গ - কবিতায় ‘আত্মত্যাগ’ গুরুত্ব পেয়েছে কেন?
ক. ধর্মীয় আদেশ খ. সমাজ সংস্কারের অবলম্বন গ. প্রেমের দৃঢ়তা ঘ. রাজনীতি সুরক্ষা
উত্তর: খ - ‘ন্যায়’র ভূমিকা কী?
ক. বিনোদন যোগানো খ. আদর্শ স্থাপন গ. ঐতিহাসিক গর্ব ঘ. নৈতিক সংকট
উত্তর: খ - কবিতায় ‘বিপ্লবী সুর’ কোন অংশে?
ক. সূর্যাস্ত দৃশ্যে খ. মেঘনাদের সংলাপে গ. শান্তি বর্ণনায় ঘ. প্রেমার নাটকে
উত্তর: খ - কবিতার উৎস কোথা থেকে?
ক. মধ্যযুগীয় রীতিতে খ. সমকালীন ধর্মোপদেশে গ. পশ্চিমা সাহিত্যায় ঘ. বাউল ধারায়
উত্তর: খ - কবিতার সংলাপের প্রধান চরিত্র?
ক. কৃষ্ণ খ. রাধা গ. মেঘনাদ ঘ. সীতা
উত্তর: গ - ‘শব্দদেহ’ কথাটি কোথায় এসেছে?
ক. সূচনা স্তবকে খ. কেন্দ্রীয় স্তবকে গ. উপসংহারে ঘ. অবস্থা নিরূপণে
উত্তর: গ - কবিতার শেষাংশে অভিসন্ধি কী?
ক. শান্তির স্থিতি খ. যুদ্ধের প্রস্তুতি গ. প্রেমের মিলন ঘ. রাজনৈতিক হ্রাস
উত্তর: খ - বিশ্লেষণধর্মী কোন বক্তব্য পাওয়া যায়?
ক. সরল গুরুত্বপূর্ণ খ. দেশপ্রেমমূলক উচ্চাঙ্গ গ. ব্যঙ্গাত্মক উপমা ঘ. তুচ্ছ হাস্যরস
উত্তর: খ
সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নাবলি (২০টি)
(প্রতিটি উত্তর ≤২০ শব্দে)
- ’অভিষেক’ কবিতার কেন্দ্রীয় ভাব কী?
উত্তর: জাতির পুনর্জাগরণে আত্মত্যাগ এবং ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানোর আহ্বান। - কবিতায় ‘শিশু চুরি’ রূপক কী নির্দেশ করে?
উত্তর: জাতির দুর্বলতা ও প্রতারণামূলক শাসন। - ইন্দ্রজিৎ চরিত্রের প্রধান কাজ কী?
উত্তর: বীরাশ্রিত জাতি পরীক্ষণ ও নেতৃত্ব আদায়ে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি। - ‘ছদ্মবেশী অশুভরাশি’ দ্বারা কে বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: ভণ্ড শাসক ও মিথ্যাবাদী শক্তি। - ভারতমাতাকে এখানে কী রূপে দেখানো?
উত্তর: অভিষিক্ত রাজরানী। - কবি ‘কুরুক্ষেত্র’ রূপক কেন ব্যবহার করেছেন?
উত্তর: সংগ্রাম ও দ্বন্দ্বের প্রতীক হিসেবে। - ‘মেঘনাদ’ কোন মূল্যবোধের প্রতীক?
উত্তর: আত্মত্যাগী গৌরব ও নেতৃত্ব। - ’কঙ্কাল-কম্পিত কুসুমমাল্য’ কী বোঝায়?
উত্তর: খালি প্রশংসা, আভাসহীন শক্তি। - কবিতায় ‘দূরবীণ’ ছকিতার্থ কী?
উত্তর: ভবিষ্যৎদৃষ্টি। - ‘বীর’ কাকে বলা হয়েছে?
উত্তর: যারা আত্মত্যাগে পিছপা নয়। - কবিতায় নৈতিকতার গুরুত্ব কখন?
উত্তর: বীরত্বের প্রেক্ষাপটে। - সংলাপের প্রধান উদ্দেশ্য?
উত্তর: চরিত্রের মনোভাব স্পষ্ট করা। - প্রধান অলংকার যা দেখা যায়?
উত্তর: রূপক ও উপমা। - ’শবে-দেহ’ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: মৃত নৈতিকতা। - কবি কী ধরনের নেতৃত্ব চান?
উত্তর: নিঃস্বার্থ, নৈতিক, সাহসী। - কবিতার ভাষা কী ধরনের?
উত্তর: অলংকারবহুল, উচ্চাঙ্গ বাঙালি। - কবিতার মূল আবেদনের ক্ষেত্র?
উত্তর: জাতীয় মুক্তি ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা। - কবিতায় কোন ইতিহাস আঁকা হয়েছে?
উত্তর: পুরাতন মহাকাব্যের সঙ্গে সমকালীন সংগ্রাম। - ’অপকর্ম’ কী নির্দেশ করে?
উত্তর: নৈতিক হ্রাস ও অনৈতিক শাসন। - উপসংহারে কী ইঙ্গিত?
উত্তর: যুদ্ধের প্রস্তুতি ও বীর আহ্বান।
নিচে “অভিষেক” কবিতার জন্য ৫টি ব্যাখ্যাধর্মী/সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর দেওয়া হলো — প্রতিটির মান ৩ মার্কস।
৩.১ “কাঁপিল লঙ্কা, কাঁপিলা জলধি!” — ‘লঙ্কা’ ও ‘জলধি’ কেন কেঁপে ওঠে?
উত্তর:
ইন্দ্রজিৎ স্বর্ণলঙ্কা থেকে যুদ্ধে বিদায় নিতে আকাশপথে কাঠিণ্য কাঁপানো গর্জনের মতো সিধার্ণবীরীর অনুশীলন শুরু করেন। সেই গর্জনে লঙ্কার প্রাসাদ এবং তীর্থভূমি সমুদ্র—উভয়কেই ভূমিকম্পের মতো কেঁপে ওঠতে বাধ্য করে।
৩.২ “মেঘনাদ” চরিত্রের রূপকী অর্থ কী?
উত্তর:
মেঘনাদ এখানে আত্মবলিদানের প্রতীক—যে বীর খণ্ড সংগ্রামে পিছপা নয়। তার নামের সঙ্গে ‘মেঘ’ ও ‘নাদ’ মিশিয়ে কবি দেখান, সে অশান্ত আকাশের গর্জনমতো ন্যায়ের জন্য জাগরিত, এবং তার ত্যাগে জাতি পুনরুজ্জীবিত হবে।
৩.৩ কবিতায় সংলাপের বিন্যাস কীভাবে নাটকীয় তীব্রতা যোগ করে?
উত্তর:
সংলাপ ছেদযুক্ত ছন্দে অদল-বদল করে পাঠককে সরাসরি চরিত্রদের সংঘর্ষে নিয়ে যায়। প্রশ্ন–উত্তর, আহ্বান ও প্রত্যাখ্যানের পালাবদলে উত্তেজনা তৈরি হয়, ফলে বীরদের মনস্তত্ত্ব ও জাতীয় সংগ্রাম উভয়ই জীবন্তভাবে ভাসে।
৩.৪ ‘কুরুক্ষেত্র’ রূপক কেন ব্যবহার করেছেন?
উত্তর:
পুরাণের মহাযুদ্ধক্ষেত্রে—কুরুক্ষেত্রে—প্রতীকীভাবে জাতীয় নৈতিক দ্বন্দ্ব ও স্বাধীনতার সংগ্রাম ভাষ্য করতেই কবি এনে দিয়েছেন। এখানে ‘কুরুক্ষেত্র’ প্রশ্ন তোলে—কবে নাগাদ নৈতিক যোদ্ধারা বাধা ছাড়াই যুদ্ধ করুন?
৩.৫ “রক্তমাখা রাজপথ” দৃশ্যের গুরুত্ব কী?
উত্তর:
স্বাধীনতার লড়াইয়ের বাস্তবতা বোঝাতে কবি রাজপথের রূপক দেন, যেখানে বীরেরা জীবন-রক্ত ঢেলে চলেছে। রক্তমাখা পথ নির্দেশ করে—যুদ্ধের মূল্যবোধ ও আত্মত্যাগের তীব্রতা ছাড়া অভিষেক আর্শীবাদ অসম্ভব।
5টি বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী প্রশ্ন এবং প্রতিটি উত্তর ≤১৫০ শব্দ (মান = ৫) দেওয়া হলো:
৪.১
“সাজিলা রথীন্দ্রর্ষভ বীর আভরণে/ হৈমবতীসুত যথা নাশিতে তারকে মহাসুর;” — এই সেজে ওঠার প্রেক্ষাপট কী ছিল? কবি যে দুটি পৌরাণিক প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছেন, সেগুলোর বর্ণনা দাও। (২+৩)
উত্তর:
কবিতার এই স্তবক মেঘনাদকে যুদ্ধের পূর্ণ সাজে আবির্ভূত দেখায়। প্রথম প্রসঙ্গে, ‘হৈমবতীসুত’—কার্তিকেয়—তারকাসুর নামক মহাসুরকে বধ করেন দেবীপূজার প্রেক্ষাপটে। দেবী পার্বতী (‘হৈমবতী’) তাঁর ঋণাত্মক ত্যাগে কার্তিকেয়কে পাঠালে, সে তারকাসুর দমন করে মহেন্দ্রকেশর ব্যতীত অন্য কাউকে ভয় দেখায় না।
দ্বিতীয় প্রসঙ্গে, পাণ্ডবঅজ্ঞাতবাসের সময়ে অর্জুন ‘বৃহন্নলা’ রূপে গোপনে গোধন উদ্ধারে যুদ্ধে নেমেছিলেন; তার রথ ও অস্ত্রশস্ত্র তৎকালীন মহাযুদ্ধে পরিপূর্ণ সাজসজ্জার মতই। কবি এই দুই পৌরাণিক বীরের সাজসজ্জাকে মেঘনাদের সঙ্গে তুলনা করে, ত্যাগ-নিষ্ঠার এবং যুদ্ধনৈপুণ্যের ঐতিহ্যগত ধারাকে তুলে ধরেছেন।
৪.২
“রক্তমাখা রাজপথ” রূপকের মাধ্যমে কবি কী বলতে চেয়েছেন?
উত্তর:
“রক্তমাখা রাজপথ” স্বাধীনতার সংগ্রামের কঠিন বাস্তবতা ও বীরত্বের মূল্যবোধ প্রতীকী করে। এখানে রাজপথ কেবল নিঃস্বরণ নয়, বরং বীরদের রক্তঢালা ত্যাগের স্মরণ। যে জাতি স্বাধীনতা লাভের পথে যেতে চায়, তাকে নিষ্ঠুর লড়াই এবং আত্মবলিদান গহন করতে হয়—শুধু শালীন বাণী নয়, বরং রণাঙ্গনের তীব্রতা ও রক্তক্ষরণকে কবি এ রূপকে পরিনত করেছেন।
৪.৩
‘কুরুক্ষেত্র’ রূপক কেন এবং কীভাবে জাতীয় মুক্তি সংগ্রামের সঙ্গে সমন্বিত হয়েছে?
উত্তর:
পুরাণে কুরুক্ষেত্র ছিল ধর্মেরৗদ্ধ যুদ্ধক্ষেত্র; কবি এটিকে সমসাময়িক আদর্শ-সংগ্রামের মেটাফর হিসেবে ব্যবহার করেছেন। এখানে কুরুক্ষেত্রের মতই নৈতিক দ্বন্দ্ব চলমান—জাতি যখন অন্যায় শাসন ও বিশ্বাসঘাতকারের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, তখন এটি তৎকালীন ‘যুদ্ধক্ষেত্র’। রক্ষা, প্রত্যয় এবং আত্মত্যাগের মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় কবি এই রূপক ব্যবহার করে দেখিয়েছেন যে স্বাধীনতা অর্জন ও ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা শুধুমাত্র অস্ত্রের লড়াই নয়, নৈতিক সঙ্কল্পের লড়াইও।
৪.৪
‘শূন্য কোষ’ ও ‘শবে-দেহ’ রূপক দিয়ে কবি কী নৈতিক সংকট তুলে ধরেছেন?
উত্তর:
‘শূন্য কোষ’ দ্বারা বুঝানো হয়েছে নৈতিক শূন্যতা ও পরিচয়হীনতা—যেন কোনো প্রাণহীন ভেতরকোষে আদর্শ-বিচার নেই। ‘শবে-দেহ’ শব্দগুচ্ছ মৃতদেহের ন্যায় নৈতিকতার ধ্বংসদীপ্ত অবস্থা চিহ্নিত করে। কবি বলতে চান, যখন ব্যক্তিগত এবং সামাজিক জীবনে বিধর্মিতা, বিশ্বাসঘাতকতা এবং অনৈতিকতা বেড়ে যায়, তখন জাতির অভ্যন্তর নীরব নিম্নগতি ঘটে। এই দুই রূপক একসঙ্গে জাতীয় চেতনার ক্ষয় এবং ন্যায়ের অবক্ষয়কে দৃশ্যমান করে রেখেছে।
৪.৫
“দূরবীণ” রূপককে কেন্দ্র করে কবি কীভাবে ভবিষ্যৎদৃষ্টি ও জাতির দায়িত্ব উপস্থাপনা করেছেন?
উত্তর:
‘দূরবীণ’ অর্থ দূরদৃষ্টি—শুধু পারিপার্শ্বিক নয়, ভবিষ্যতেরও পাঠ. কবি জাতিকে আহ্বান জানাচ্ছেন অতীতের গৌরব থেকে শিক্ষা নিয়ে দূরদৃষ্টি তৈরি করার জন্য। তিনি সাফ দেখাতে চান, আগামীর সংগ্রাম ও বিচারের পথ সুস্পষ্ট করতে ‘দূরবীণ’ ধরাকে অপরিহার্য। এতে ব্যক্তিরাই নন, সমগ্র জাতিই দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য নির্ধারণ করে ধর্ম-নৈতিকতার দিশা ধরে স্বাধীনতার পরিপূর্ণতা নিশ্চিত করবে।